27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৮:০১ | ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
বাংলা শকুন এখন বিলুপ্তির পথে
জীববৈচিত্র্য

বাংলা শকুন এখন বিলুপ্তির পথে

বাংলা শকুন এখন বিলুপ্তির পথে

দেশে ‘প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী’ টিকে আছে ১৭০টির মতো বাংলাদেশের মহাবিপদাপন্ন প্রাণী ‘বাংলা শকুন’। প্রকৃতি তার প্রয়োজনে সৃষ্টি করেছে অনেক কিছুই। সেগুলো আপনা থেকেই প্রকৃতির উপকার সাধন করছে।

নীরবে দান করে চলেছে মানব সমাজে বসবাসের নানান সুবিধা, নিরাপত্তা। কিন্তু হায়! একমাত্র ‘মানুষ’ই সেই প্রকৃতির অমূল্য অংশটিকে নানাভাবে হত্যা করে নিজেদের প্রতিবেশব্যবস্থাকে নষ্ট করেছে। বিপন্ন করে তুলেছে নিজেদের বসবাস।

একমাত্র ‘মানুষ’ই তার নিজের স্বার্থে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নিজেদের বিপদ ডেকে আনে। বোধজ্ঞানহীন স্বার্থান্বেষী সেই সব মানুষের দল এখন বুঝতে পারছে পরিবেশ এবং প্রকৃতির উপাদানগুলোর এভাবে ক্ষতিসাধন করা ঠিক হয়নি। অনুশোচনায় অনুধাবণ করতে পারছে- প্রকৃতিকে আবার বাঁচানোর দরকার!

মানবকূলের দ্বারা ধ্বংসকৃত প্রকৃতির সেই অমূল্য এক অংশের নাম- ‘বাংলা শকুন’। White-ramped Vulture এ প্রাণীটির ইংরেজি নাম। প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলা হয় তাদের। কেননা, প্রকৃতির সব বাসি, পচা, দুর্গন্ধযুক্ত মরা প্রাণীদের দেহ ওরাই খেয়ে পরিষ্কার করে ফেলে। রোগমুক্ত রাখে মানুষ এবং সমাজকে। ১৯৯০ সাল থেকে সমগ্র উপমহাদেশে বাংলা শকুনসহ অন্যান্য শকুন অতিদ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। উপমহাদেশের প্রায় ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ বাংলা শকুন এখন বিলুপ্ত এবং ‘আইইউসিএন’ এই প্রজাতিটিকে বিশ্বে ‘মহাবিপদাপন্ন প্রাণী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে শকুনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। গবাদি পশু চিকিৎসায় ব্যবহৃত ‘ডাইক্লোফেনাক’ ও ‘কিটোপ্রোফন’ ইঞ্জেকশন শকুন মৃত্যুর প্রধান কারণ।



যেসব গৃহপালিত গরুকে ওই দুটো ইঞ্জেকশন পুষ করা হয় পরবর্তীতের সে গরুগুলো সুস্থ না হয়ে মারা গেলে তার মাংস শকুনরা খেয়ে ভয়ংকরভাবে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে থাকে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার ওই দুটো ইঞ্জেকশন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শকুন আমাদের দেশের মহাবিপদাপন্ন প্রাণী। বাংলাদেশে আসলে শকুন বেশি নেই। তাদের বসবাসের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল মাত্র দুটো আছে। একটা আমাদের সিলেটের রেমাকালেঙ্গা অঞ্চল, এখানেই সবচেয়ে বেশি আছে, আর দ্বিতীয় স্থানটি হলো খুলনার সুন্দরবনে। আমাদের বৃহত্তর সিলেট প্রায় ১০০টা শকুন রয়েছে। আর সুন্দরবনসহ ওই এলাকায় সবমিলিয়ে আরো প্রায় ৬০টা বা ৭০টা হবে। সর্বশেষ ২০১৪-২০১৫ সালে ভালচারের (শকুন) ওপর সার্ভে (জরিপ) হয়েছিল বাংলাদেশে। এরপর আর শকুনশুমারি হয়নি। তবে আগামীতে হওয়ার কথা রয়েছে।

এ দুই জায়গা এছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কম সংখ্যায় হয়তো ওরা থাকতে পারে। আমাদের মৌলভীবাজারের দিঘিরপাড়ের পার্শ্ববর্তী স্থানে গত আগস্ট মাসের ২০ তারিখে একটা গরু মারা গিয়েছিল, সেখানে ১৪টা বাংলা শকুন এসে সেই গরুটি খেয়ে গেছে। এটিই খুবই ইতিবাচক একটি দিক হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, মৌলভীবাজারের দেওরাছড়া চা বাগানের জঙ্গলে কয়েকটি বড় বড় চারটা আওয়াল গাছ ছিল। ওই গাছে বাংলা শকুনরা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতো এবং ছানাও তুলতো। কিন্তু ২০১৪ সালে সেই গাছগুলো কেটে ফেলায় শকুনগুলো আশ্রয়হীন হয়ে হারিয়ে যায়। আর ফেরত আসেনি সেখানে। কারণ, ওরা উঁচু এবং বড় গাছকে তাদের আবাসস্থল হিসেবে পছন্দ করে।

‘গাছ কেটে শকুন তাড়ানো’এটি আমাদের পরিবেশের জন্য দারুণ ক্ষতির একটি দিক। শুধুমাত্র পরিবেশ-প্রকৃতির কথা চিন্তা না করে এভাবে বড় বড় বৃক্ষধ্বংস করে আমরাই পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে চলেছি বলে জানান ডিএফও রেজাউল করিম চৌধুরী।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত