বায়ু দূষণের উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ
সোমবার আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় পরিবেশ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি বায়ু দূষণের উৎস চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
সভায় পরিবেশ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “আমাদেরকে সঠিক গবেষণার মাধ্যমে বায়ু দূষণের তথ্য-উপাত্ত নির্নয় ও গভীর পর্যবেক্ষন করা প্রয়োজন । তা করতে না পারলে মূল সমস্যা চিহ্নিত করত তার সমাধানকল্পে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
“ দূষিত বায়ুর উৎসটা কি সেটা ১ম চিহ্নিত করুন এবং তারপরে তার সমাধন কল্পে ঝাপ দিন- এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমাদের এগোতে হবে। ”
আলোচনাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) ও কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন)।
নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ এর খসড়া ইতোমধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এবং সর্বসাধারণের অবগতি ও মতামতের জন্য দরজা খোলা রেখেছে ।
জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে না উঠলেও শীতকালীন অধিবেশনে আইনটি ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংসদ সাবের।
তিনি বলেন, কেবল খোলা জায়গার বা দৃশ্যের সামনে নয়, কল-কারখানার মতো অভ্যন্তরীণ যেসব জায়গায় বায়ু দূষণ হয় তাও চিহ্নিত করা দরকার।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “এটা যেহেতু জনস্বাস্থ্য ইস্যু, সেহেতু আইনটাকে যত সহজ করা সম্ভব তা করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছেও পঠনযোগ্য, বোধগম্য ও পালনযোগ্য হওয়া দরকার পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে আলোচনা সভায় উল্লেখ করেন ।”
বায়ু দূষণের কারণে মৃতের সংখ্যা মনিটরিংয়ের কোন ব্যাবস্থা নেই, সুতরাং এই ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও আলোচনা সভায় সুপারিশ করেন তিনি কেননা এর ফলে বায়ু দূষণের কারণে মৃতের অবস্থা আমাদের সামনে প্রকাশ হয় এবং আমরা আরো সচেতন হতে পারি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে খসড়া আইনের কিছু ঘাটতির বিষয় তুলে ধরে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “গণপরিবহনের দূষন এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গণপরিবহনকে কীভাবে ক্রীয়াশীল ও পরিবেশবান্ধব করা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা নাই। জ্বালানির বিষয়ও আছে। জ্বালানির মান তো ইউরোপীয় মান থেকে অনেক পিছিয়ে এবং তা উন্নত করনের কোন পদক্ষেপ নেই।”
তিনি বলেন, “২০৩১ সালের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও একশো পঞ্চাশ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হবে বলে পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। সরকার কীভাবে এসব সৃষ্ট অবস্থার মোকাবেলা করবে সেটি আমাদের দেখার বিষয়।”
নির্মল বায়ু আইনে দূষণ রোধে স্থানীয় সরকার, বিভিন্ন সরকারী, আধা সরকারী ও ব্যক্তি সংস্থাগুলোকেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সংযুক্ত করারও সভায় সুপারিশ করেন রিজওয়ানা হাসান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেস বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর।
অন্যদের মধ্যে ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ঋত্বিক দত্ত ও ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী এ সময় বক্তব্য দেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম