পৃথিবীর মতো আমাদের প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলেও রয়েছে প্রাণ । আলোচিত এই তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবৎ। একাধারে চলছে অনেক গবেষণাও। নাসার বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা থেকেই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, মঙ্গলে লবণ ছিল, ছিল প্রাণ। সাত বছর ধরে মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার’ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে নাসার ‘কিওরিসিটি রোভার’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা যায় পৃথিবীতে যেমন প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে, মঙ্গলেও তেমন প্রাণ ছিল। তার কারণ মঙ্গলে ছিল লবণজলের হ্রদ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জল শুকিয়ে যায় সেই হ্রদের। সেই হ্রদগুলি ক্রমেই ক্রেটার বা গহ্বরে পরিণত হয়।
বর্তমানে গবেষণা চালিয়ে নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, জল শুকিয়ে গেলেও হ্রদের হায়ে লবণের পুরু আস্তরণ রয়ে গেছে। মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার’ থেকে লবণের সেই আস্তরণই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন। এরপরই নাসা নিশ্চিত হয়েছে লালগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের বিষয় নিয়ে।
এদিকে আবার, কিওরিসিটি রোভার জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর আগে ক্রেটারটি তৈরি হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে নেচার জিও সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষণার নেতৃত্বে ছিল কালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একটি দল। এই দলই গেল ক্রেটার থেকে ১৫০ মিটার উচ্চতার পলল পাথর উদ্ধার করেছে। মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ এই পলল পাথরেই সালফেট জাতীয় লবনের আধিক্য ছিল বলে জানতে পারেন গবেষকদল। বিশেষ করে অনেক পরিমাণ ক্যালসিয়ামে এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেটও ছিল সেই পাথরে। গহ্বরের গায়ে লবণের পুরু সেই আস্তরণ দেখেই গবেষকদল মনে করছেন যে, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ দিচ্ছে লবণের আস্তরণ।
বিজ্ঞানীরা জানান, হ্রদের জল যেখানে অগভীর ছিল, সেখানেই লবণ অধঃক্ষেপিত হয়েছে বেশি। পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গলের জলবায়ু বৈচিত্রের বিশেষ ফারাক নেই। তাই পৃথিবীর মতোই লবণ জলের হ্রদ শুকিয়েছে মঙ্গলেও। কীভাবে তা পরিবর্তিত হয়েছে, তা জানতেই গবেষণার জন্য গেল ক্রেটারকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া