24 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ১১:১৬ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জীববৈচিত্র্য

বালিহাঁসের প্রাকৃতিক প্রজননস্থলের বিকল্প হিসেবে কাঠের বাসা, ফুটেছে বাচ্চা

প্রাকৃতিক জলাশয়, জলাশয়সংলগ্ন বড় গাছ এবং জলাশয়ের কাছাকাছি পুরোনা স্থাপনা কমে যাওয়ায় বালিহাঁসের প্রাকৃতিক প্রজননস্থল কমে গেছে। এতে বালিহাঁসের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। বালিহাঁসের সংখ্যাও অনেক কমে গেছে।

বালিহাঁসের প্রাকৃতিক প্রজননস্থলের বিকল্প হিসেবে মৌলভীবাজারের হাইল হাওরে পাখি ও মাছের অভয়াশ্রম বাইক্কাবিল এলাকায় কৃত্রিম কাঠের বাসা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই এসব বাসায় বালিহাঁস ডিম পাড়ছে। তা থেকে ছানা ফুটছে। ছানারা নিরাপদেই বড় হয়ে বিলের জলে নেমে পড়ছে। এবারও প্রজনন মৌসুমের শুরুতেই অন্তত ছয়টি বাসায় ডিম পেড়েছে বালিহাঁস। একটি থেকে এরই মধ্যে ছানা ফুটে বেরিয়ে গেছে।

বাইক্কাবিলের পর্যবেক্ষণে থাকা বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডি (সিএনআরএস) সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি সংস্থা ম্যানেজমেন্ট অব অ্যাকুয়াটিক সিস্টেম থ্রো কমিউনিটি হাজবেনট্রি (ম্যাচ) প্রকল্পে পরীক্ষামূলক হাইল হাওরের বাইক্কাবিল এলাকায় ২০০৬ সালে প্রথম ১০ থেকে ২০ ফুট উঁচু ১০টি পাকা খুঁটির সঙ্গে ১০টি কাঠের বাক্স স্থাপন করা হয়, যাতে এসব বাক্সে বালিহাঁস বাসা বানাতে পারে। কিন্তু সে বছর বালিহাঁস ওই সব বাক্সে আশ্রয় নেয়নি। তবে পরের বছর ২০০৭ সালে প্রথম দেখা যায়, তিন-চারটি বাক্সে বালিহাঁস বাসা বুনেছে। পরে ডিম পেড়েছে এবং বাচ্চাও ফুটিয়েছে। বাচ্চাগুলো লাফিয়ে নেমে গেছে বাইক্কাবিলের জলে। সেই থেকে প্রজননের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত হওয়ায় প্রতিবছরই কিছু না কিছু কৃত্রিম কাঠের বাসায় বালিহাঁস ডিম দিয়েছে। এ রকম কৃত্রিম বাসায় বালিহাঁসের ডিম পাড়ার জন্য দেশে এটিই একমাত্র স্থান। সিএনআরএস এই কৃত্রিম বাসাগুলোর তত্ত্বাবধান, পরিচর্যা, নতুন বাক্স স্থাপন এবং নিরাপদে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।

সিএনআরএসের পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে খুঁটি আছে ৩০টি। কিন্তু সব খুঁটিতে কাঠের বাক্স স্থাপন করা হয়নি। এবার ২৮টি বাক্স বসানো হয়েছে। এই বাক্সের মধ্যে ২৫টি কাঠের এবং ৩টি পাকা। এই ২৮ বাক্সের মধ্যে ১৫টি বসানো হয়েছে পাকা খুঁটিতে। আর ১৩টি বাক্স বসানো হয়েছে গাছের ডালে। এ বছর ২৫টি বাক্সই নতুন করে বানানো হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। বালিহাঁসের ডিম পাড়ার মৌসুম হচ্ছে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। কখনো কখনো অক্টোবর পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। প্রজনন মৌসুমের শুরুতেই ৩ আগস্ট পর্যন্ত বাইক্কাবিলের কৃত্রিম বাসার ছয়টিতে বালিহাঁসকে ডিম পাড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি থেকে ছানা ফুটে বেরিয়ে গেছে। ঘন ঘন বাসা পর্যবেক্ষণ করলে অনেক সময় ডিম ফোটানো ব্যাহত হয়। এ কারণে ১৫ থেকে ২০ দিন পর একবার বাসাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া এবার বাসা এলাকায় প্রচুর সাপের দেখা মিলছে। তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণে ঝুঁকিও আছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, অন্যান্য বাক্সতেও বালিহাঁস ডিম পাড়তে পারে। এখনো প্রজননের অনেক সময় বাকি আছে। বালিহাঁস মূলত প্রাকৃতিক জলাশয়সংলগ্ন বড় গাছের কোটর, গর্ত বা পুরোনো দালানকোঠায় ডিম পাড়ে, যাতে ডিম ফোটে বাচ্চাগুলো সহজেই পানিতে নেমে যেতে পারে। পাখিসহ জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল সব জীবের আশ্রয় এই বিল।

সিএনআরএস শ্রীমঙ্গলের সাইট অফিসার মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার নতুন করে ২৫টি বাক্স বানিয়েছি। প্রায় প্রতিবছরই কিছু না কিছু নতুন বাক্স বানিয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় পাকা খুঁটিতে বালিহাঁস বাসা করে না। তাই এবার ১৩টি বাক্স গাছের ডালে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়টি বাসায় ডিম পেড়েছে। একটি থেকে বাচ্চা বেরিয়ে গেছে। আমরা ১৫-২০ দিন পরপর একবার বাসা পর্যবেক্ষণ করি। প্রচুর সাপ এবার। আশা করছি আরও কৃত্রিম বাসায় ডিম পাড়বে।’ সূত্র: প্রথম আলো

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত