25 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৯:২৩ | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
শুকিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার দীর্ঘতম নদী পারানা
আন্তর্জাতিক পরিবেশ

শুকিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার দীর্ঘতম নদী পারানা

শুকিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার দীর্ঘতম নদী পারানা

দক্ষিণ আমেরিকায় আমাজনের পর দীর্ঘতম এই জলধারা আগে সেকেন্ডে ১৭ হাজার কিউবিক মিটার পানি পরিবহন করত, তা এখন নেমে এসেছে ৬ হাজার ২০০ মিটারে।

ব্রাজিলীয় আদিবাসীদের ভাষায় পারানা মানে হল ‘সাগরের মতো’। নদীটির বিশালত্বই তাকে এই নাম দিয়েছিল। কিন্তু এখন নদীটিতে পানির ধারা হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ, তীরজুড়ে তৈরি হয়েছে বালুচরা। ফলে বাণিজ্যিক নৌচলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মাছ কমে যাওয়ায় জেলেদের মধ্যে হাহাকার। আর ৪ কোটি মানুষ তাদের বিশুদ্ধ পানির উৎস নিয়েও পড়েছে দুঃশ্চিন্তায়।



পারানা নদীতে প্রবাহ কমে যাওয়ায় এর সংলগ্ন খালগুলো এখন পানিশূন্য। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রভাব যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, পারানা নদীটির বর্তমান অবস্থা তার বড় উদাহরণ হিসেবে দেখাচ্ছেন গবেষকরা। সম্প্রতি খরার কারণে উত্তর আমেরিকার কলোরাডো নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়াও একই রকম উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।

ব্রাজিল থেকে উৎপত্তির পর প্যারাগুয়ে হয়ে আর্জেন্টিনার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলন্টিক মহাসাগরে শেষ হয়েছে পারানা নদীটি। এর দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৪৮০ কিলোমিটার। মহাদেশটিতে এর চেয়ে দীর্ঘ নদী কেবল আমাজন, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার। পারানা নদী শুকিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, বন ধ্বংস আর জলবায়ু পরিবর্তন নদীটিতে এই খরার কারণ। ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চল, যেখানে পারানা নদীর জন্ম, সেখানে এবার গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফল হিসেবে পারানাতে জলপ্রবাহ এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। পারানার এই খরা পরিস্থিতি ২০২২ সাল নাগাদ চলতে পারে বলে পরিবেশবিদরা আভাস দিয়েছে।

তিনটি দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পারানা আর প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে নামে আরও দুটি নদীর সঙ্গে মিলে যে অববাহিকা তৈরি করেছে, তার নাম রিও দে লা প্লাতা। আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে দেশ তিনটি এই অববাহিকারই অংশ।

ভূতত্ত্ববিদ কার্লোস রামোনেল বলেন, “পানামা আর্জেন্টিনার দীর্ঘতম নদীই কেবল নয়, এটি জীববৈচিত্র্যের এক বড় আধার। তাছাড়া দেশটির আর্থসামাজিক অবকাঠামোর জন্যও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” পারানায় পানি কমে যাওয়ায় আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে উভয় দেশেরেই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করছে।



আর্জেন্টিনার অর্থনীতির প্রাণ এই নদী দেশটির পণ্য পরিবহনে প্রধান জলপথ ছিলো। কিন্তু পানি কমে যাওয়ায় জাহাজগুলোর তলা মাটিতে লেগে যাচ্ছে বলে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক নিয়ে এখন চলতে হচ্ছে। আর্জেন্টিনার ৮০ ভাগ পণ্য পরিবহন হত এই নদী দিয়ে। পণ্য পরিবহনে এখন বাধ্য হয়ে স্থলপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে, যার ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে বাড়িয়ে দিচ্ছে পণ্যের দাম।

পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে মাছ, ফলে বিশাল এই নদী ঘিরে থাকা মৎস্যজীবীরা পড়েছে জীবিকার সঙ্কটে। আর্জেন্টিনা কিংবা প্যারাগুয়েই শুধু নয়, পারানা নদীর এই সঙ্কট ভোগাবে সারা বিশ্বকেও।

বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে দুটি হল এই দেশ দুটি। পারানায় খরা এই কৃষিপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি তা সান্তা ফের মতো বন্দরে নিয়ে যাওয়াও সঙ্কটাপন্ন করে তুলেছে। করোনাভাইরাস মহামারীর খাঁড়ার মধ্যে নদীর এই সঙ্কটে আর্জেন্টিনা সরকার দেশবাসীকে পানির ব্যবহার সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত