প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে কক্সবাজারের পরিবেশ
পাহাড়-প্রকৃতি-প্রতিবেশ ধ্বংসে বারবার কক্সবাজারের নাম আসছে। সরকারি প্রকল্প ছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সেখানকার পাহাড়-টিলা কাটা ও প্যারাবন ধ্বংসে যুক্ত হয়ে পড়েছে। এত কিছুর পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না প্রশাসন।
সর্বশেষ একটি সরকারি পাহাড় কেটে শতবর্ষী পানি চলাচলের ছড়া ভরাট করে একাধিক স্থাপনা তৈরি করে ফেলা হয়েছে। তিন সপ্তাহ ধরে পাহাড় কেটে ছড়া ভরাট করে ভবনটি নির্মাণের কাজ চললেও কেউ বাধা দেননি। বিষয়টি শুধু দুঃখজনকই নয়, নিন্দাজনক।
কক্সবাজার শহরের বাইপাস সড়কের জেলগেট এলাকায় সরকারি পাহাড়টি কাটা হয়েছে। সেই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে পাশের শতবর্ষী একটি খাল। পাহাড়ি ঢলের পানি সাগরে নেমে যাওয়ার প্রাকৃতিক ছড়াটি ভরাট করে ঘরবাড়ি তৈরি করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় জামাল উদ্দিন ওরফে বাবুলের নেতৃত্বে সাতজনের একটি সিন্ডিকেট এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। দিনদুপুরে একই সঙ্গে একটি পাহাড় ও একটি প্রাকৃতিক ছড়া ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে অথচ প্রশাসনের কোনো তৎপরতাই দেখা গেল না।
ছড়াটি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের আওতাধীন। দুই বছর আগেও ছড়াটির প্রস্থ ছিল ২৫ থেকে ৩০ ফুট। এখন ভরাট ও দখলের কারণে ছড়ার কিছু অংশ ৫ ফুটে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারি এই পাহাড় কাটা, বসতবাড়ি নির্মাণের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে।
সেই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করেই সেখানে এ দখলবাজি শুরু হয়েছে। পরিবেশ ধ্বংসের সিন্ডিকেটটির দেখাদেখি অনেকে ছড়ার বিভিন্ন অংশ ভরাট করে ঘরবাড়ি বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দ্রুত এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে ছড়াটি দখলমুক্ত করা না হলে বর্ষায় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে।
স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা বলেন, পাহাড় কেটে ছড়া ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ভূমি শাখাকে জানানো হলেও তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
এখন ভরাট হয়ে যাওয়া ছড়াটি উদ্ধার করা যাবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কথা হচ্ছে দখলবাজেরা কি এতটাই শক্তিশালী যে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? শতবর্ষী ছড়াটি পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।