প্রাকৃতিক উপায়ে করা যাবে কার্বন পরিশোধন
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বিলোপের একটি কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। এমনকি স্টিফেন হকিং বলে গেছেন, মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্রহে মানববসতি স্থাপন করতে না পারলে হয়তো আগামী ৩০০ বছরের মধ্যে মানবসভ্যতার কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।
এ অবস্থায় সবাই বলছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত করতে না পারলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অপরিবর্তনীয় হয়ে উঠবে এবং মানবসভ্যতার ধ্বংস অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে। তাহলে কি আমাদের কিছুই করার নেই? আছে, অবশ্যই আছে। কার্বন নিঃসরণের হার প্রত্যাশিত মাত্রায় কমাতে হবে।
এ অবস্থায় একটি সুসংবাদ পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওমানের পার্বত্য অঞ্চলে এমন একধরনের কালো পাথর দেখা গেছে, যা বাতাসের কার্বন শুষে নিয়ে শক্ত পাথরে পরিণত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা একে কার্বন মিনারালাইজেশন বা খনিজ পদার্থে কার্বন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বলে অভিহিত করছেন।
প্রধানত পেরিডোটাইট শিলাখণ্ড বাতাসের কার্বন শুষে নিতে পারে। এসব শিলা সাধারণত সাগরের তলদেশে শক্ত স্তর হিসেবে থাকে। প্রায় ১০ কোটি বছর আগে টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষে এই স্তর ওমান অঞ্চলের উপরিভাগে চলে আসে।
ওমানের এই অঞ্চলের বিশেষ শিলাখণ্ড বছরে অন্তত ১০০ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে পারে। অবশ্য প্রয়োজনের তুলনায় এটা কিছুই না। বর্তমানে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টন। অন্যান্য কয়েকটি দেশেও পেরিডোটাইট শিলাখণ্ড রয়েছে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ বাতাসের কার্বনের আধিক্য যদি এভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে সীমিত করা যায়, তাহলে সেটা নিশ্চয়ই একটি অগ্রগতি। বিজ্ঞানীরা এখন এই বিশেষ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখছেন। বায়ুমণ্ডল থেকে অতিরিক্ত কার্বন শুষে নেওয়ার আরও উপায় আমাদের বের করতে হবে। তবে কার্বন নিঃসরণের হার কমানোর কোনো বিকল্প নেই।