চা বাগানে ছিটানো হয় অতিমাত্রায় ছত্রাকনাশক কপার অক্সিক্লোরাইড ওষুধ। যার ফলে চা গাছে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করছে।অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি দিকও কম নয়। এসকল রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের উপরও পড়ছে মারাত্মক প্রভাব।
কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিঙ্গা চা বাগানের একটি সেকশনে সম্প্রতি এভাবে অতিমাত্রায় ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। দ্রবণটি চায়ের পাতায় শুকিয়ে সাদা রং ধারণ করেছে। সেকশনের বেশ কিছু জায়গায় এমন বেশি মাত্রায় কীটনাশকের অবস্থা বিরাজ করছে।
চা বাগানের সর্দার বা কীটনাশক শ্রমিকরা ভুলবশত এমন ছত্রাকনাশক মিশ্রণটি প্রয়োগ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) জানায়, কপার অক্সিক্লোরাইড মূলত ছত্রাক আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়। চা পাতার বাড়ন্ত পর্যায়ে পাতার ঝলসানো রোগ ও পাতার দাগ রোগ দূরীকরণে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি সুনির্দিষ্ট পরিমাণে পানির সঙ্গে সংমিশ্রণ না করে মাত্রাতিরিক্ত বা অতিমাত্রায় ব্যবহার করা হলে এর ক্ষতির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রায়হান মজিদ হিমেল বলেন, চা গাছের পাতায় স্প্রে করলে সাধারণত সাদা সাদা দাগ থাকে। এজন্য আমরা প্রতিটি বাগানকেই সুনির্দিষ্ট মাত্রায় স্প্রে করতে বলে থাকি। তাহলে সাত থেকে দশ দিন পরে যখন পাতা তুলতে আসবে তখন আর চা পাতার উপর এমন দাগগুলো থাকে না।
নতুন কুঁড়িগুলো এক সপ্তাহ বা দেড় সপ্তাহ পর উত্তোলন করা হলে এতোদিনে রৌদ্রতাপ বা বৃষ্টির পানিতে সেই চা গাছের পাতায় জমে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলোর ক্ষতিকর দিকটি আর থাকে না। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকটি তখন নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশ যখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করছে এমন অবস্থায় অতিমাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার আমাদের জন্য খুবই দুঃখ জনক ব্যাপার। বাংলাদেশ এখন জৈব পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা অনেক কৃষক বাস্তবে প্রয়োগও শুরু করেছে। রাসায়নিক এর ব্যবহার যদি কমানো না যায় তাহলে বাংলাদেশ তথা বিশ্ব পরিবেশ প্রচন্ড ঝুঁকির মুখে চলে যাবে খুব শীঘ্রই। সুতরাং আমাদের রাসায়নিক ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে একই সাথে রাসায়নিক ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি জৈব ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।