শাবিপ্রবিতে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই ৪টি গাছ কেটে ফেলা হলো
‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কারণ দেখিয়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চারটি গাছ কেটে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার-সংলগ্ন সড়কের পাশে থাকা এসব গাছ কাটা হয়। তবে এসব গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পরিবেশন-সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, গাছ ঝুঁকিপূর্ণ হলে কর্তনের জন্য বন বিভাগের অনুমতি নিতে হয়।
বিষয়টি লিখিতভাবে বন বিভাগকে অবহিত করলে, সেটা সরেজমিনে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে গাছগুলো কর্তনের উপযোগী কি না, তা যাচাই করা হয়। তবে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছ থেকে গাছ কাটার কোনো অনুমতি নেননি বলে তিনি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝড়ে ভেঙে পড়তে পারে, এমন ঝুঁকিপূর্ণ ডালাপালা কাটার উদ্যোগ সম্প্রতি নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন ধরে এমন কিছু ডালাপালা কর্তনও করা হয়। এর মধ্যে আজ বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল-সংলগ্ন সড়কের পাশে থাকা ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী চারটি একাশিয়া গাছ কেটে ফেলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজন শিক্ষার্থী বলেন, বৈশাখী ঝড়ের কারণে ঝুঁকি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিলো সড়কের বেশ কিছু গাছের ডালপালা ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে আজ যে চারটি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, তাতে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, মেডিকেলের পাশেই বাস্কেটবল গ্রাউন্ড। এখানে খেলা চলাকালে শিক্ষার্থীরা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করতেন। এসব গাছ কেটে ফেলায় এখন খেলা দেখতে রোদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হবে।
গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূসম্পত্তি শাখার প্রধান ও ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক রোমেল আহমদ বলেন, ক্যাম্পাসে প্রচুর গাছ আছে।
এর মধ্যে অসংখ্য বয়স্ক গাছ, অনেক দুর্বল গাছ আছে। প্রতি বৈশাখ মাসেই ঝড়ে অনেক গাছ পড়ে যায়। তাই সত্যিকার অর্থেই যদি কোনো গাছ বা ডালপালা ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তখন কাটতে হয়। কিছুদিন আগে ঝড়ে অনেক গাছ রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল।
তখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুপারিশের কারণেই শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ঝুঁকি এড়াতে গাছের ডালাপালা ছাঁটাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে যেসব গাছ কাটা হয়েছে, সেগুলো অর্ধমৃত। গাছের ভেতরে ফাঁপা হয়ে গেছে, ডালপালা নরম হয়ে গেছে। হাজার হাজার গাছের মধ্যে চারটি গাছ কাটা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনাতেই।
বন বিভাগের অনুমতির বিষয়ে রোমেল আহমদ বলেন, ‘আমরা পরিবেশ সচেতন, তাই যেসব গাছ কাটা হয়েছে, এর বিপরীতে অনেকগুলো গাছ রোপণ করা হবে।
তবে জরুরি হওয়ায় বন বিভাগের কাছে লিখিত অনুমতি চাওয়া হয়নি।’ তবে বিষয়টি বন বিভাগকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।