28 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৯:৫৪ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রচেষ্টা চালাতে হবে
জলবায়ু

পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রচেষ্টা চালাতে হবে

পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রচেষ্টা চালাতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি অতিদ্রুত পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। অবিরত হিমালয় ও মেরু অঞ্চলের বরফের চাঁই গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে নিচের এলাকাগুলো ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ বন্যা।

আবার লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে খাওয়ার পানির সংকটের পাশাপাশি মৎস্য, কৃষি ও বনজ সম্পদের অনিষ্ট হচ্ছে ব্যাপকভাবে। তার ওপর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে ওজোনস্তর পাতলা হয়ে পৃথিবীকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।



ফলে প্রবল বেগে ঢুকে পড়ছে সূর্যের অতিবেগুনি তেজস্ক্রিয় রশ্মি। এতে করে বছর বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার সঙ্গে নয়া রোগব্যাধিরও আবির্ভাব ঘটছে পৃথিবীতে।

নতুন পরিবেশে টিকে থাকার মতো ভাইরাস কিংবা কীটপতঙ্গও জন্ম নিচ্ছে। অপরদিকে ওই পরিবেশে, ওই তাপমাত্রায় টিকে থাকার লড়াইয়ে হেরে যাওয়া প্রাণিকুলকে বিদায় নিতে হচ্ছে পৃথিবী থেকে, যাকে বলা হয় বিবর্তন বা প্রকৃতির ধারাবাহিক পরিবর্তন। যেমন প্রাগৈতিহাসিক যুগের কথা ধরা যেতে পারে।

অথবা স্মরণ করা যেতে পারে ডাইনোসর যুগের কথাও। মূলত বিবর্তনের কারণেই ওই যুগের অবসান ঘটেছে। এ জন্য অনেকেই প্রকৃতিকে দোষারোপও করছে। আসলে কিন্তু বিষয়টা তা নয়। এর জন্য মোটেও দায়ী নয় প্রকৃতি। দায়ী হচ্ছে মানবজাতি দ্বারা অতিমাত্রার কার্বন নিঃসরণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্টকরণ।

বিশেষ করে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে আছে শিল্পোন্নত দেশগুলো। এসব দেশের খামখেয়ালিপনার কারণে সিএফসি গ্যাস, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমন বেড়ে গেছে।

যে গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবীর ফিল্টার নামে খ্যাত ওজোনস্তর পাতলা হয়ে ক্রমান্বয়ে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হচ্ছে। ধীরে ধীরে বরফ যুগের সমাপ্তি ঘটিয়ে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ক্রমেই (বলে রাখা ভালো, পৃথিবীটা এখন মাঝারি বরফ যুগে রয়েছে)। তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।

যেই তাপমাত্রায় একজন মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন। শুধু মানুষই নয়, বহু প্রজাতির প্রাণিকুলের পক্ষে বেঁচে থাকা অসম্ভব। কাজেই আমরা বলতে পারি, অতিমাত্রার তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশ্বের জন্য একটি অশনিসংকেত।



যার ফলে দরিদ্র দেশের মানুষের জীবনধারা পাল্টানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে সেটি সম্ভবও হয়ে উঠবে না; তখন মহাদুর্যোগ দেখা দেবে দরিদ্র দেশগুলোতে।

দেখা যাচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং শৈত্যপ্রবাহের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। আর এ কারণেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, বন্যা, সাইক্লোন, টর্নেডো, ভূমিকম্প, নদীভাঙনসহ নানান দুর্যোগের ঘটনা ঘটছে।

