38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ২:২২ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে ক্রমশ বেড়েই চলছে
পরিবেশ দূষণ

মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে ক্রমশ বেড়েই চলছে

মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে ক্রমশ বেড়েই চলছে

কার্বন ডাই–অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি গ্যাসের পরিমাণ বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে বেড়ে চলেছে এবং বিশ্ব ক্রমান্বয়ে আরও উষ্ণ হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশ বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষার ভিত্তিতে উষ্ণতা বাড়ার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একমত হয়েছে।

ইতিমধ্যে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। ২০৫০ সাল নাগাদ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যেতে পারে। শিল্পায়ন শুরু হওয়ার সময় থেকে হিসাব ধরে এই তাপমাত্রা বাড়ার কথা বলা হচ্ছে।

আপাতদৃষ্টিতে ১ দশমিক ৫ বা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস খুব একটা বড় সংখ্যা নয়। কিন্তু এতটুকু বাড়লেই বিশ্বের বায়ুমণ্ডলের সঞ্চালনে বিরাট পরিবর্তন আসবে। ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ করছি, ঋতুর সময় বদলে যাচ্ছে।



যখন বৃষ্টি হওয়ার সময়, অর্থাৎ বর্ষাকালে স্বাভাবিক বৃষ্টির তুলনায় অনেক কম বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষা ঋতুর বেশ আগে থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।

কোনো কোনো বছর বর্ষাকাল প্রলম্বিত হয়ে শরতেও বৃষ্টি হচ্ছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে ফসলে। বন্যার প্রকোপ বাড়ছে, একই সঙ্গে খরার প্রকোপ বাড়ছে।

এসব কারণে ভবিষ্যতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খাদ্যঘাটতি দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে অল্প সময়ে প্রচণ্ড বৃষ্টি হতে পারে। এতে নগরগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে।

জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ছে। এর ফলে উপকূলবর্তী নিচু জায়গা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রকোপ ও মাত্রা বাড়তে পারে। অর্থাৎ নিচু দ্বীপগুলো এবং উপকূলবর্তী নিচু এলাকা মানুষের বসবাসের যোগ্য থাকবে না।

উষ্ণতা বাড়ার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে ১৯৯২ সালে একটি আন্তর্জাতিক আইন চূড়ান্ত করা হয় এবং পৃথিবীর সব দেশ এটি মেনে চলার জন্য অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

মোটাদাগে সাতটি বিষয় নিয়ে বিশ্ব এগোতে চাইছে। এই যাত্রায় আমাদের অংশগ্রহণ কতটা সক্রিয়, তা নিয়ে কিছু বলছি। প্রথমত, যে গ্যাসগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ানোর জন্য দায়ী, সেগুলোর নিঃসরণ প্রশমন করা।

এ দায়িত্ব মূলত উন্নত বিশ্বকে পালন করতে হবে। কারণ, তারাই মূলত প্রধান উদ্​গিরণকারী। আমরা যত্সামান্য পরিমাণ গ্যাস উৎপাদন করি। এ গ্যাসগুলো প্রধানত কলকারখানা, যানবাহন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কৃষিকাজে উৎপাদিত হয়।

উন্নতির অগ্রযাত্রায় এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আমাদের আরও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।

তবে আমরা যদি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগ দিই এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করি, তাহলে গ্যাস নিঃসরণ প্রশমনের কাজ কিছুটা হলেও করা সম্ভব। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্যাস নিঃসরণ শতকরা ৫ ভাগ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।



কিন্তু প্রশ্ন হলো, যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি তা রক্ষার জন্য কোনো রোডম্যাপ বা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আমরা করেছি কি? এ কাজে অনেক মন্ত্রণালয়কে তৎপর হতে হবে।

আমার প্রস্তাব হচ্ছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা কতটুকু এগোলাম, সে বিষয়ে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা উচিত।

সময়টা এ কারণে নির্ধারণ করেছি যে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বৈশ্বিক সম্মেলন হয় এবং সেখানে যেন আমাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারি।

বৈশ্বিক পর্যায়ে আলোচনার দ্বিতীয় বিষয়টি হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে, তা মোকাবিলা করার লক্ষ্যে সক্ষমতা অর্জন করা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম প্রধান দেশ। কাজেই অভিযোজনের কাজে সক্ষমতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি।

এ কাজে জাতীয় মহাপরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। এ কাজে সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের যথোপযুক্ত ভূমিকা কাম্য। এখানেও আমার প্রশ্ন, এ কাজে কোনো রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে কি এবং অভিযোজনের মহাপরিকল্পনা কতটুকু বাস্তবায়ন করা হলো, তা কেউ পর্যালোচনা করছে কি?



জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডে তৃতীয় বিষয়টি হলো অর্থায়ন। এ লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো অর্থ জোগানের দায়িত্ব মেনে নিয়েছে। অর্থাৎ প্রধান দূষণকারী দেশগুলোর ঘাড়ে এ দায়িত্ব বর্তেছে।

প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়ার কথা। ৭০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। টাকার পরিমাণ অনেক, কিন্তু এর বিতরণপ্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। এই বৈশ্বিক অর্থায়নপ্রক্রিয়ায় অর্থ লাভের ক্ষেত্রে আমাদের তৎপরতা বাড়াতে হবে, দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং অর্থ ব্যবহারের বৈশ্বিক নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।

এ কাজেও সব মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য কতটুকু এবং কোথায় আমাদের অগ্রগতি আটকে যাচ্ছে, তা পর্যালোচনা করতে হবে।

যে সাতটি বিষয়ের কথা বলেছিলাম, তার অন্য তিনটি হচ্ছে দক্ষতা অর্জন, প্রযুক্তি আহরণ এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা বা জবাবদিহি অর্জন। এ তিনটি কাজেও বিশ্ব সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, কিন্তু তাদের সাহায্য গ্রহণে আমরা কতটুকু কার্যকর, তা হিসাব–নিকাশ করা উচিত।

সপ্তম বিষয়টি হচ্ছে, অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। ২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।



বাংলাদেশ মনে করছে, এই লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নামিয়ে আনা উচিত। আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিটি বিরূপ ক্রিয়া বিবেচনায় এনে বাংলাদেশের উচিত অভিযোজনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা।

পৃথিবীর প্রতিটি দেশ তার অবস্থানের ভিত্তিতে নিজের দেশের জন্য অভিযোজনের লক্ষ্য ঠিক করে নিতে পারে এবং পরে সব দেশের লক্ষ্যমাত্রা মিলিয়ে একটি বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা যেতে পারে।

আমার আশা থাকল যে বাংলাদেশ এ কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং জাতীয়ভাবে তথা বৈশ্বিক পর্যায়ে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত