রাজধানী ঢাকার বায়ু যথেষ্ট অস্বাস্থ্যকর। গত বছর থেকে শুরু হয়ে এখন অব্দি বায়ুমান পর্যবেক্ষণ একিউআই সূচকে বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের মধ্যে ঢাকা বারবার শীর্ষে উঠে এসেছে। আর এতেই প্রমাণিত হয় রাজধানী ঢাকার মান কতটা অস্বাস্থ্যকর।সম্প্রতি সরকার এ ব্যাপারে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বর্তমানে মেট্রোরেল প্রকল্পের কারণে রাজধানীর বাতাস ধূলিকণায় ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়ে আছে। এতে রাস্তায় চলাফেরা করা খুবই কষ্টকর হয়ে উঠছে পথচারীদের। সেই সাথে এসব ধূলিকণা পথচারীদের নাকে, মুখে চোখে প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগব্যাধির সৃষ্টি করছে। আবার এই মেগা প্রকল্পের কারণে রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তাঘাট কেটে রাখা হয়েছে।এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে রাজধানীবাসী।
এদিকে খোদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ঢাকার বায়ুর মানের অবনতির জন্য অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন মেগা প্রকল্প নির্মাণকে। এ ছাড়া শহরের আশপাশে ইটভাটাকেও তিনি দায়ী করেছেন।
মেগা প্রকল্প নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় তাদের কাজ পুরোপুরি সম্পাদনের জন্য ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে।যদিও এর আগে একাধিকবার মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হযেছে তবুও নির্মাণকাজের ফলে সৃষ্ট বায়ুদূষণ হ্রাস করার নির্দেশনা তারা অনুসরণ করছে না।
তিনি বলেন, ‘বায়ুদূষণ কমাতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আরও বেশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।আদালতের আদেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের জনশক্তি বৃদ্ধি করছি এবং এখন আরও বেশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।বায়ুদূষণ রোধে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর ও শিল্পঘন শহরে সার্বক্ষণিক বায়ুর গুণগত মান পরিমাপের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায় যে, সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।’
ইটভাটার জন্য ঢাকার চারপাশে ৫৮ ভাগ বায়ুদূষণ হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটাগুলোকে আইনের আওতায় এনে সেগুলোকে জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উন্নত প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত করার কাজ শুরু করেছে। এথন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ ইটভাটা পরিবেশবান্ধব আধুনিক প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আর এটিকে ১০০ ভাগে উন্নীত করা হবে। ২০২৫ সালের পর বেসরকারিভাবে সব অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার বাস্তবায়ন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে পরিবেশদূষণের দায়ে ১ হাজার ৬৯৫টি (প্রতিষ্ঠান/প্রকল্প/ব্যক্তির) বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করে ২০ কোটি ২২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। একই সময়ে পরিবেশগত বিভিন্ন দূষনের অপরাধের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা ও চরশ’ত ৫৯টি অবৈধ ইটভাটা আংশিকভাবে ভেঙে ফেলা দেয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির সাথে এসব সাক্ষাৎকারে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।