পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানা নির্মাণে ঋণ বিতরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এ খাতে তেমন আগ্রহ নেই ব্যাংকগুলোর। ফলে সবুজায়ন প্রকল্পের অর্থায়নে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চ্যানেল আই অনলাইন
এছাড়া দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্প কারখানা তৈরি, ব্যাংকের শাখাগুলোতে পেপারলেস বা কাগজবিহীন ব্যাংকিং সেবা চালু ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আওতায় আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া নির্দেশনার বাস্তবায়নেও তেমন অগ্রগতি নেই বলেও জানা গেছে।
দেশে সবুজ বা গ্রিন ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয় ২০১১ সালে। তবে ২০১৪ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণকৃত ফান্ডেড ঋণের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পরিবেশবান্ধব খাতে ব্যয় করার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এখন পর্যন্তও সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ব্যাংকখাত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে এ খাতে ব্যাংক ২ হাজার ৩৬৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। যা আগের ত্রৈমাসিকের (জানুয়ারি-মার্চ) তুলনায় যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৬৬ ও ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ কম। আগের ৩ মাসে এখাতে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করেছে ২ হাজার ৮৭৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে ১৭৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
তবে ২০১৯ সালের মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে কারখানার সবুজায়নে। গ্রিন ফাইন্যান্সে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ৬৩ শতাংশ সবুজায়নে ব্যয় হয়েছে। সবুজ ইট উৎপাদনে ১১ শতাংশ, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ৮ শতাংশ, বর্জ্য পরিশোধন ৬ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ১২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, চামড়া ও টেক্সটাইল শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে ২০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ হাজার ৭শ কোটি টাকা (১ ডলারের দাম ৮৫ টাকা হিসাব করে)। কিন্তু এই গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) থেকে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর অনীহা দেখা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জিটিএফ থেকে চামড়া ও টেক্সটাইল শিল্পে ঋণ বিতরণের জন্য চুক্তি করেছিলো ১৯টি ব্যাংক। কিন্তু চলতি বছরের (২০১৯) মার্চ পর্যন্ত এখান থেকে মাত্র ২টি প্রকল্পে ঋণ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৭ ডলার বা ১ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু এই ঋণটি চামড়া খাতে নয়, বিতরণ করা হয়েছে টেক্সটাইল খাতে।