চিলির সভাপতিত্বে ও স্পেনের সার্বিক সহযোগিতায় মাদ্রিদে আগামী ২-১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৫তম বার্ষিক সম্মেলন (ইউএনএফসিসিসি) আয়োজিত হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের নিয়ে অংশগ্রহণে অনুষ্ঠেয় কপ-২৫ নামে পরিচিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনের ২৫তম আসরে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে যাচ্ছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা যায় যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট রবিবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়বেন মাদ্রিদের উদ্দেশে।স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে মাদ্রিদ টোরেজন বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণের কথা রয়েছে।সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, বিশ্ব পর্যটন সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে একটি সুসজ্জিত মটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে মাদ্রিদের হোটেল ভিলা ম্যাগনায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা যায়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেন সফরকালে এই হোটেলে অবস্থান করবেন।
পরের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী স্পেনের সবচেয়ে প্রদর্শনী কেন্দ্র ও ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যু ফিরিয়া দা মাদ্রিদে কপ-২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর পরে তিনি কপ-২৫ এর ওয়ার্কিং সেশনে যোগ দেবেন এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলেও জানা যাচ্ছে।সেই দিন আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে বিকালে আবার ওয়ার্কিং সেশনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেড্রো সানচেজের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় রাজ প্রাসাদে স্পেনের রাজা ও রানি আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এ সম্মেলনে এবার সভাপতি মনোনীত হয়েছেন চিলির পরিবেশমন্ত্রী মিজ ক্যারোলিনা স্মিদভ জালদিভার।জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এই সম্মেলনকে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। সম্মেলনটি এ বছর নভেম্বর মাসে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরিকল্পনা শুরুর আগেই নব-নির্বাচিত সভাপতি জেইর বোলসোনারো অর্থনৈতিক কারণ দেখিয়ে স্বাগতিক হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়।
কিন্তু পরে স্বাগতিক দেশ হতে এগিয়ে আসে চিলি। তবে সরকারি বিভিন্ন নীতি ও অসমতার বিরুদ্ধে লাখো মানুষের তুমুল বিক্ষোভে স্বাগতিক হওয়া থেকে সরে যেতে বাধ্য হয় বিপর্যস্ত চিলি। সবশেষে জাতিসংঘ, চিলি ও স্পেনের মধ্যকার পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে শেষের দেশ স্পেন স্বাগতিক হয়ে যায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বিশ্বে এ বিষয়ক আলোচনা ও দর কষাকষিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বাংলাদেশের।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান পরিবেশ বিষয়ক এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ দিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে জোর দাবি জানানো হবে।