জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য তহবিল গঠন করা হয়েছে: কপ–২৮
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ–২৮। সম্মেলনে জলবায়ু বিপর্যয় তহবিল গঠন করেছেন প্রতিনিধিরা। আজ সোমবার সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। তিনি সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘জলবায়ু বিপর্যয়ের ভয়াবহতা বেশি দূরে নয়।’
জলবায়ু সম্মেলন কপ–২৮ এ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জলবায়ু বিপর্যয় তহবিলে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অন্যান্য দেশ। এক সংবাদ সম্মেলনে এই পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন কপ–২৮ এর প্রেসিডেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুলতান আল জাবের।
সুলতান আল জাবের বলেন, ‘সম্মেলনের শুরুর দিন থেকেই আমরা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এটা ঐতিহাসিক। কোনো বিলম্ব ছাড়াই এই এজেন্ডাতে ভোট ও সম্মতি পাওয়া সম্ভব হয়েছে। আগের সম্মেলনগুলোতে যারা যোগ দিয়েছিলেন, তাদের জন্য এটি নজিরবিহীন।’
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে গত ৩০ বছর ধরে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নামের এই তহবিল চেয়ে আসছে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র দেশগুলো। দীর্ঘদিনের গড়িমসির পর গত কপ–২৭ সম্মেলনে তহবিলটি গঠনের বিষয়ে সম্মত হয় ধনী দেশগুলো।
এবার এলো তহবিলে বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি। তবে ভবিষ্যতে এই তহবিল কীভাবে কাজে লাগানো হবে, সে সংক্রান্ত কিছু বিষয় এখনো অমীমাংসিত। এমনকি কারা কত করে দেবেন, তাও নির্দিষ্ট করা হয়নি।
সম্মেলনে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস বলেন, ‘আমার জীবনের একটি বড় অংশ আমি কাটিয়েছি এই জলবায়ু বিপর্যয়ের হুমকির ব্যাপারে সতর্ক করতে করতে। এতো করে বলার পরও এখনো আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি কার্বন ডাই–অক্সাইড রয়েছে বায়ুমণ্ডলে। আর মিথেন আছে ৪০ শতাংশ বেশি।’
তবে কয়েকটি ভালো পদক্ষেপও ছিল বলে মনে করেন ব্রিটিশ রাজা। তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষেত্রে উন্নতি এসেছে। কিন্তু শঙ্কা থেকেই গেল। জলবায়ু বিপর্যয়ের ভয়াবহতা বেশি দূরে নয়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব গতকাল সম্মেলনে বলেন, ‘ঘটনাগুলো এতই দ্রুত ঘটছে যে, বছর শেষ হওয়ার এক মাস আগেই আমরা বলে দিতে পারছি, ২০২৩ সাল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের এমন সব বিষয়ের সম্মুখীন হচ্ছি, যার প্রভাব ধ্বংসাত্মক। আমরা গভীর সংকটে রয়েছি, বিশ্বনেতাদের অবশ্যই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
প্রতিবারের মতো কপ-২৮ সম্মেলনেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে কার্বন নিঃসরণ কমানো। সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ ৭০ হাজারের বেশি প্রতিনিধি।