38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৫:০২ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
সেন্ট মার্টিন থেকে পর্যটকদেরকে আবর্জনা
পরিবেশ রক্ষা

সেন্ট মার্টিন থেকে পর্যটকদেরকে আবর্জনা না ফেলে সাথে করে নিয়ে আসার আহ্বান

সেন্ট মার্টিন থেকে পর্যটকদেরকে আবর্জনা না ফেলে সাথে করে নিয়ে আসার আহ্বান

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটকরা যাওয়ার পর যেসব ময়লা-আবর্জনা তৈরি হয়, সেগুলো তারা সৈকতে ফেলে পরিবেশ নষ্ট না করে যেন মূল ভূখণ্ডে ফেরত নিয়ে আসেন সেই আহ্বান জানিয়েছেন সৈকত পরিচ্ছনতা আন্দোলনের একজন সংগঠক।

শুক্রবার এই দ্বীপের সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পর ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মুনতাসির মামুন এ আহ্বান জানান, কেননা ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান থাকতেও অধিকাংশ পর্যটকরা সেটি মানেন না।

পরিচ্ছন্নতার এই আয়োজনে প্রায় ৫৫০ স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন। যাদের মধ্যে ঢাকা থেকে যাওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় পঞ্চাশ জন স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন। এছাড়া কক্সবাজারের প্রায় বিশ জন সার্ফার এতে অংশ নেন। স্থানীয়দের বড় সংখ্যাটি আসে সেন্ট মার্টিন বিএন ইসলামিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের তরফে। এছাড়াও অংশ নেয় এখানকার স্থানীয় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী।

প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র সৈকতে শুক্রবার পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে অংশ নেন। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান
ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র সৈকতে গত ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে অংশ নেন। দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৮৮০ কেজি ময়লা-আবর্জনা। আয়োজকরা বলছেন, তারা এ সব ময়লা মূল ভূখণ্ডে বা দ্বীপের বাইরে নিয়ে যাবেন।

ওশান কনজারভেন্সির উদ্যোগে ৩৫তম ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিন আপের অংশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে এই পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী পরিচালিত হয়। ধারাবাহিকতায় সেন্ট মার্টিনে এটি ১০ম আয়োজন। এই আয়োজনের সহযোগী বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় কোকা-কোলা কোম্পানী। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা এই আয়োজনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। কোস্টাল ক্লিনআপের স্লোগান ছিল ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’ অর্থাৎ তুলে নাও, পরিস্কার করো আর পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করো।

পরে আয়োজক সংগঠন ওশান কনজারভেন্সি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মুনতাসির মামুন বলেন, “প্রতিটি জায়গার একটা নিজস্ব স্বভাবিক ধারণক্ষমতা থাকে যে সেই জায়গাটায় কী পরিমাণ মানুষ ও দূষন বা আবর্জনাকে ধারণ করতে পারে।

“আপনি যদি এভাবে চিন্তা করেন, এক সময় এখানে একটা জাহাজ আসত। এখন আসে ৮-৯ টি। প্রতিটি জাহাজে কম করে হলেও যদি ৫-৬ শত জন করে আসেন, তাহলেও এখন ৪-৫ হাজার মানুষ আসে।

কোস্টাল ক্লিনআপের স্লোগান ছিল ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

“আমরা এখানে কিছু জিনিস সাথে করে নিয়ে আসি, কিছু এখানে এসে ব্যবহার করি, খাবার খাই, আবার কিছু জিনিস কিনে নিয়ে যাই। এই যে মোড়কগুলো এটা আমরা ডাস্টবিনে না ফেলে এখানে সেখানে ফেলে যাই। এই ছোট জায়গার এই পরিমাণ মানুষের আবর্জনা ধারণ করার ক্ষমতা আসলেও নাই।”

এ বছর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবকরা ১১শত ৭০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সৈকত থেকে অপসারণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা যেন আমাদের বর্জ্যগুলো ঠিক জায়গায় ফেলি বা ফেরত নিয়ে যাই। নয়ত সেন্ট মার্টিনকে পরিচ্ছন্ন রাখা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।”

এ বছর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবকরা ১১৭০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সৈকত থেকে অপসারণ করেন। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান
সেন্ট মার্টিনের বালিকা মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়াও এসেছেন সৈকত পরিচ্ছন্ন করার এই অভিযানে। প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “মানুষকে এখানে জায়গায় জায়গায় পরিস্কার রাখার জন্যে ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে না ফেলে এখানে কেন ফেলায়? এটা আসলে আমার ভালো লাগে না।

“তাদের উচিত, জায়গামতো ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেলবে। অথবা নিজেদের কাছে একটা পলিথিন নিয়ে জমা করে সামনে কোনো ডাস্টবিন পেলে সেখানে ফেলে দেবে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অনুষ্ঠিত এবারের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালিত হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

ময়লা সংগ্রহের অভিযানে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক নাবিল চৌধুরী বলেন, “আমরা যেটা দেখতে পারি যে, এখানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস বেশি ফেলা হয়। তোলার সময় আমরা সবচেয়ে বেশি সিগারেটের পেছনের অংশ দেখেছি।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অনুষ্ঠিত এবারের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালিত হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে।সেন্ট মার্টিনের চেয়ারম্যান নূর আহমদও অংশ নেন এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে।


পরে তিনি বলেন, “প্রতি মাসে আমরা ১ বার করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান করি। কিন্তু পর্যটক বেশি হওয়ার কারণে আমরা হিমশিম খাই। পরিচ্ছন্ন করতে পারি না। “এখানে একটু হাঁটলেই ডাস্টবিন আছে, কিন্তু মানুষ এলোমেলোভাবে ময়লা ফেলে যায়। ডাস্টবিনে ফেলে না।”

তিনি বলেন, “দৈনিক ৫-৬ হাজার মানুষ আসে। বলতে গেলে তাদের ৮০ ভাগই অসচেতন। তাদেরকে কীভাবে সচেতন করা যায়-সেটা আমাদেরকে ভাবতে হবে।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত