ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছিলো তুরস্ক বৃষ্টি আশীর্বাদে বাঁচল তুরস্ক তবে এখনও থামেনি গ্রিসে
দাও দাও করে জ্বলছে দক্ষিণ ইউরোপ। তুরস্ক থেকে গ্রিস, দাবানলে পুড়ছে দক্ষিণ ইউরোপের একাধিক দেশ।
গত ১৩ দিন ধরে দাবানলের আগুনে পুড়ছিল তুরস্ক। কিন্তু হঠাৎই দেশটিকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে আশীর্বাদ হয়ে আসা বৃষ্টি। শনিবার দেশটিতে নেমে আসা ভারি বর্ষণে আগুনের ভয়াবহতা থেকে আপাতত রেহাই পেয়েছে তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অধিবাসীরা।
এর আগে দাবানল থেকে সৃষ্ট আগুন নেভাতে সচেষ্ট ছিল দেশটির দমকল বাহিনী। দেশটিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিবেশী ইরান, আজারবাইজান, ইউক্রেন, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তুরস্কের ৮১ প্রদেশের ৪৭টিতেই ২০০ দাবানলের আগুন ছড়িয়েছিল।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রিস। ঘরছাড়া কয়েক হাজার বাসিন্দা। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। তাঁদের মধ্যে রয়েছে একজন দমকলকর্মী। ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বহু মানুষ।
গ্রিসে (Grece) চলছে দাবদাহ। যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। এমন পরিস্থিতিতে তুরস্কের পর গ্রিসেও ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ দাবানল। শনিবার রাত থেকে ভয়াবহ আকার ধারণ করে এই দাবানল।
দ্রুত এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে স্থানীয়দের। সহায়সম্বলহীন অবস্থায় ঘর ছাড়ছেন তাঁরা। শনিবার রাতেই ২০০ জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত কয়েকদিনে গ্রিসে মোট ১৫৪টি দাবানল শুরু হয়েছে। এগুলির মধ্যে ৬৪টি নেভানোর চেষ্টায় রয়েছে গ্রিস। অনেক এলাকা থেকেই মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয়েছে হেলিকপ্টার এবং বিমান।
ইতিমধ্যে ৩০০ দমকল, ৩৫টি ফায়ার ট্রাক, দশটি বিমান মিলেও আগুন নেভাতে পারছে না। উদ্ধার কাজে নেমেছে সে দেশের সেনারা। এই পরিস্থিতির জেরে বর্তমানে গ্রিসের গড় তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। ১৯৮৭ সালের পর থেকে সেখানে এত গরম আগে কখনও পড়েনি।
দাবানলের প্রভাবে পুড়ছে দক্ষিণ ইউরোপ। ইটালির সিসিলিতে প্রথম দাবানল শুরু হয়। এখন সেই দাবানল ইটালির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। শত চেষ্টা করে কোনভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে পুরো বন। ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি। হাজার-হাজার মানুষ পালাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। এর মধ্যে তুরস্কের ৩০টি অঞ্চলে ১৩৭টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১১টি বড় আগুন এখনও জ্বলছে।
আজকের সর্বশেষ আপডেট হচ্ছে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করার জন্য গ্রিসে দুটি অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠাচ্ছে তুরস্ক। ইতোমধ্যে গ্রিস আগুন নেভাতে সহায়তা চাওয়ার পর ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ২০টির বেশি দেশ থেকে প্লেন, হেলিকপ্টার, অগ্নিনির্বাপক গাড়ি এবং জনবল পাঠিয়েছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।