38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৯:১৩ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশ দূষণ

ভাটার কারণে ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ধুলাউড়ি গ্রাম। গ্রামটিতে এখন ঝড়ে যাচ্ছে আম, লিচু, পেয়ারা ও ডাবের গুটি। নষ্ট হচ্ছে শাকসবজি ও ফসলের জমি। মাঝে মধ্যেই মারা যাচ্ছে কবুতরসহ গৃহপালিত হাঁস-মুরগি। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

এর সবকিছুর পেছনে দায়ী একটি ইটভাটা। আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন গড়ে ওঠা এই ইটভাটা থেকে নির্গত গরম বাতাস ও ধোঁয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়গুলো উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। মাঠের ফসল ও জনজীবন রক্ষায় অবিলম্বে ইটভাটাটি উচ্ছেদের দাবি করেছেন তাঁরা।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ফলফলাদির গাছ ও সবুজ ফসলের মাঠ নিয়ে ধুলাউড়ি গ্রাম। গ্রামটিতে প্রায় ৩০০ পরিবার বসবাস করে।

এর মধ্যেই প্রায় নয় বছর আগে আবদুল খালেক নামে এক ব্যক্তি যৌথ মালিকানায় গ্রামের মাঝে সিটিবি নামে একটি ইটভাটা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। শুরুতেই গ্রামের বাসিন্দারা এতে বাধা দেন। কিন্তু তিনি এসব তোয়াক্কা না করেই ভাটাটি স্থাপন করেন। এরপর ভাটায় ইট পোড়ানো শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে থাকে।

কাঠ পোড়ানোর কারণে ভাটা থেকে সারাক্ষণ কালো ধোঁয়া বের হয়। এতে মাঠের ফসল ও গাছপালা ক্ষতির মুখে পড়তে থাকে। এ ছাড়া প্রতি বছর অন্তত একবার এই ভাটায় জমে থাকা গরম বাতাস নির্গত করা হয়।

নির্গত এই বাতাস যেদিন প্রবাহিত হয়, সেদিকে গাছের ফল, ফসল ও গবাদিপশু মারা যায়। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ইট পোড়ানো কালো ধোঁয়ার পাশাপাশি প্রতিবছর একবার এই ভাটা থেকে গরম বাতাস নির্গত করা হয়।

চলতি মৌসুমে  দুই সপ্তাহ আগে এই গরম বাতাস নির্গত করা হয়েছে। এই বাতাস যেখান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, সেখান দিয়ে গাছপালার পাতা পুড়ে কালো হয়েছে। নষ্ট হয়ে গাছে গাছে থাকা আম, লিচু, ডালিম, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফল। নষ্ট হয়ে গেছে শাকসবজিসহ বেশ কিছু ফসল।

১৭ মে সকালে সরেজমিন ভাটা এলাকা ঘুরে দেখা মিলেছে এমনই চিত্র। বর্তমানে ইটভাটাটি বন্ধ থাকলেও ক্ষত চিহ্নগুলো এখনো দৃশ্যমান। গাছে গাছে ঝুলে থাকা কাঁচা আমগুলো নিচ থেকে ঝলসে গেছে। পুড়ে যাওয়ার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কলার গাছ।



যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ফসলি জমিতে ভাটা তৈরি করতে হলে কৃষি বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু কোনো অনুমোদন ছাড়াই নয় বছর ধরে এই ইটভাটাটি চলছে।

এই ভাটার কারণে ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিন ঘুরে প্রতিটি বিষয়ের সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

তবে ইটভাটার মালিকদের একজন আবদুল খালেক গ্রামবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বৈধ কাগজপত্র নিয়েই ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ভাটার কারণে নয়, আবহাওয়াজনিত কারণে ফল-ফসলের ক্ষতি হতে পারে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জাতীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য এস এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘আবাসিক এলাকা ও তিনফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। ইট ভাটাটির ধোঁয়া ও গরম বাতাসে আশপাশের বহু ফসল নষ্ট হয়েছে।

মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর পরেও স্থানীয় প্রশাসন এটা দেখছেন না। এটা দুঃখজনক। জীবন ও জীবিকার স্বার্থে আমরা প্রশাসনকে নির্মোহ থেকে ভাটাটি উচ্ছেদের দাবি করছি।’

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমোদন পেলেই অভিযান চালানো হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ভাটাটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: প্রথম আলো

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত