আগামী বছর দূষণের রেড জোনে থাকবে পশ্চিমবঙ্গ
নতুন বছর পশ্চিমবঙ্গের দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে অশনি সংকেত দেখছেন বিজ্ঞানীরা। বোস ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, রাজ্যে দূষণের হার বাড়বে অন্তত ৮ শতাংশ।
বাতাসে এরোসলের পরিমাণ বাড়বে, দেশের দূষণ সূচকে হয়ত দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে বাংলা। এরোসল মানবশরীরের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। গবেষণাপত্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ রাজ্যে এরোসলের মাত্রা ততটা বেড়ে গেলে পশ্চিমবঙ্গের স্থান হবে ‘রেড জোনে’।
বোস ইনস্টিটিউটের দুই গবেষক ডঃ মনামী দত্ত ও ডঃ অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের গবেষকপত্রটির নাম ‘এ ডিপ ইনসাইট টু স্টেট লেবেল এরোসল পলিউশন ইন ইন্ডিয়া’।
তাতে বিভিন্ন রাজ্যে এরোসলের দূষণের মাত্রা অনুযায়ী পরিস্থিতি কেমন, সেই সংক্রান্ত গবেষণা রয়েছে বিস্তারিত আকারে। কী এই এরোসল এবং তার মাত্রা বাড়লে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পরিবেশ, তা বুঝে নেওয়া দরকার প্রথমে।
এরোসল আসলে বায়ুতে ভাসমান কঠিন জলবিন্দু, যা বায়ুর বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে মিশে থাকে। তার সঙ্গে ধূলো, লবণ, জৈব কণা মিশে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এরোসল অপটিক্যাল ডেপথ বা AOD’র মাধ্যমে জানা যায়, কোন এলাকার বায়ুতে কতটা এরোসল আছে।
সেই পরিমাপ অনুযায়ী ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ ‘রেড ক্যাটাগরি’তে। AOD অনুযায়ী, বাতাসে এরোসলের মাত্রা ০.৫ এর বেশি হলেই তা বিপজ্জনক অর্থাৎ রেড জোন। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও তেমন। এই মাত্রা মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
গবেষক ডঃ অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর পার্বত্য অঞ্চল থেকে বায়ুস্তরে জমা হতে থাকে এরোসল। শীতকালে তা আরও বেশি হয়।
সেইসঙ্গে স্থানীয় বিভিন্ন কারণে দূষণের মাত্রা বাড়ে। পশ্চিমবঙ্গ এমনিতেই বিপজ্জনক অবস্থানে রয়েছে। তার উপর সেই মাত্রা আরও বেশি হলে মানুষের পক্ষে তা অত্যন্ত হানিকর হয়ে উঠবে।’
আরেক গবেষক ডঃ মনামী দত্তর বলেন, ‘আগে পশ্চিমবঙ্গে দূষণের উৎস ছিল যানবাহনের ধোঁয়া। পরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রাস্তার ধুলো। এরপর সম্প্রতি আবার কাঠকয়লা, উনুনে রান্নার চল হয়েছে। ফলে বায়ুতে এরোসলের মাত্রা বেড়েছে।’
দূষণ ঠেকাতে নির্মাণ কাজের সময় একাধিক উপায় অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শুনছে কে? বছর পেরলেই শিয়রে সমূহ বিপদ, সেদিকে খেয়াল নেই কারও।