পশু-পাখি মুক্তির দাবিতে নিজেকে ‘খাঁচাবন্দি’ করে কর্মসূচি শুরু করেছেন পরিবেশকর্মী হোসেন সোহেল
নিজেকে লোহার খাঁচায় বন্দি করে পৃথিবীর সব খাঁচাবন্দি প্রাণিদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিক হোসেন সোহেল।
শখ করে পশু পাখি খাঁচাবন্দি করে রাখাকে ‘অমানবিক’ দাবি করে সেগুলোর মুক্তি চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ব্যতিক্রমী এক প্রতীকী কর্মসূচি পালন করছেন তিনি
সোহেল হোসেন ২০ আগস্ট শনিবার সকাল ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন, যা চালিয়ে যাবেন আরও তিন দিন।
প্রতীকী এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তার শ্লোগান- মুক্তি চাই ‘খাঁচায় বন্দী না করে আমাকে আমার আবাসস্থলে যেতে দাও’, পশু প্রাণীও কথা বলে, তবে শুধু যারা বোঝে তাদের সঙ্গেই।
হোসেন সোহেল বলেন, খাঁচায় পাখি পোষা বর্তমানে শৌখিনতার পরিচয় বলে মনে করেন অনেকে। শুধু পাখি নয় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খরগোশ, বানরও অনেকে পোষেন। অনেকের কাছে এসব বন্যপ্রাণী পোষা আভিজাত্যের পরিচয়। তবে এদের খাঁচায় বন্দী করে রাখা অমানবিক।
‘পৃথিবী শুধুই মানুষের নয়। এখানে সব প্রাণির স্বাধীন জীবনের অধিকার আছে। একটি বন্যপ্রাণি শিকার করবে বা শিকার হবে, তার প্রজন্ম বৃদ্ধি করবে এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম।
কিন্তু খাঁচাবন্দি জীবনে সে না পায় খাবার, না হয় তার জৈবিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা। অপরাধহীন তাকে শৃঙ্খলবন্দী করে রাখা অমানবিক। কোনোভাবেই প্রাণিদের বন্দি রাখা যাবে না। এটাই আমাদের দাবি’, বলেন হোসেন সোহেল।
খাঁচায় বন্দী রাখার কারণে বন্যপ্রাণী বিলুপ্তির মুখে মন্তব্য করে নিজেকে পরিবেশকর্মী হিসেবে পরিচয় দেওয়া এই সাংবাদিক বলেন, ‘পাখিদের ডিম দেওয়ার সময়, বাচ্চা ফোটানোর সময় একটা আয়োজন থাকে।
তারা খড়, কুড়া সংগ্রহ করে বাসা বানায়। কিন্তু খাঁচায় বন্দী থেকে সে এগুলো পায় না। ফলে ফ্লোরে পড়ে তার ডিম ফেটে যাচ্ছে, যার ফলে বাচ্চা ফোটাতে পারে না। আর এর ফলে ধীরে ধীরে ওই প্রজাতি বিলুপ্ত হচ্ছে।’
সোহেল বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত লড়াই। আমি একজন কোনো সিস্টেম পরিবর্তন করতে পারব না। তবে আমি দেখিয়ে দিলাম কোনো পাখি প্রাণী খাঁচায় বন্দী করা যাবে না, নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। টাকার বিনিময়ে এই অবলা প্রাণীগুলোকে আর নির্যাতন করা যাবে না।
হোসেন সোহেল বলেন, দীর্ঘদিনের একটি পদ্ধতি আমি একা পরিবর্তন করতে পারবো না। তাই লড়াইটা আমার নিজের সাথে নিজের। এখানে সরকার, রাজনীতি, সংগঠন, সংস্থা, ব্যক্তি কেউ জড়িত না।
আমিও যন্ত্রণা নিতে চাই যেভাবে খাঁচায় বন্দী প্রাণীরা যন্ত্রণা পায়। আপনারা সবাই গালি-অপবাদ দিন, আমি হেরে যাবো না। যারা প্রকৃতি ভালোবাসেন আমাকে ভালোবাসেন তারা মাথায় হাত রাখবেন। যেন তিন দিন টিকে থাকতে পারি। মুক্ত হোক সকল খাঁচাবন্দি প্রাণী।