রংপুর নগরীর বিভিন্ন জায়গায় খোলা স্থানে অবাধে জমছে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে মহাসড়কগুলোর পার্শ্বে ময়লার পরিমাণ বেশী। এছাড়াও অনেক স্থানে হাসপাতালের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব দূষণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুরবাসী।একটি বেসরকারী সংস্থার জরিপ অনুযায়ী বায়ু দূষণে ঢাকার চেয়েও বেশী ক্ষতিকর রংপুর হওয়ায় অনেকেই এসব বিষয় নিয়ে আতঙ্কিত।
নগরীর সাতমাথা এলাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে সামনের দিকে এগুতে থাকলেই র্দুগন্ধে অতিষ্ট হয়ে যায় সড়কে চলাচলকারী স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা।
এলাকাবাসী জানান, এখানে ময়লা ফেলার কারণে সড়কের পার্শ্বে থাকা অনেক গাছ ইতিমধ্যে মরে গেছে। র্দুগন্ধের কারণে সড়কের পার্শ্বে থাকা অনেক ছোটখাট দোকানীরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। স্থানীয় চা দোকানী আজিজুল ইসলাম জানান, আগে আমি সড়কের পার্শ্বে ভাত বিক্রি করতাম। ময়লা ফেলার কারণে এত পরিমাণ মাছি ও র্দুগন্ধের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় ভাত বিক্রি বন্ধ করে শুধুমাত্র চা বিক্রি করি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর ধাপ এলাকায় মেডিকেল চত্বরের বাইরের দেয়াল ঘেষে অসংখ্য ময়লার স্তুপ। দুর্গন্ধে নাক বন্ধ করে পথ চলাও দায়। বিষয়গুলো বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন পরিবেশ অধিদপ্তরের অধীনে জৈব সার তৈরির প্লান্ট নগরীর নাছনিয়া এলাকায় তৈরি করেন।
নগরীর নাছনিয়া এলাকার জৈব সার কেন্দ্রের ম্যানেজার রোকসানা বেগম জানান, এখানে ১২ জন মহিলা কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। তারা গাড়ির ময়লাগুলো আগে বাছাই করেন। পলিথিন, টিন এসব আলাদা করেন। এরপরে মেশিনে দিয়ে ময়লাগুলোকে জৈব সারে রুপান্তরিত করা হয়। আমরা প্রথম যখন কাজ শুরু করি তখন কাজ করাই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। পরে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে র্দুগন্ধ কমানো হয়। এখন এখানে ময়লা ফেলানো বন্ধ রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন আলাদাভাবে কলাবাড়ি এলাকায় ময়লা ফেলছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মালেক নিয়াজ আরজু জানান, আগে নাছনিয়া এলাকায় ময়লা ফেলা হতো এখন সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব স্থানে প্রায় ৮ একর জমির মাঝে পুকুর করে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও গন্ধ যেন বেশী না হয় সেজন্য বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হবে।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার জানান, আসলে ময়লা আর্বজনা অবশ্যই দূষণীয় বস্তু। এসব ময়লার কারণে বায়ু দূষনের মাত্রা বেড়ে যায়। রংপুর সিটি কর্পোরেশন ময়লা আর্বজনা দিয়ে জৈব সার তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এগুলো শোধন করলে দূষণ কিছুটা কমবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. সুলতান হোসেন বলেন, বসতবাড়ির ময়লার চেয়ে ক্লিনিক্যালী ময়লা আর্বজনা খুবই ক্ষতিকর। এগুলো ফেলে রাখা স্বাস্থ্যের জন্য শুভকর নয়। আমরা রসিকের সাথে ময়লা আর্বজনা অপসারণের কাজ করছি। সিটি কর্পোরেশন ময়লাগুলো নিয়ে গিয়ে তাদের নির্ধারিত স্থানে শোধন করছে। আসলে কেবল কাজ শুরু হয়েছে একটু নিয়মের মধ্যে আসলেই উটকো সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।