এর মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে পৃথিবীকে। যদিও প্রকৃতির প্রতিটি দুর্যোগই ভয়াবহ, তথাপিও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অন্য সব দুর্যোগ কিংবা নতুন কীটপতঙ্গ অথবা ভাইরাসের উৎপত্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনাভাইরাসসহ অন্যান্য প্রাণঘাতী ভাইরাসের জন্মবৃত্তান্ত ঘেঁটে দেখলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যাবে। করোনা সম্পর্কে ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসটির বাহক বন্য প্রাণী অথবা অন্য কিছু; কিন্তু বিবর্তনটা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণেই ঘটেছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্ববাসীর জন্য সামনে আরও মহাদুর্যোগ অপেক্ষা করছে। এখানে আরেকটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে, শত বা হাজার বছর আগে বিশ্বে মহামারিতে লাখ-কোটি প্রাণের বিনাশ ঘটেছে শুধু অতিক্ষুদ্র জীবাণু বা বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে।

সেসব ভাইরাসের মধ্যে কিছু ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেও অজ্ঞাতনামা অনেক ভাইরাস রহস্যাবৃত হয়ে আছে আজও। এসবের ভ্যাকসিন তো দূরের কথা, নামকরণও হয়নি এখনো। প্রাচীন যুগের মানুষদের কাছে সেসব মহামারি সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত গজব হিসেবে পরিচিত ছিল।



যুগের পরিক্রমায় ওই ভাইরাস বরফাবৃত মৃত পশু কিংবা মৃত মানবদেহে আজও বিদ্যমান; বিশেষ করে মেরু অঞ্চল বা বরফাবৃত পর্বতশ্রেণির মাঝে লুকিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ধীরে ধীরে বরফ গলতে শুরু করেছে। বরফ গলার ফলে হাজার বছর আগের মৃতদেহ উঁকি দিচ্ছে। যেসব মৃতদেহ মহামারি আক্রান্ত ছিল, সেই সব দেহ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। যে ভাইরাসের নাম মানুষের জানা নেই, নেই প্রতিরোধের ভ্যাকসিনও।

উল্লেখ্য, কিছু কিছু ভাইরাস শত শত কিংবা হাজার বছরেও বিনষ্ট হয় না, তবে বেঁচে থাকতে সক্ষম বরফ আচ্ছাদিত মৃতদেহের মাঝে। সুযোগ পেয়ে সেসব ভাইরাস এখন নতুন করে হানা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিংবা দিচ্ছেও।

কারণ হাজার বছর আগের মহামারির ভাইরাসগুলো দীর্ঘদিন পৃথিবীতে অবস্থান করে ভ্যাকসিন ছাড়াই নিজ থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। ওই ভাইরাসগুলো উপযোগী পরিবেশ পেয়ে নব-উদ্যমে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যার পরিণামে বিশ্ববাসীর জন্য করোনা, ইবোলা, বার্ড ফ্লু, ফিলোভাইরাস, রেবিস, এইচআইভি, স্প্যানিশ ফ্লুর চেয়েও মারাত্মক আকার ধারণ করবে।

অপরদিকে মানুষ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। ফলে মানবজাতির পক্ষে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়বে। সেদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নয়, অতি সন্নিকটে বলা যায়। এমনও হতে পারে, করোনা সম্পূর্ণ নাশের আগেই ওই সব ভাইরাস আমাদের আক্রান্ত করে ফেলতে পারে।



উদাহরণস্বরূপ বলা যায় লাসা ও হান্তা ভাইরাসের কথা। এই দুটি ভাইরাস করোনার চেয়েও ভয়ংকর, যা দূর থেকেও সংক্রমণের সক্ষমতা রাখে। সুতরাং বলতে হয়, এখনো সময় আছে আমাদের শোধরানোর।

পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রচেষ্টা চালাতে হবে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে। নচেৎ পরিণাম কী হতে পারে, তা বোধ করি আর বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে জলবায়ু যুদ্ধে শরিক হোক। না হলে আমরা এই মহাদুর্যোগ থেকে উত্তরণ পাব না কোনোমতেই। একের পর এক নতুন নতুন ভাইরাস হানা দিয়ে মানবসভ্যতাকে বিলীন করে দেবে। সুতরাং সময় থাকতে সাবধান হতে হবে বিশ্ববাসীকে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত