পরিবেশ দিবস, ২০২২
আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। প্রতি বছর এ দিনে দিবসটি বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য মানবজাতির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ উন্নয়নের পদক্ষেপকে উৎসাহিত করার জন্য জাতিসংঘের আওতায় ১৯৭৪ সাল হতে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হচ্ছে।
১৯৭২ সালের ৫ হতে ১৬ জুন পর্যন্ত জাতিসংঘ কর্তৃক মানব জাতির পরিবেশ বিষয়ে স্টকহোম সম্মেলন (Stockholm Conference on the Human Environment) অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে মানুষের দ্ধারা পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি এবং এ ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস ও পরিবেশ উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৯৭৩ সালে প্রথম সামুদ্রিক দূষণ, মানুষের অতিরিক্ত জনসংখ্যা, বিশ্ব তাপমাত্রাবৃদ্ধি (global warming), সম্পদের টেকসই ব্যবহার এবং বন্যপ্রাণী হত্যা অপরাধের মতো পরিবেশগত সমস্যাগুলোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে প্রথম বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়।
প্রতি বছর এ দিবসে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে বিশ্ব পরিবেশ উন্নয়নের পক্ষে কথা বলার জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, বেসরকারি সংস্থা, সরকারসমূহ এবং সেলিব্রিটিদের জন্য একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারণ ও প্রচার করা হয়।
২০২২ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হল “একমাত্র একটি পৃথিবী (#OnlyOneEarth)।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২২ বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযানে #OnlyOneEarth প্রতিপাদ্য ব্যবহার করে প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিচ্ছন্ন, সবুজ এবং টেকসই জীবনযাপন করতে নীতি এবং পছন্দগুলোতে রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ১৯৭৪ সালেও প্রথম বিশ্ব পরিবেশ দিবস “Only One Earth” প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হয়।
”একমাত্র একটি পৃথিবী (#OnlyOneEarth)” প্রতিপাদ্যটির তাৎপর্য হল:
মহাবিশ্বে কোটি কোটি ছায়াপথ আছে, আমাদের ছায়াপথে রয়েছে কোটি কোটি গ্রহ, কিন্তু পৃথিবী আছে মাত্র একটি। আমাদের বসবাসের জন্য ২য় কোন পৃথিবী নাই। তাই এর যত্ন নেওয়া আবশ্যক।
বর্তমানে পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকে থাকার ৩টি জরুরী সমস্যার সম্মুখীন (Earth faces a triple planetary emergency):
- বিশ্ব খুব দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে এবং জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তণ ঘটছে। মানুষ এবং প্রকৃতির জন্য মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে;
- মানুষসহ প্রাণীদের বাসস্থানের ক্ষতি হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে বহু প্রজাতি পৃথিবী হতে বিলুপ্ত হয়েছে এবং আরও প্রায় ১ মিলিয়ন প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে;
- দূষণ পৃথিবীর বায়ু, পানি এবং ভূমিকে ক্রমাগতভাবে বিষাক্ত করে চলেছে। ফলে পৃথিবীতে মানবজাতিসহ সকল প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মূখে পড়েছে।
এ আবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হল আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে টেকসই করা, ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রকৃতির সাথে আরও সংযুক্ত করার মাধ্যমে রূপান্তর করা; যাতে পরিবেশের ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয় এবং এর উন্নয়ন ঘটানো যায়।
আমাদেরকে অবশ্যই গ্রহের ক্ষতি করা থেকে এটি নিরাময়ের দিকে যেতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন শুধু মানুষের ইচ্ছা। মানুষকে অতি লোভ- লালসা, মাত্রাতিরিক্ত আরাম প্রিয়তা এবং বড় হতে আরও বড় হওয়ার আখাঙ্খা ত্যাগ করতে হবে।
বর্তমানে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় ক্রমবর্মান সাশ্রয়ী মূল্যে দূষণ বিহীন সুন্দর জীবন ধারণ করা সম্ভব, প্রয়োজন শুধু দূষণ বিহীন পরিবেশ উন্নয়নে মানবজাতির চিন্তাধারার ও ইচ্ছা শক্তির উন্নয়ন। ভাল খবর হল সমাধান এবং প্রযুক্তি বিদ্যমান এবং ক্রমবর্ধমান সাশ্রয়ী মূল্যে জীবন যাপন সম্ভব।