জেলার ১২ টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার নিমাঞ্চল এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে টাঙ্গাইলের বানভাসি মানুষের ঈদের আনন্দ। বন্যায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক লাখ পানিবন্দি মানুষ। রাস্তা বা উঁচু জাগায় গিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সেখানেও হানা দিচ্ছে বন্যার পানি। বাধ্য হয়ে পোষা প্রাণীর সঙ্গে গাদাগাদি করে মানবেতর জীবন যাপন করছে পানিবন্দি এসব মানুষ।
যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি কমলেও জেলার অন্যান্য নদীর পানি অব্যাহতভাবে বেড়ে চলছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
জেলার কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে ১১টি উপজেলা। নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। বিভিন্ন উপজেলার পৌর এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া ত্রাণ সহায়তাও পাচ্ছেন না বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এতে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে বাড়ছে দুর্ভোগ। বন্যায় জেলায় এখন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন পৌঁনে ৩ লাখ মানুষ। হুমকির মুখে রয়েছে বিভিন্ন এলাকার রক্ষাবাধ। আর দ্বিতীয় দফার বন্যায় পৌঁনে ১১ হাজার হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে ধলেশ্বরী নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ১৬৭ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে ৮৫ সেন্টিমিটার এবং ফটিকজানীর নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, ১২ টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার নিমাঞ্চল এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা কবলিত উপজেলাগুলো হলো- টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী, ধনবাড়ী, গোপালপুর, বাসাইল, মির্জাপুর, সখীপুর এবং ঘাটাইল। এ ১১ উপজেলার ৮৯টি ইউনিয়নের অন্তত ৭৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে ৬টি পৌরসভা আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ১৩৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৭১ হাজার ৭২০টি। আর পানিবন্দি লোক সংখ্যা ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮০ জন।
সূত্র আরও জানায়, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সম্পূর্ণ কাঁচা রাস্তা এবং আংশিক ৭৩৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে সম্পূর্ণভাবে ১ কিলোমিটার পাকা রাস্তা এবং ১৭৫ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬টি ব্রিজ এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৩৯টি ব্রিজের। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন