অতীতের ব্যর্থতা ভুলে নতুন করে কাজ করতে হবে: তাজুল ইসলাম
খাল দখল ও দূষণের বিষয়ে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী (এলজিআরডি) তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘অতীতে আমাদের অনেক ব্যর্থতা আছে। আমরা অতীতে পারি নাই।
এ জন্য আগামী দিনেও পারার জন্য ও করার জন্য চেষ্টা করব না, এই মানসিকতা থাকলে চলবে না। জাতিগতভাবে আমাদের হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকার কথা নয়।’
রবিবার সকালে ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ২৯টি খাল ও ১টি রেগুলেটিং পন্ডের সীমানা নির্ধারণ প্রকল্পের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর গাবতলীর কল্যাণপুর জলাধার ও পাম্প হাউস এলাকায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে খালের জায়গা উদ্ধার প্রকল্প নিয়ে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছি, সেখানে সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। জনসমর্থন না থাকলে জনগণের জন্য কল্যাণকর ও ভালো কিছু করা কখনোই সম্ভব নয়।’
খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য যে ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ, তারই একটি অনুষ্ঠানে এসে অত্যন্ত উৎফুল্ল বোধ করছি।
বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের প্রতিটি শহরকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতির জনকের স্বপ্ন, সুখী সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য ছিল, সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারিনি।’
তবে এখন সব খাতকে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য, সেবা, শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা, বিদ্যুতায়ন, কর্মসংস্থান, শিল্পায়ন, নগরীর জীবন যাপনকে স্বস্তিদায়ক ও শান্তিপূর্ণ করার কোনো বিষয়ই উপেক্ষা করা হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, দুই সিটি মেয়রের নেতৃত্বে বেশ কিছু কাজ হয়েছে, হচ্ছে। মেয়রদের কাছে খালের দায়িত্ব হস্তান্তরের পর পুনরুদ্ধারের কাজও চলছে।
যে স্থানে আজকের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে, সেই জলাধার ও পাম্প হাউসের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের এই জলাধারের ১৭৩ একর জায়গার মধ্যে বিভিন্নভাবে অবৈধ দখল হয়েছে। যে কারণে শহরে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। স্বস্তিদায়ক ও পরিবেশবান্ধব ঢাকা নির্মাণে এ জলাধার অপরিহার্য।
এদিকে খালের সীমানা নির্ধারণের পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জনগণের সমর্থন প্রয়োজন জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশ, যেমন সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশগুলোর শহরে যখন উন্নয়নকাজ হয়েছে, তখন সেখানেও অনেক ঝুঁকি ছিল।
আমার চোখে দেখা, সেই সব ঝুঁকি মোকাবিলা করে কীভাবে উন্নয়ন হয়েছে। সবই সম্ভব হয়েছে মানুষের সমর্থন নিয়ে। আমাদের এখানেও এই সমর্থন খুব বেশি প্রয়োজন।’
ঢাকা উত্তর সিটি সূত্রে জানা গেছে, ২৯টি খাল ও ১টি রেগুলেটিং পন্ডের সীমানা নির্ধারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
প্রকল্পের এক বছর মেয়াদের মধ্যে খালগুলোর বৈধ বিস্তৃতি ও সীমানা নির্ধারণ, সীমানা চিহ্নিতকারী পিলার স্থাপন, খালের প্রবাহ আটকে দেওয়া স্থাপনা চিহ্নিত করা ও খালের পানিদূষণের পরিমাপ এবং দূষণের স্থানগুলো চিহ্নিত করার কাজ করা হবে।