পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন (Amazon Forest) আজ ক্ষতবিক্ষত; গ্রহণ থেকে ২০ শতাংশ বেশি CO2 বাতাসে ফিরিয়ে দিচ্ছে
ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামেই সবাই চেনে ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলকে (Amazon Forest)। কিন্তু গত এক দশকের হিসেবে পরিবেশের শুদ্ধতার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম ক্রান্তীয় অরণ্যের উপরে আর ভরসা করার কোন উপায় রইল না। দেখা যাচ্ছে, যতটুকু কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) গ্রহণ করেছে, তার থেকে আরো ২০ শতাংশ বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ত্যাগ করেছে দক্ষিণ আমেরিকার এই অরণ্য। আর তাতেই চিন্তার ভাঁজ পরিবেশবিদদের কপালে।
বৃহস্পতিবার ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়কালের হিসেব দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ে মোট ১৬.৬ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করেছে আমাজন। আর টেনে নিয়েছে মাত্র ১৩.৯ বিলিয়ন টন।
সুতরাং বাকিটা থেকেই যাচ্ছে পরিবেশে। এর থেকে পরিষ্কার পৃথিবীব্যাপী বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচতে আমাজনের উপরে ভরসা করা আর সম্ভব হচ্ছে না।
গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক পিয়ের উইগনেরন বলেন, তাঁদের আন্দাজ ছিল এর ঠিক অর্ধেক। কিন্তু আমাজন সেই হিসেবকেও পরিবর্তন করে চমকে দিয়েছে তাদের সবাইকে। এই পরিবর্তনকে কিভাবে বা কোন উপায়ে সামলানো সম্ভব সেটি তিনি নিজেও বুঝে উঠতে পারছেন না। বরং পরিস্থিতি উল্টো দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রবল করছেন।
কিন্তু হঠাৎ করে কেন এই বিপরীত রূপ দেখাচ্ছে এতদিনের চেনা সবুজ এই অরণ্যানীর?
ইচ্ছেমতো গাছ কাটার মাধ্যমে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসম্যহীনতা ও দাবানলের ফলেই ক্রমে ক্ষয় ধরে আজকের এই পরিবেশ সৃষ্টি করেছে পৃথিবীর এই ফুসফুসে। আরও আশঙ্কার কথা হচ্ছে যে,,২০১৯ সালে জাইর বলসোনারো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে আমাজনের পরিস্থিতি ভয়াবহ ভাবে খারাপ হয়েছে। কেবল ২০১৯ সালের হিসেবই তার আগের ২ বছরের চেয়ে অনেক বেশী খারাপ অবস্থানে রয়েছে।
২০১৯ সালের আগস্টে দীর্ঘদিন ধরে দগ্ধ হয়েছিল আমাজন। যদিও আমাজনে দাবানল খুব স্বাভাবিক ঘটনা, তবুও সেবারের বীভৎসতা হার মানিয়েছিল আগের বছরগুলোর হিসেব নিকেশকে। দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে প্রায় ৮৩ শতাংশ বেশি দাবদাহের ঘটনা ঘটেছে।
কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবি দেখে পরিবেশবিদদের দাবি ছিল, ওই দাবানল প্রাকৃতিক নয়, বরং তা ম্যানমেড। স্বাভাবিক ভাবেই সাম্প্রতিক হিসেব দেখে পরিবেশবিদরা চিন্তিত। কী করে ফের পুরনো অবস্থায় ফেরানো যায় আমাজনকে আপাতত তা নিয়ে ভাবছেন তাঁরা।