গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় স্থানীয় বাসিন্দারা
গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় স্থানীয় জনগোষ্ঠী। এক্ষেত্রে তারা কাজের মান খারাপ, কাজের খুব ধীরগতি এবং তদারকির অভাবের কথা জানিয়েছেন। ড্রেজিংয়ের মাটি সঠিক স্থানে না ফেলা সহ খননকৃত পলি মাটি আবার নদীতে গিয়ে পড়া এবং ড্রেজিংয়ে প্রস্থ ও গভীরতা প্রত্যাশিত মাত্রায় না হওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর একনেক অনুমোদিত ৫৯১ কোটি ৫৮ লাখ ৮ লাখ টাকা ব্যয়ের ‘গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি ওই বছরের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হওয়ার কথা।
প্রকল্পের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে— ড্রেজিং করার মাধ্যমে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করা। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) বাস্তবায়িত এ প্রকল্পে পরবর্তীতে কিছু নতুন অঙ্গ সংযোজনে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৬২৯ কোটি ৪৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
প্রকল্পে ড্রেজিংয়ের ৪৪৮.৫৮ লাখ ঘন মিটারের মধ্যে ২৪.৬০ লাখ ঘন মিটার আউটসোর্সিং দ্বারা এবং বাকি ৪২৩.৯৮ লাখ ঘন মিটার বাপাউবো নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
চলতি বছরের ২০২১ পর্যন্ত প্রকল্পের ৭২ শতাংশ সময় পার হয়ে গেলেও এর সার্বিক বাস্তব অগ্রগতি মাএ ২৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
জানা যায়, বাপাউবোর নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং কাজের অগ্রগতি ২৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ করা হয়, যেখানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ড্রেজিং মাএ শূন্য। মে পর্যন্ত ১৬৭.৭৯ লাখ ঘন মিটার ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে।
প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, ড্রেজার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে জনবলের অভাব, স্পয়েল ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ও কোভিড-১৯ এর কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে প্রকল্পের ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল সংরক্ষণের জন্য প্রতিরক্ষা কাজ এবং আউটলেট নির্মাণের আর্থিক অগ্রগতি ২ কোট ৫০ লাখ টাকা।
যা ব্যয়ের মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং এ ক্ষেত্রে ভৌত অগ্রগতি ৬ শতাংশ। ৭.৩৩ কিলো মিটার তীর সংরক্ষণ কাজের আর্থিক অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি ৪৮ শতাংশ।
এছাড়া গ্রোয়েন মেরামত কাজের ভৌত অগ্রগতি ২৫ শতাংশ। এ কাজে আর্থিক কোনো অগ্রগতি নেই। ১.১৪ কিলো মিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজ পুনর্বাসন কাজেরও আর্থিক অগ্রগতি নেই, তবে ভৌত অগ্রগতি মাএ ২ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, প্রকল্পের ২২টি পূর্ত কাজের মধ্যে ১৪টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলোর গড় অগ্রগতি ৫০ শতাংশের বেশি।
পণ্য কেনার ৩টি কাজ সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্পের কাজে ৫টি প্যাকেজের চূড়ান্ত অনুমোদন সর্বনিম্ন একদিন থেকে সর্বোচ্চ ১১ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ৮টি প্যাকেজের ক্ষেত্রে মাত্র একটি করে দরপত্র বিক্রি হয়েছে।
অনুমোদিত মেয়াদ অনুযায়ী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করা কঠিন হবে বলে আইএমইডির নিবিড় পরিবীক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে।