34 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১২:৫০ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
বিশ্বব‍্যাংকের প্রথম জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা
আন্তর্জাতিক পরিবেশ সুলহাত সালেহীন

পাঁচ বছরের জলবায়ুর পরিবর্তন প্রতিরোধে নেতৃত্ব: বিশ্বব‍্যাংকের প্রথম জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা

পাঁচ বছরের জলবায়ুর পরিবর্তন প্রতিরোধে নেতৃত্ব: বিশ্বব‍্যাংকের প্রথম জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা

– সুলহাত সালেহীন

image

তিন হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে এথেন চ‍্যাপ্রন হলেন যিনি হাইতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষদেরকে সরিয়ে নিয়ে জীবন রক্ষা করেন।

জলবায়ু কর্ম : পরিবর্তনের একটি পদ্ধতি

ক্যাটগরী -৪ ক্ষমতা সম্পন্ন হারিকেন ম‍্যাথু হাইতিতে ২০১৬ সালে আঘাত হানে: বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ, যা কয়েক দশক ধরে বিপর্যয়, দারিদ্র এবং একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প সহ‍্য করেছে। ম‍্যাথু ২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছিল, মারা গিয়েছিল ৫০০ জনেরও বেশি এবং ১৭,৫০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।

জেরি চ‍্যান্ডলার, যিনি হাইতির দুর্যোগ ঝুঁকি পরিচালনা সংস্থায় নেতৃত্বদানকারী সার্জন এবং যিনি নাগরিক সুরক্ষা অধিদপ্তর এর অধীন দুর্যোগ ঝুঁকিঁ ব্যবস্থাপনা এজেন্সি পরিচালনা করছে, বলেছেন যে, “গত কয়েক বছর ধরে আমার দেখছি যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঘটনাবলী আরও পুনরাবৃত্ত ঘটেছে এবং আরও শক্তিশালী হয়েছে”।

২০২০ সালে আগস্টে হাইতি এবং তার প্রতিবেশী ডোমিনেকান প্রজাতন্ত্রকে ক্রান্তীয় ঝড় লরা আঘাত হানে এবং অনেক প্রাণহানি ঘটায় এবং হাইতির স্বেচ্ছাসেবীদের ব্রিগেডগুলি উদ্ধার কার্যক্রমে প্রেরণ করতে হয়।

চাল্ডলার বলেছেন।, “হাইতি দুর্যোগের প্রতিক্রিয়া এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য এর জাতীয় ব‍্যবস্থা শক্তিশালী করেছে, যদিও আরও সংস্থান প্রয়োজন।

আবহওয়ার ডেটা উন্নত করতে এবং একটি জাতীয় প্রাথমিক সর্তকতা ব‍্যবস্থা বিকাশের জন্য প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন করছে এবং একটি জরুরি জাতীয় যোগাযোগ প্রচারণা প্রক্রিয়া চালু করেছে -যার মাধ্যমে দূর্যোগ সম্পর্কে জন সাধারনের মাঝে সচেতনতা বাড়িয়ে তুলছে।”

চান্ডলার বলেছেন” জনগনকে যথাযথভাবে জানতে হবে কি কারনে তারা দূর্যোগ বিপক্ষে লড়তে পারে এবং যাতে তারা তাদের জীবনকে দূর্যোগের সাথে সামঞ্জস্য করতে পারে এবং মানিয়ে নিতে পারে।”

কভিড ১৯ এবং জলবায়ুর মখোমুখি : উন্নয়নের চ‍্যালেঞ্জগুলো

হাইতির মতো, বিশ্বজুড়ে দেশগুলো করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করার পরেও পর্বত সমান জলবায়ু ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে।

স্থির-মহামারীটি বিশ্বব‍্যাপী স্বাস্থ্য খাতকে মারাত্মক ক্ষতি করেছে এবং ১০০ মিলিয়ন মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বিশ্বব‍্যাংক গ্রুপ ১০০ টি উন্নয়নশীল দেশের জন্য তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে ১৬০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য সহায়তা করেছে।

একই সাথে তারা বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রতম দেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের মতো আরও একটি বড় সমস্যাও মোকাবেলা করছে।



জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্যারিস চুক্তিটি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা করার জন্য বিশ্বের নেতাদের দ্বারা বিশ্বব্যাপী যুগান্তকারী চুক্তি করেন।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপ জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে আর্থিক সাহায্য বৃদ্ধি করেছে। ২০১৬ সালে এটি ২০% ছিল এবং ২০২০ সালে এটি ২৮%। গত টানা তিন বছরে পরিমাণটি একটি ভাল উপায়ে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এখাতে বিশ্বব্যাংক মোট ৮৩ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে।

বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন পরিচালক জন রুম বলেছেন, “আপনি যদি দেশগুলিতে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপের দিকে লক্ষ্য রাখেন এবং বিশ্ব ব্যাংকের বেশিরভাগ অংশ পর্যালোচনা করেন তবে এটি অপেক্ষা করার পরিবর্তে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিধার একটি স্বীকৃতি।”

কর্ম পরিকল্পনা হতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পাঁচটি প্রাথমিক ব্যবস্থা রয়েছে যা গ্রাহকদের জন‍্য মৌলিক এবং দেশগুলিকে মহামারী থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে সহায়তা করে:
১. উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে এবং কৌশলগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনকে একত্রীভূক্ত করা:

কর্ম- পরিকল্পনার ফলাফল হিসাবে, ব্যাংকের প্রতিটি নতুন প্রকল্প জলবায়ু ঝুঁকি আছে কিনা তা পংখানুপঙ্খ যাচাই করা।জলবায়ু পরিবর্তনের বিবেচনাগুলো প্রকল্পের নকশার প্রতিটি পর্যায়ে বিবেচনায় নেয়া এবং উন্নয়নশীল দেশের অংশীদারদের সাথে ব্যাংকের বহু-বছরের উন্নয়ন কৌশলগুলোর শতভাগ নিশ্চিত করা।

বিশ্বব্যাংকের জলবায়ু পরিবর্তন দলের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ স্টেফেন হ্যালিগাট বলেছেন যে, ”আমরা জলবায়ুর মূলধারার জন্য যা কিছু করি তা সত্যি এতে পরিবর্তন আনে। এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে জলবায়ু-সম্পর্কিত উন্নয়নের ব্যবস্থা করে এবং আমাদের গ্রাহকদের স্থিতিশীল উন্নয়ন উন্মুক্ত করতে সহায়তা করে।”

সুক্ষভাবে, জলবায়ু স্মার্ট প্রকল্পগুলোকে পরিবর্ধন করে ঐ সকল ঐতিহ্যগত খাতকে ব্যাংক জলবায়ু কর্ম নির্বাচন করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপকতা, ডিজিটাল উন্নয়ন ও জলবায়ু সহনীয় কর্ম অন্তর্ভূক্ত; ফিলিপাইনের ক্ষেত্রে মেক্রো বাজেটে জলবায়ু অন্তর্ভূক্ত করে এবং মিশরে জ্বালানী এবং পানি স্বল্পতার দরুন স্বাস্থ্যখাতকে সুবিধা প্রদান করে যেমন জ্বালানি, কৃষি এবং আশেপাশের পরিবেশ।

২. ভূ-দৃশ্যের পুনরুদ্ধার এবং ভূমির ব্যবহারে উন্নতি

বিশ্বব্যাংক গ্রুপ পানি সমন্বিত নীচু জমিতে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মানুষের জীবনযাত্রার জন্য বড় পদক্ষেপ নিয়েছে, এই স্থানগুলো জলবায়ু উপযোগী জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে যেখানে খাদ্য ও জল সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সম্পদ উন্নয়নের পরিচালক সাইমন এহুই বলেছেন, “লোকেরা খেয়াল করে যে আফ্রিকার খাদ্য ব্যবস্থা কিভাবে বিপদে রয়েছে। আফ্রিকার প্রায় ২৭৭ মিলিয়ন মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছেন সূতরাং জলবায়ু পরিবর্তন উপর কিছু করা প্রয়োজন।”

কৃষির একটি বড় অংশ জুড়ে, “জলবায়ু স্মার্ট” গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস করার পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে এবং স্থিতিস্থাপকতা এনেছে। এই সমাধানগুলো লক্ষ লক্ষ মানুষকে উপকৃত করে ব্যাপকভাবে উপযোগ ভোগ করতে দেখা গেছে। ভারতের মহারাষ্ট্রে ভূমির উর্বরতা এবং জল সম্পদ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বিকল্প ফসল এবং বীজের গুণমান এবং স্বল্প ব্যয়যুক্ত জৈব অনুশীলনের জন্য ৭ মিলিয়ন কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মধ্য প্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার জন্য বিশ্বব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আয়াত সোলিমান জানিয়েছেন, ”প্রকল্পগুলো খরার ও বন‍্যার স্থিতিস্থাপকতার জন্য মজুরি ও জীবিকা নির্বাহ করছে।”

পুনরুদ্ধার প্যাটার্নটি সত্যিই দরকারী কারণ যারা কঠোরভাবে চিহ্নিত তাদের জন্য কোনও ঝুঁকি ছাড়ার মুখোমুখি হন না।

৩.জলবায়ুর ধাক্কা থেকে দুর্বলদের রক্ষা

পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের পরিচালক বেনোইট বসকেট আরও বলেছে, “নিঃসন্দেহে কোভিড ১৯ পরিবেশগত ঝুঁকির বিরুদ্ধে কাজ করার প্রয়োজনীয়তাকে শক্তিশালী করেছে এবং পরিবর্তনগুলো তুলে ধরেছে যার প্রভাব বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে রয়েছে এবং জীবনের মান উন্নয়ন করার জন্য জলবায়ুর গুরুত্ব পূণ:বিবেচনা জন্য সুযোগ করে দিয়েছে।

কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক দেশগুলোর দূর্যোগ প্রশমনে মানুষকে স্তিথিস্থাপক অবকাঠামো এবং অর্থনীতি নির্মানের জন্য সহায়তা করেছে-এগুলো হল মৌলিক যেমন জলবায়ু প্রভাব এবং কিভাবে মৃত্যুরহার কমে; উদাহরণ স্বরুপ বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় গত মে ২০২০ সালে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানা সুপার সাইক্লোন আম্পান এর পূর্বে লাখ লাখ লোককে সাইক্লোন সেন্টার নিয়ে আসায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছিল।

জলবায়ু দূযোগ মোকাবেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করেছে
জলবায়ু দূযোগ মোকাবেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করেছে Photo: © Global Commission on Adaptation/World Resources Institute.

প‍্যাসিফিক দ্বীপগুলো টুভালু এবং ভানুয়াতু দ্রুত অর্থ সংকট সমাধান করতে পেরেছিল শুধুমাত্র এই বছরের প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় থেকে একটি নতুন উপাদানের মাধমে যেটি বিপর্যয় কমানোর প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচিত।

বিশ্বব্যাংকের আমেরিকা এবং ক্যারিবিয় অঞ্চলের টেকসইতা উন্নয়নের পরিচালক আনা উয়েলিন্সটেন বলেছেন, ”জলাবায়ু সংক্রান্ত ঘটনা মোকাবিলা করতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়েছে যেগুলো বিশ্বব্যাপি সরকারসমূহের জন্য খুবই উপকারি।”

এই পদ্ধতিগুলোতে “ অগ্রিম সামাজিক প্রতিরক্ষা বা সুরক্ষা নীতি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে যেগুলো ঘুর্ণিঝড় বা খরাকালীন সময়ে জরুরীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে মোজাম্বিকে ঘুর্ণিঝড় ইদায় এবিং কেনাথে ক্ষতিগ্রস্ত ১,১৫,০০০ লোককে সাহায্য করার জন্য সুরক্ষা নীতির মাধ্যমে সাহায্যের হাত বাড়িংে দিয়েছিল।

বিশ্বব্যাংকের পৃথিবীব্যাপী সামাজিক সুরক্ষা এবং চাকরীর পরিচালক মাইকেল রোতকভোস্কি বলছেন, “নিরাপত্তা উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে সাহায্য করে আসছে এবং এভাবে তারা সংকট কাটানোর সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাচ্ছে।”

মহামারী চলাকালীন, শক্তিশালী সম্মিলিত সুরক্ষার ব্যবস্থার দেশগুলি তাদের আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করতে পেরেছিল।

৪. যেসব ক্ষেত্রে বেশী পরিমান কার্বণ ব্যবহৃত হয় সে সব ক্ষেত্রে স্বল্প-কার্বন শক্তিতে পরিবর্তনের জন্য উৎসাহ দেওয়া

জলবায়ু দূযোগ মোকাবেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করেছে

ভারতের অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম ‘সরিতা আসুর’ এর একজন দরিদ্র গ্রাহক তার গৃহে স্থাপিত সোলার এনার্জির লাইটের সুইচটি যে দিন প্রথম অন করেন সেদিন বলেছিলেন, “এটি আমার জন্য একটি অত্যন্ত খুশির আনন্দের মূহত্ব, যার মাধ্যমে আমার পরিবারের পরিবর্তন হয়েছিল।

” ব্যাংকের প্রাইভেট স্কেট সহায়তা অঙ্গ আইএফসি-এর সহায়তায় একটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তার বাড়িটি ৮ কিলোওয়াট গ্রিড থেকে প্রাপ্ত তিনটি এলইডি লাইট দ্বারা আলোকিত হয়েছে । ছবি: ডমিনিক শেভেজ / আইএফসি

তারা গ্রহিতাদের কার্বণ নিঃসরণ হ্রাস করার কাজে নবায়নযোগ্য শক্তি এবং শক্তি দক্ষতাকে উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করছে।এটি বিশ্বের শীর্ষ সৌর প্রকল্পগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে এবং জলবায়ু ফান্ডের মাধ্যমে ”মরক্কোর নূর সৌর শক্তি সঞ্চিত প্লান্ট (Noor concentrated solar plant in Morocco) এর মত প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করছে।

বিশ্বব্যাংক মিশরের বেনব্যান সৌর উদ্যান (BenBan solar park) এবং ভারতের আল্ট্রা মেগা সোলার পার্ক (BenBan solar park)কে সহায়তা করেছিল, যা ৮০০ কিলোমিটার দূর হতে দিল্লির শহর বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ।

আইএফসির জলবায়ু ব্যবসায়ের পরিচালক আলজবেতা ক্লেইন বলেছেন, “জলবায়ু যে একটি সুযোগ ইহা বুঝতে শুরু করা কঠিন। আমরা প্রমাণ থেকে এবং অতীত কাজ থেকে জানি যে নবায়নযোগ্য প্রযুক্তি প্রচুর সংখ্যক লোকের চাকুরীর ব্যবস্থা করেছে। মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারে দেশগুলির ভবিষ্যতে নিম্ন কার্বন নির্গমন কাজে প্রচুর সংখ্যক কর্ম সুষ্টির সুযোগ রয়েছে।”

বিশ্বব্যাংকের সাব-সাহারান অঞ্চলের অবকাঠামোগত পরিচালক রিকার্ডো পুলিটি বলেছেন, অফ-গ্রিড সৌর কয়েক মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে, মূলত দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকাতে এবং ৪০% আফ্রিকানদের এর ফলে বিদ্যূতের আওতায় আনয়ন সম্ভব হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের গ্লোবাল লাইটিং প্রোগ্রামটি একটি গ্লোবাল অফ-গ্রিড সেশন তৈরি করেছে যা ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি লোককে বছরে ১ বিলিয়ন- শক্তি উৎপাদনের সুযোগ দিয়েছে।।

আফ্রিকার জলবায়ু ব্যবসায়িক পরিকল্পনার গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা টমাস ওব্রায়েন বলেছেন, “আফ্রিকাকে বিশ্বের জলবায়ু বান্ধব মহাদেশ হিসাবে রাখার লক্ষ্যে আমরা এই দশকের শেষের মধ্যে আফ্রিকাজুড়ে সৌর বিদ্যুৎ শক্তির আওতায় আনার দ্বিগুণ লক্ষ্য নিয়েছি। গত চার বছরে আমাদের প্রকল্পগুলোতে ভূ-তাপীয়, সৌর এবং জলবিদ্যুৎ এর মাধ্যমে প্রায় সবুজ, জলবায়ু-বান্ধব বিদ্যুতের প্রায় ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং পরিবেশন করেছি। “

৫. নিম্ন-কার্বন নির্গমণ পরিবহন ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত করা
বাংলাদেশ একটি নিম্ন-কার্বন কৌশল শুরু করেছে এবং ব্যাংকের সহায়তায় তারা এর অভ্যন্তরীণ নৌপথ পরিবহন খাতের জন্য একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। ছবি: © মেহরিন মাহবুব / ওয়ার্ল্ড ব্যাংক
বাংলাদেশ একটি নিম্ন-কার্বন কৌশল শুরু করেছে এবং ব্যাংকের সহায়তায় তারা এর অভ্যন্তরীণ নৌপথ পরিবহন খাতের জন্য একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। ছবি: © মেহরিন মাহবুব / ওয়ার্ল্ড ব্যাংক

জীবাস্ম জ্বালানী চালিত পরিবহন ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের এক চতুর্থাংশের জন্য দায়ী।ব্যাংক গ্রাহকদের গণপরিবহন খাতে সহায়তা করছে। সড়ক পরিবহনের পরিবর্তে ন্যূনতম কার্বণ নির্গমন খাত রেল ও জলপথ পরিবহনে বিনিয়োগ করছে।



বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার অবকাঠামোর পরিচালক গুয়াংহে চেনের মতে, ব্যাংকটি ভারতের মেগা শহর দিল্লি ও কলকাতার মধ্যে পণ্য পরিবহণের জন্য রেল কাঠামোকে সহায়তা করছে এবং বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল জুড়ে পণ্য পরিবহনের জন্য নৌপথকে সহায়তা দিচ্ছে।

লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের অবকাঠামো পরিচালক ফ্র্যাঞ্জ আর ডি ড্রিস-গ্রস বলেছেন, বৈদ্যুতিক বাসগুলির ঐ অঞ্চলের বিপ্লবী উদ্বেগ ব‍্যাটারী প্রযুক্তি ব‍্যবহার করে।”

মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপে যেমন শক্তি বেশি, তাই কর্মকর্তারা ট্রাক থেকে মালামাল পরিবহণে রেলপথে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করছেন।এই অঞ্চলের পরিচালক লোকিও মোনাকো বলেছেন, ”বেসরকারী ও সরকারী বিল্ডিংকে ব্যবহারকারীদের আরও কর্মদক্ষ করছে যাতে শক্তির অপচয় কম হয়, পাশাপাশি কয়লা ব‍্যবহার হ্রাস করে আরও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে উৎসাহ যোগাচ্ছে।।”

যেহেতু উন্নত দেশগুলো পরিচ্ছন্ন জ্বালানী পরিবহন ব্যবস্থা চালাচ্ছে, তাই জীবাশ্ম জ্বালানী-নির্ভর সম্প্রদায়ের জন্যও তাদের চিন্তা করা উচিত কিভাবে তাদেরকেও কম কার্বণ নির্গমণ পরিবহন ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত করা সম্ভব।

বিশ্বব্যাংকের ব্যাংকের পূর্ব এশিয়া ও রিল‍্যাক্সিং রিজিংয়ের অবকাঠামোগত পরিচালক রঞ্জিত লামেক বলেছেন, “নবায়নযোগ্য শক্তির একটি রূপান্তর কার্যকর ব্যবস্থা যা সফল হতে চলেছে তাই যে সব সম্প্রাদায় কয়লা অর্থনীতি নির্ভর কাজ করছে – প্রভাব হ্রাস করার জন্য তাদেরকে সহায়তা করা উচিৎ।”

এই নীতিগুলিতে আরও কার্বন মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা রয়েছে: ২০২০ সালে পৃথিবীর ৬১টি দেশ এমন প্রচেষ্টা নির্ধারণের ঘোষণা করেছে যারা কার্বন মূল্য কার্যকর করবে।

পরিবর্তিত জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা ২.০

সম্প্রতি সমাপ্ত পরিকল্পনার ফলাফলগুলো গ্রুপের নেতৃত্ববৃন্দকে জলবায়ু সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়। সামনের দিকে তাকানো, আমাদের পরবর্তী জলবায়ু পরিবর্তন অ্যাকশন পরিকল্পনা (২০২০-২০২৫) এর লক্ষ্য ইতিমধ্যে চলমান জলবায়ু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশগুলোকে অভিযোজনে অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং দেশে বর্ধিত ব্যবস্থাপূর্ণ জলবায়ু ক্রিয়াকে সমর্থন করে।

COVID-19 এর কারণে অর্থনৈতিক ঝাঁকুনীতে থাকা দেশগুলো এটিকে বাস্তবায়নে স্বল্পমেয়াদী উদ্দেশ্যগুলির হস্তক্ষেপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে যেমন বিভিন্ন চাকরি এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি – সেই সাথে কার্বণমূক্ত,অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির মতো ব‍্যবস্থা গ‍্রহণ করে আমাদের গ্রাহকদের স্থিতিশীল করে তোলা।

আমাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষন জ্ঞান এবং আর্থিক সম্পদসহ আমাদের প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি সফলভাবে সরবরাহের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রচেষ্টাকে প্রসারিত করব, উদাহরণস্বরূপ প্রচলিত জলবায়ু খাতকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন একটি মূল অঙ্গ হিসাবে মহামারীর দরুন ক্ষতিগ্রসবত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্রিয়াকলাপগুলোতে অন্তর্ভূক্ত করা।

কিভাবে আমাদের গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমিক, অর্থনীতি-বিস্তৃত পরিবর্তন সরবরাহ করতে পারি এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারি যা পরবর্তী কয়েক দশক ধরে নিম্ন-কার্বন, স্থিতিশীল সুবিধাগুলি উন্মুক্ত করতে পারে ।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ডিরেক্টর বার্নিস ভ্যান ব্রোকহার্স্ট বলেন, আমাদের মধ্যে যারা বছরের পর বছর ধরে উন্নয়নের কাজ করেছি তাদের পক্ষে এটা স্পষ্ট যে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী বিজয়ী প্রচেষ্টা।

আমরা একটি স্বাস্থ্যকর জলবায়ুতে গ্রাহকদের জন্য আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আরও উন্নত করে তুলছি যা এক অকল্পনীয় মুহূর্ত এবং এর মধ্যে পরিষ্কার বায়ু, ব্যবহারযোগ্য জল, স্বাস্থ্যকর মহাসাগর, আরও টেকসই খাদ্য এবং কৃষিকাজ থেকে উপকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।.আমরা এই অধিকার পাওয়ার জন‍্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।“

Ref: World Bank

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত