ধ্বংস করা হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস
বাণিজ্যিক খননের জন্য হারিয়ে যাচ্ছে ক্রান্তীয় অরণ্য (Tropical forest)। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই ছবি উঠে এসেছে। যাকে ঘিরে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। দেখা গিয়েছে, চারটি দেশ ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ঘানা ও সুরিনাম অর্থাৎ ক্রান্তীয় অরণ্যের হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে ‘ধনী’ চারটি দেশেই এই প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে।
‘ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে’ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে যত ক্রান্তীয় অরণ্য ধ্বংস হয়েছে তার ৮০ শতাংশই এই চার দেশে অবস্থিত।
এর মধ্যে ৭০ শতাংশ জঙ্গল কাটা পড়েছে কৃষির জন্য জমি তৈরি করতে গিয়ে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের বেশি উদ্বেগ বাণিজ্যিক খননকে ঘিরেই। আকরিক লোহা, সোনা, কয়লার মতো খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য সবুজ ধ্বংসের এই ভয়ংকর প্রবণতা যেভাবে পৃথিবীর ‘ফুসফুস’কেই বিপণ্ণ করে তুলছে তাতে আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক অ্যান্টনি বেবিংটন, যিনি ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক, তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদেরও পরিকল্পনা করা দরকার।
অরণ্য ধ্বংসের পিছনে বাণিজ্যিক খননের প্রভাব কমাতে সরকার ও সংস্থাগুলিকে এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ন্যূনতম পদ্ধতিতে এই কাজ করা যায়।’
পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কাজনক? বলা হচ্ছে ২০০০ সালে যে পরিমাণ খনিজ পৃথিবীর মাটি থেকে তোলা হত, এখন সেই পরিমাণের দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এর জন্য দায়ী পৃথিবীর ২৬টি দেশ।
যদিও মূলত চারটি দেশের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। গবেষকরা উপগ্রহের তোলা ছবি ও ডেটা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি ধরতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, এর মধ্যে অন্যতম উদ্বেগের কেন্দ্রে ব্রাজিল। ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামেই সবাই চেনে ব্রাজিলের আমাজনকে। কিন্তু পরিবেশের শুদ্ধতার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম ক্রান্তীয় অরণ্যের উপরে ভরসার উপায় ক্রমেই কমে যাচ্ছে।
ইচ্ছেমতো গাছ কাটা ও দাবানলের ফলে ক্রমে ক্ষয় ধরেছে পৃথিবীর এই ফুসফুসে। এবার জানা গেল, বাণিজ্যিক খননের জন্য অরণ্য ধ্বংসের ফলে কত বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। যা থেকে এখনই সাবধান না হলে তা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বার্তা বয়ে আনবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।