নওগাঁর পোরশা উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন কৃষকরা। তাই কৃষকদের ঘরে ঘরে বইছে এখন নবান্ন উৎসব। উপজেলার আবাদি জমিগুলোতে এখন সোনালী ধানের ঝিলিক। বাতাসে বইছে আমনের সুঘ্রাণ। আর কৃষকের মুখে ফুটেছে ফসলের হাসি। পোরশাa উপজেলার মানুষ আশ্বিন ও কার্তিক মাসকে অভাবের মাস বলে থাকেন। অভাবের এ দুই মাস পেরিয়ে এখন অগ্রহায়ণ মাস চলছে। কষ্টের ফসল ধান বাড়িতে উঠতে শুরু করেছে, তাই কৃষকরা যেন শত অভাবের মাঝেও সুখের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন।
প্রতিটি কৃষক ও গৃহস্থের বাড়িতে চলছে নবান্ন উৎসব। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউপিতে সর্বমোট ১৬ হাজার ৮৭০ হেক্টর আবাদি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রতি বিঘায় ১৮ মণ। তবে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ধানের উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
কৃষকরা পর্যায়ক্রমে তাদের কষ্টার্জিত সোনালী ফসল ধান মাঠ থেকে কেটে খলিয়ানে (ধান রাখার স্থান) পালা দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ মাঠ থেকে খলিয়ানে এনেই মাড়াই করছেন। সব মিলিয়ে এখন কৃষকরা ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে সোনালি ফসল রোপা আমন ধানকে ঘিরে নানান স্বপ্ন বাস্তবায়নের জাল বুনেছেন কৃষকরা। কেউ কেউ নতুন ধানের চালের আটার ক্ষীর ও ভাপা পিঠা খাওয়ায় ব্যস্ত। কেউ বা আবার করছেন রকমারি পিঠা-পুলি আর সুস্বাধু পায়েস। কেউ কিনবেন নতুন নতুন জামা কাপড়, কেউ ডাকছেন মেয়ে জামাইকে, কেউ কেউ দাওয়াত করে খাওয়াবেন প্রিয়জনদের। সর্বোপরি এ উপজেলার গ্রামে গ্রামে ও মহল্লার প্রতিটি কৃষক ও গৃহস্থের পরিবারে এখন রোপা আমন ধানকে ঘিরে চলছে নানান উৎসব আর নবান্নের আমেজ।
সময়মতো ফসলে বৃষ্টি পাওয়ায় ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় এবং ধান ভালো হওয়ায় বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
ধান মাড়াই করেছেন এমন কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) জমিতে ১৭-২০ মণ করে ধানের ফলন হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহফুজ আলম জানান, চলতি মৌসুমে ধান চাষে তেমন বাড়তি খরচ করতে হয়নি কৃষকদের। এ বছর ধানের ফলন বেশ ভালো হচ্ছে। অন্যদিকে ধানের দামও ভালো পাবেন কৃষকরা এমনটিই আশা করছেন তিনি।