নীল নদের উপর বাঁধ নির্মাণে বিরোধ: ইথিওপিয়া বনাম মিশর
![চিত্র ক্যাপশন নীল নদ মিশরের রক্ত প্রবাহ](https://ichef.bbci.co.uk/news/660/cpsprodpb/4FB1/production/_113710402_nilecairo976.png)
মিশরকে নীল নদের দান বলা হয় বা নীলনদকে মিশরের প্রাণ বা জীবন রক্ত হিসাবে দেখা হয় – নীল নদের জল ছাড়া দেশটির বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
নীল নদ আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় নদ যা পূর্ব- উত্তর আফ্রিকায় উত্তর মূখী হয়ে ১১ টি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভূ-মধ্যসাগরে পতিত হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বিরোধ নদও বটে।
ইহার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬,৬৫০ কিমি এবং যে দেশগুলোর উপর দিয়ে প্রবাহিত সে দেশগুলো হ’ল তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, কঙ্গো, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, ইরিত্রা, দক্ষিণ সুদান, উত্তর সুদান এবং মিশর। নীল নদই হ’ল সুদান ও মিশরের একমাত্র পানির উৎস।
নীলের রয়েছে দুটি উপ নদ- হোয়াইট নীল (White Nile) এবং ব্লুনীল (Blue Nile)।
হোয়াইট নীল হ’ল নীল নদের মূল নদ। ব্লুনীল নীল নদের ৮০% পানির উৎস। হোয়াইট নীল অপেক্ষাকৃত লম্বা এবং ইহা মধ্য আফ্রিকার গ্রেট লেক (Great Lakes) অঞ্চল হতে উৎপন্ন হয়েছে; সবচেয়ে দূরবর্তী উৎস এখনও নির্নয় করা সম্ভব হয়নি, তবে উহা রুয়ান্ডা অথবা বুরুন্ডীতে হবে।
অতপর ইহা তাঞ্জানিয়ার উপর দিয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে ভিক্টোরিয়া লেক (Lake Victoria,) এর প্রবাহের সাথে মিলিত হয়ে উগান্ডা ও দক্ষিণ সুদানের উপর দিয়ে উত্তর সুদানে প্রবেশ করেছে।
ব্লুনীল ইথিওপিয়ার টানা লেক (Lake Tana) হতে উৎপন্ন হয়ে উত্তর- পশ্চিমমূখী হওয়ার পর প্রবাহিত হয়ে উত্তর সুদানের রাজধানী খার্তুম এ হোয়াইট নীলের সাথে মিলিত হয়ে মূল নদ হিসাবে সুদান মরুভূমির মধ্যদিয়ে মিশরে এবং মিশরের উপর দিয়ে ভূ-মধ্য সাগরে পতিত হয়েছে।
মিশরের সভ্যতা এবং সুদান; প্রাচীন কাল হতে সম্পূর্ণভাবে নীল নদের উপর নির্ভলশীল। মিশরের বেশীর ভাগ জনবহুল নগরী, সব কয়টি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা নীল নদের তীরে অবস্থিত।
২০১১ সাল হতে ইথিওপিয়া জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ণির্মাণের লক্ষ্যে ব্লুনীল উপর বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে। বাঁধটির নাম দেওয়া হয়েছে “গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ (গার্ড)”।
ইহাকে “মিলিনিয়াম ড্যাম” বা ”হাইডিস ড্যাম” ও বলা হয়ে থাকে। বাঁধটি উত্তর সুদানের সীমান্ত রেখা হতে ১৫ কিমি ভিতরে অবস্থিত। ইথিওপিয়ার লক্ষ্য জল বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নিজেদের প্রয়োজন মিঠিয়ে পাশ্ববর্তী দেশসমূহে রপ্তানী করা। বাঁধটি নির্মানের মাধ্যমে ৬.৪৫ গিগাবাইট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে; যা হবে আফ্রিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের ৭ম বৃহৎ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
জলবিদ্যুতের জন্য বাঁধ (Dam) টির সম্মূখে যে জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে তাতে ৭৪ বিলিয়ন ঘনমিটার (বিসিএম) পানি ধারণ করবে এবং জলাধারটি পূর্ণ হতে ৫ হতে ১৫ বছর সময় লাগবে।
বাঁধটির পরিকল্পনা গ্রহনের পর হতে মিশর ইহার বিরোধীতা করে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, বাঁধটি নির্মানের পর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনাঙ্গভাবে চালু হলে নীল নদের সুদান ও মিশর অংশে পানি প্রবাহ একেবারে কমে যাবে।
