38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৪:০৩ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অবৈধ ভাবে কাটা হচ্ছে কক্সবাজারের পাহাড়
পরিবেশ রক্ষা

অবৈধ ভাবে কাটা হচ্ছে কক্সবাজারের পাহাড়

অবৈধ ভাবে কাটা হচ্ছে কক্সবাজারের পাহাড়

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় পাহাড়নিধন নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও আছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কলাতলী, আদর্শগ্রাম, সৈকতপাড়া, লাইটহাউস পাহাড়, রাডারস্টেশন পাহাড়, টিঅ্যান্ডটি পাহাড়, চন্দ্রিমা পাহাড় নিধন করে ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে।

সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পাহাড়নিধন তৎপরতা অনেক বেড়েছে। অনেকে আবার রাতের আঁধারে পাহাড়ি এলাকা সমান করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু পাহাড়নিধন বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়।



সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন কলাতলী আদর্শগ্রামের জয়নালের ঘোনা পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১৫ জন শ্রমিক খুন্তি–কোদাল দিয়ে পাহাড় কাটছেন। এ ছাড়া কয়েকজন ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে সেই মাটি নিচে সরিয়ে নিচ্ছেন।

আশপাশে আরও কয়েকটি স্থানে পাহাড় কেটে সমতল করে সেখানে টিন ও বাঁশের বসতি নির্মাণ করছেন কয়েকজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ১০-১২ দিন ধরে পাহাড়কাটা চলছে। ঘরবাড়িও তৈরি হচ্ছে সমানে। বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড় কাটতে সুবিধা। কারণ, বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ের মাটি সহজে নিচে নেমে পড়ে।

এতে পাহাড়কাটায় শ্রমিক–খরচ বাঁচে। প্রশাসনের নজর এড়াতে অনেকেই রাতের বেলায় পাহাড় কাটছেন বলে জানান কয়েকজন শ্রমিক।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলসের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, গত দুই-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আদর্শগ্রামের অন্তত পাঁচ একর সরকারি পাহাড় সাবাড় করে তাতে অর্ধশতাধিক স্থাপনা তৈরি হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মচারী মোহাম্মদ ইয়াছিনের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ চক্র পাহাড় কাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।

পাহাড় কাটতে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গাকে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই চক্র পাহাড় কেটে তৈরি সমতল জায়গা প্লট বানিয়ে চড়ামূল্যে বিক্রি করছে বলে দাবি করেন তিনি।



কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ বলেন, পাহাড়ি ভূমি বেচাবিক্রিতে তিনি জড়িত নন। জেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির নির্বাচন ঘিরে কিছু লোকের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছে। সম্ভবত তাঁরাই অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এর মধ্যে ৮ মে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল আদর্শগ্রাম পাহাড়ে অভিযান চালায়। এ সময় কয়েকটি অস্থায়ী স্থাপনা (ঘরবাড়ি) ভেঙে ফেলা হয় এবং পাহাড় কাটার সামগ্রী ও মাটি টানার কয়েকটি ঠেলাগাড়ি জব্দ করা হয়। কিন্তু এ সময় কাউকে আটক করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার জিল্লুর রহমান বলেন, পাহাড় কাটার খবর পেয়েই যৌথ অভিযান চালানো হয়েছে। পাহাড় কাটার শ্রমিকসহ জড়িত লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পাহাড় কাটার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের’ সভাপতি আয়াছুর রহমান বলেন, শহরের ১০-১২টি পাহাড় ছাড়াও জেলার টেকনাফ, উখিয়া, রামু, সদরের খুরুশকুল, পিএমখালী, চকরিয়ায় পাহাড়নিধন চলছে।

ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড়নিধন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পাহাড়ধসের ঝুঁকিও বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা বলেন, পাহাড়নিধন বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান অব্যাহত আছে। গত কয়েক দিনে চার-পাঁচটি অভিযান হয়েছে। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কিন্তু নানা কারণে পাহাড়কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।

বৈরী পরিবেশে পাহাড় কাটলে কিংবা রাতের বেলায় দুর্গম এলাকায় পাহাড় কাটার খবর পেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছাও সম্ভব হয় না। কারণ, পায়ে হাঁটা রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলের পাহাড়ে ওঠা–নামা কষ্টকর, এ ছাড়া নিরাপত্তাঝুঁকিও থাকে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত