গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জেব্রার পরিবারে নতুন অতিথি এসেছে। ২২ সেপ্টেম্বর নতুন অতিথির জন্ম হয়। শাবকটি জন্মের পর থেকে মায়ের সঙ্গে ঘোরাফেরা করছে। বাচ্চা ও মা জেব্রা সুস্থ রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার পার্কের পক্ষ থেকে জেব্রাশাবকের জন্মের তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিকেলে পার্কটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেব্রাশাবকটির জন্ম এক সপ্তাহ আগে হলেও আমরা এটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। পর্যবেক্ষণ শেষে তথ্যটি প্রকাশ করেছি।’
তবিবুর আরও বলেন, করোনার কারণে প্রায় সাত মাস ধরে এ পার্ক বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে জেব্রার পালে ৬টি বাচ্চার জন্ম হয়েছে। পার্ক বন্ধ থাকায় পর্যটক নেই। একদম নির্জন সাফারি পার্কে জেব্রা তাদের অনুকূল পরিবেশ পেয়ে বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে। সদ্যোজাত বাচ্চাটি মাদি। এ নিয়ে পার্কে জেব্রার সংখ্যা দাঁড়াল ২৩। এর মধ্যে ১৩টি স্ত্রী ও ১০টি পুরুষ।
পার্কটির বন্য প্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, বাচ্চাটি জন্মের পর থেকে মায়ের সঙ্গে ঘোরাফেরা করছে। মা জেব্রা বাচ্চাটিকে অন্যান্য জেব্রার কাছ থেকে একটু দূরে রাখতে চেষ্টা করছে। মাঝেমধ্যেই বাচ্চাটি মায়ের দুধ পান করছে।
অপর বন্য প্রাণী পরিদর্শক সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘সদ্যোজাত বাচ্চাটি এখন পর্যন্ত ভালো আছে। আমরা যথাযথ নিয়মে মা ও বাচ্চার তদারকি করছি।’
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান বলেন, ‘করোনাকালে সাফারি পার্কের বিভিন্ন প্রাণী থেকে আমরা অনেকগুলো বাচ্চা পেয়েছি। পার্কে উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে প্রাণীগুলো বাচ্চা দিচ্ছে। শিগগিরই বিভিন্ন প্রাণী থেকে আরও বাচ্চা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এতে ক্রমেই সাফারি পার্ক সমৃদ্ধ হচ্ছে।’
অন্যদিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সাম্বার হরিণ পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। গতকাল সকালে এ মেয়ে শাবক জন্ম নেয়। এ নিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে সাম্বার হরিণের সংখ্যা পাঁচটি। এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জাতের হরিণ। দেশে প্রায় বিলুপ্ত এই হরিণ কেবল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় রয়েছে। এটির গর্ভধারণ কাল ৭ থেকে ৮ মাস। প্রাপ্ত বয়স্ক হয় ৩ বছরে। বেঁচে থাকে ২০ থেকে ২৫ বছর। দুধ পান করে ৬ মাস পর্যন্ত। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘গতকাল সকাল ৮টায় সাম্বার হরিণের মেয়ে শাবকের জন্ম হয়। দেশে প্রায় বিলুপ্ত এই হরিণ কেবল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আছে। বর্তমানে নতুন অতিথিসহ শাবকের সংখ্যা পাঁচটি। এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জাতের হরিণ।’ তিনি বলেন, ‘চিড়িয়াখানার অবয়ব ও সৌন্দর্য এখন অনেক বেড়েছে। করোনার পুরো সময়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে।’ জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানুষের বিনোদন, শিশুদের শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য নগরের খুলশির ফয়েজ লেকের পাশে ৬ একর জমির উপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ইনকিউবেটরে অজগরের ২৬টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানায় রয়েছে দেশের একমাত্র দুর্লভ সাদা বাঘ।