যাতে করে দেশ দুটির কৃষি উৎপাদনসহ অর্থনীতি ও সামাজিক সবখাতেই বিপর্যয় দেখা দিবে। বিশেষ করে সমুদ্রের লবনাক্ত পানি দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশসহ জীবনের সর্বক্ষেত্রেই মিশর খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হবে।
তাই উত্তর আফ্রিকার দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই নীল নদের উজানের বাঁধ নির্মানের বিরোধিতা করে আসছে এবং ইথিওপীয় প্রকল্পটিকে তারা অস্তিত্বের হুমকি হিসাবে বিবেচনা করেছে।
সম্প্রতি বাঁধ নির্মানের কাজটি সমাপ্ত হয়েছে এবং জলাধারটি জলে পূর্ণ হওয়া শুরু করেছে। ইথিওপিয়ায় এ মৌসুমে যখন বুষ্টি শুরু হয় তখন ইথিওপিয়ানরা উৎসবে মেতে উঠে এবং তখন মিশর রাগে, ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং তাদের মাঝে হতাশা দেখা দেয়।
![চিত্রে: জুন, ২০২০ বাঁধের সম্মূখের জলাধার শুষ্ক দেখা যায় ( স্যাটেলাইট দৃশ্য)](https://news.files.bbci.co.uk/vj/live/idt-images/image-slider-nile_dam_ws_languages/ethiopia_dam_26_june_bo905.jpg)
![চিত্রে জুলাই ২০২০ এর প্রথম দিকে বাঁধের সম্মূখের জলাধার পূর্ণ হতে দেখা যাচ্ছে ( স্যাটেলাইট দৃশ্য)](https://news.files.bbci.co.uk/vj/live/idt-images/image-slider-nile_dam_ws_languages/ethiopia_dam_12_july_ihdsd.jpg)
সুদান, মিশর এবং ইথিওপিয়া বাঁধটির নির্মাণ নিয়ে এক দশক ধরে আলোচনা করে আসছে, এরই মধ্যে বাঁধটির নির্মাণ হয়ে গিয়েছে।
আলোচনায় ২০১৫ সালে তিনটি দেশের মধ্যে “সহযোগিতার চেতনা (spirit of co-operation)” নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তবে মিশর মনে করে কোনরূপ আলোচনা ছাড়া ইথিওপিয়া কর্তৃক জলাদার পানিতে পূর্ণ করা কর্মসূচীতে সেই চেতনাটি অনুপস্থিত।
মিশর গত এক বছরে, এটি নিয়ে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্তরে তদবির করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের সহায়তা চেয়ে রাজনৈতিক চেষ্টা তদবির করেছে, কিন্তু কোন ফলাফলই আসেনি।
![চিত্রে মার্কিন রাষ্ট্রপতির অফিসের আমেরিকা, মিশর ও ইথিওপিয়াকে একটি চুক্তিতে সই করানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।](https://ichef.bbci.co.uk/news/624/cpsprodpb/3396/production/_110460231_b50e6489-fa45-41cf-8c72-575a1b5b7598.jpg)
মিশর সেই কূটনৈতিক যুদ্ধে হেরে গেছে বলে মনে হয়।
এটি ইথিয়পিয়াকে ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘের ওয়াটারকোর্সস কনভেনশন (1997 UN Watercourses Convention) মেনে চলতে বাধ্য করতে ব্যর্থ হয়েছে, এই কনভেনশনে আন্তর্জাতিক নদ-নদীতে কোন প্রকল্প গ্রহণের আগে উজানের দেশগুলোকে ভাটির দেশগুলোর সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন।
এই মুহুর্তে কল্পনা করা কঠিন যে, মিশর মেনে নেওয়া ছাড়া আর কিবা করতে পারে যদিও সম্ভাব্য ক্ষতির মোকাবেলা তাদের জন্য করা দূরহ হবে। তবে মিশর এখনো সামরিক বিকল্পের বিষয়টি চিন্তা করেনি।
মিশরীয় নেতৃত্ব বারবার বলেছে যে, আলোচনার মাধ্যমে এটি সমাধানের তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। তবে কোন বিচার কাজ স্তগিত রাখার মত “সমস্ত বিকল্প টেবিলে থাকবে” – এমন একটি বাক্য যা প্রায়শই সম্ভাব্য দ্বন্দ্বকে উসকে দেয়।
মিশর বার বার” গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ (গার্ড) প্রকল্পের বিষয়টি মিশরের জীবন ও মৃত্যুর বিষয় হিসাবে বর্ণনা করেছে। এটি বিশেষত সত্য হবে যদি বাঁধের ফলে মিশরে পৌঁছে যাওয়া নীল নদের পানির পরিমাণ যথেষ্ট হ্রাস পায়।
২০১৮ সালে বিবিসির সাংবাদিক অ্যালিস্টার লাইটহেড ইথিওপিয়া, সুদান ও মিশরের মধ্য দিয়ে ব্লু নীল নদের উৎস হতে সমুদ্র পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিলেন।
মিশর এখন একটু শক্ত অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছে এবং বলছে যে, তারা আফ্রিকান ইউনিয়নের কুটনৈতিক প্রক্রিয়ার উপর আস্থাশীল এবং ইথিওপিয়া একতরফাভাবে কিছু করতে পারেনা।
মিশরের পানির দারিদ্র্রতা
মিশর এটিও জোর দিয়ে বলছে যে, ভবিষ্যতে ত্রিদেশীয় কোন চুক্তিতে তার দেশের জন্য ৫৫ বিলিয়ন ঘনমিটার পানির প্রাপ্যতাকে অধিকারকে সে মেনে নিবে।
ব্লু নীল এর মধ্য দিয়ে বছরে গড়ে ৪৯ বিলিয়ন ঘনমিটার জল প্রবাহিত হয় এবং বাঁধের মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের পানি সরবরাহ করা হবে- ইথিওপিয়া মিশরকে এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেছে।এটি মিশরের
দাবীসমূহকে চুক্তির মাধ্যমে উত্তরাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ো হবে বলে ইথিওপিয়া মনে করছে।
মিশর সরকারের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে সমস্যা সমাধানের চেয়ে শক্তিহীনতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
মিডিয়া ক্যাপশন: বিবিসি’র সংবাদ উপস্থাপক রোস অ্যাটকিনস … কেন মিশর এবং ইথিওপিয়া নীল বাঁধের বিষয়ে একমত হতে পারে না?
দেশটি যে পানির বেশী অংশীদারিত্ব চায় ইহা বেশি কিছু নয়।
গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ (গার্ড)কে মিশর যে অস্তিত্বের হুমকি হিসাবে বর্ণনা করে তা অতিশয়োক্তি নয়। মিশর একটি শুষ্ক দেশ এবং একেবারেই স্বল্প পানির দেশ।
বিশ্বব্যাকের ভাষায় ঐ দেশকেই পানির ঘাটতি দেশ হিসাবে মনে করা হয় যে দেশের নাগরিকদের বছরে ব্যক্তি প্রতি ১০০০ ঘনমিটারের থেকে স্বল্প পানি থাকে। সরকারী হিসাবে মিশরে এই সংখ্যা প্রতি ব্যক্তি পিছু মাত্র ৫৫০ ঘনমিটার।
উপরের মানচিত্রটিতে দেখা যায় যে মিশরের ১০০ মিলিয়ন জনসংখ্যার ৯০% সংকীর্ণ নীল উপত্যকায় বসবাস করছে, দেশের অবশিষ্ট অঞ্চলে মাত্র ৬% লোক বাস করছে। মূলত মিশরে নীল নদের উভয় পাশ্ব বিশাল মরুভূমি দ্বারা বেষ্টিত।
ইথিওপিয়া মিশরকে ধূর্ততায় পরাস্ত করেছে
নীল নদ মিশরীয়দের পানির প্রাথমিক উৎস, এটি তাদের পানীয় এবং কৃষিকাজ উভয়ের জন্য পানি সরবরাহ করে। নীল নদে বর্তমানে যে ৫৫ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি প্রবাহ হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় এরই মধ্যে খুব কম।
এটি ব্যাখ্যা করে যে মিশর এখনও পর্যন্ত সরকারী পর্যায়ে মৌখিক সংযম প্রয়োগ করেছে, মিডিয়া এবং মন্তব্যকারীরা পিছপা হয়নি।
![চিত্র ক্যাপসান: মিশরের ভাষ্য নীল নদের পানি তাদের কৃষির জন্য বিশাল](https://global.unitednations.entermediadb.net/assets/mediadb/services/module/asset/downloads/preset/assets/2011/10/13761/image1170x530cropped.jpg)
মিশরের মতে, ইথিওপিয়া বছরকে বছর টানা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে মিশরীয়দের অন্ধকারে রেখে নদীর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ইথিওপিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গেদু আন্ডারগাচিউ প্রথম বছর গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ার রেনেসাঁ বাঁধ (গার্ড) এর সামনের জলাশয় পানিতে পূর্ণ হওয়ার পর তা উদযাপন করে একটি বিজয়ী টুইট করেন – যাতে বলেন “নদী হ্রদে পরিণত হয়েছে … নীল নদ আমাদের” – যা আমাদের স্ফীত আবেগ সৃষ্টি করে। মিশরীয়রা দীর্ঘকাল যা ভয় পেয়েছিল তা নিশ্চিত করেছে এটি এবং তারই জবাবে মিশরের কেউ কেউ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়েছিল।
