বিলুপ্তির পথে উদয়ী বামন মাছরাঙা
উদয়ী বামন মাছরাঙা। এটি অদ্ভুত সুন্দর একটি পাখি। এরা আকারে চড়ুই পাখির মতো। নীলচে ডানা এবং লালচে দেহ হয় এদের। মাথা, মাথার চাঁদি, ঘাড় ও পেট কমলা রঙের হয়ে থাকে।
ডানার পালক কালচে নীল, গলা সাদা। মাছরাঙা প্রজাতির মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এবং বিরল প্রজাতির মাছরাঙা এটি। বাংলাদেশে খুবই কম দেখা মেলে এদের।
ডা. সুমন বলেন, এটি প্রাচ্যের বামন কিংফিশার অথবা তিন পায়ের কিংফিশার নামে পরিচিত আলসেডিনিডে পরিবারের একটি পকেট আকারের পাখি। এরা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে নিম্নভূমির বনে সাধারণত জলাশয় বা পুকুরের কাছাকাছি বাস করে।
সেখানে পোকামাকড়, মাকড়সা, কীট, কাঁকড়া, মাছ, ব্যাঙ, এবং টিকটিকি খেয়ে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙাপুর, শ্রীলঙ্কা এবং ভিয়েতনামে এদের পাওয়া যায়।
ছোট্ট এ মাছরাঙার ছবিটি তুলতে দীর্ঘ পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে ডা. সুমন বলেন, আদমপুর জঙ্গলের দুর্গম এলাকায় উদয়ী বামন মাছরাঙার বসবাসের খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। ছবিটি তুলতে পাঁচ ঘণ্টা লেগেছে।
মাছরাঙাটি এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করছিল। হঠাৎ জলের ধারে আসছিল, আবার চলে যাচ্ছিল। তার গতিবিধি লক্ষ্য করতে আমাকেও অসংখ্যবার জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছে। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় অবশেষে ছবিটি তুলতে পেরেছি।
তিনি বলেন, উদয়ী বামন মাছরাঙা প্রজননের সময় তিন থেকে সাতটি ডিম দিয়ে থাকে। একদিনের ব্যবধানেই এ ডিমগুলো পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার সময়কাল ১৭-১৮ দিন।
তবে এ সময় স্ত্রীদের ভূমিকা বেশি থাকে, কারণ সে রাতে ডিম ফোটানোর দায়িত্বে থাকে। ডিম থেকে বের হওয়ার ১৮ থেকে ২০ দিন পর ছানার পালক গজায়। এ সময়কালের পর সাধারণত ভোরবেলা ছানাগুলো বাসা থেকে বের হতে শুরু করে।