কপ-২৬ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬’-সহ অন্য কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২ সপ্তাহের সফরে রোববার সকালে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট রোববার সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়।
এ সময় বিমানবন্দরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, তিন বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় থাকা বিদেশি মিশনের কূটনীতিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
ফ্লাইটটি রোববার স্থানীয় সময় বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে গ্লাসগোর প্রেস্টউইক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
গ্লাসগোতে অবস্থানকালে ১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসের কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিএফভি-কমনওয়েলথ হাই–লেভেল প্যানেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসির সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী কপ–২৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ভাষণ দেবেন। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্যাভিলিয়নে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিন বিকেলে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী কপ-২৬-এর ভিভিআইপি সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। সন্ধ্যায় স্কটল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন।
২ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করবেন। তিনি দুপুরে স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। বিকেলে প্রিন্স চার্লস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর ইউকে সভাকক্ষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী সভাকক্ষ-৪-এ ‘ফোর্জিং আ সিভিএফ কপ–২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ‘ওয়ার্ল্ড লিডারস সামিট’-এর সমাপনী পর্বে অংশগ্রহণ করবেন।
সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ পার্লামেন্টে ‘আ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক ভাষণ দেবেন।
৩ নভেম্বর স্থানীয় সময় দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে গ্লাসগো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
একই দিন লন্ডনে পৌঁছার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
৯ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
শেখ হাসিনা এদিন এলিসি প্যালেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। একই দিনে শেখ হাসিনা ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ইউনেসকো সদর দপ্তরে ‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’–এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও ইউনেসকোর ৭৫তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা আগামী ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া সংবর্ধনায় ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৩ নভেম্বর ঢাকার উদ্দেশে প্যারিস ত্যাগ করবেন। ১৪ নভেম্বর সকালে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।