ইমাদ-আল-দিন হুসেন নামক মিশরীয় একজন কলাম লেখক তার পাঠকদেরকে আশ্বস্ত করার প্রয়াসে দৈনিক শরওক পত্রিকায় লিখেছেন যে, ইথিওপিয়া ধূর্ততায় পরাস্ত করে নিজেদের দেশকে সুনিশ্চিত করেছে, কিন্তু খেলা এখনও শেষ হয়নি।
তিনি হতাশা এবং অনেক মিশরীয়রা যা অনুভব করে তার ভারসাম্যহীনতার সংক্ষিপ্তসারে আরও বলেছেন “ইথিওপীয়রা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে যে নীল নদ ছাড়া আমরা আক্ষরিক অর্থে মরে যাব।
তাদের অনেক নদী রয়েছে এবং তারা বার্ষিক প্রায় ৯৫০ বিলিয়ন ঘনমিটার বৃষ্টিপাতের জল পায়। আমরা অল্প পরিমাণে ৫৫ বিলিয়ন ঘনমিটার পাই, যা আমাদের আসল প্রয়োজনের অর্ধেক, যা তাদের পশুপাল প্রতিবছর খায়, তার অর্ধেক। “
কূটনৈতিক বাকবিতন্ডতা
মিশরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বর্জ্য পানি কৃষিতে পুনর্ব্যবহার, লোনা পানির লবনাক্ততা দূর করে ব্যবহার করা এবং ঐতিহ্যবাহী সেচের পরিবর্তে অধিকতর পানি সাশ্রয়ের উচ্চাভিলাষী পানির দ্বারা শুধূ জমি ভিজানো সেচ প্রদ্ধতি অন্যতম ।
তবে মিশরের পানির দারিদ্র্যতা যুক্তিটি সম্ভবত কূটনৈতিক লড়াইয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী কার্ড, যদি এটি আন্তর্জাতিক সমর্থন বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যায়।
বেশ কয়েকটি ভাষায় সংক্ষিপ্ত বিজ্ঞাপন ছাড়া মিশরীয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক সমর্থন আদায়ে প্রচারণা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে।
উপ-সাহারান আফ্রিকা এবং এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ইথিওপীয়রা তাদের পক্ষে নিতে ভাল অগ্রসর হয়েছে বলে মনে হয়।
আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারপারসন হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামফোসা। অনেক মিশরীয় বিশ্বাস করেন যে দক্ষিণ আফ্রিকা ইথিওপিয়ার পক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট, যা আফ্রিকান ইউনিয়নে আলোচনার পক্ষে ভাল নয়।
যদি আফ্রিকান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এর মাধ্যমে ইহার সন্তোষজনক ফলাফল পেতে ব্যর্থ হয় তবে মিশর বিশ্বাস করে যে তারা ইথিওপিয়ার সাথে পানির হিৎসা আদায়ের বিষয়টি জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিলের কাছে ফিরিয়ে নিতে পারে।
তবে এটি জাতিসংঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের সকলের সমর্থন আদায়ে এখনও নিশ্চিত নয়।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, চীন ও রাশিয়া উভয়ই এই ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে, কারণ তারা নদীর ভাটির প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে নদী সংক্রান্ত এরূপ তর্ক-বিতর্কে জড়িত রয়েছে বিধায় এরূপ নজির স্থাপন করতে চায় না।
মিশর এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে ব্যবধানটি পূরণ করতে ব্যর্থতা উভয়ের জন্য দুর্যোগ ঘটাতে পারে। খরা এবং সম্ভাব্য ব্যাপক বাস্তুচ্যুততার ফলে মিশরে অশান্তি পুরো উত্তর আফ্রিকা এবং ইউরোপ জুড়ে সুদূরপ্রসারী পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
আফ্রিকার বৃহত্তম দুটি দেশের মধ্যে একটি সশস্ত্র সংঘাত কেবল আফ্রিকানদের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্য একটি ভীতিজনক পরিবেশ তৈরী করতে পারে।
Source: BBC and WIKIPEDIA & The Green Page