38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৪:৫৯ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই, আমনের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
কৃষি পরিবেশ

পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই, আমনের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই, আমনের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ঠাকুরগাঁওয়ে খেতের আমন ধান বর্তমানে থোড় (শিষ গজানো), পুষ্পায়ন ও দানাবাঁধা—এই তিন পর্যায়ে রয়েছে। ধানগাছের জীবনচক্রের এই তিন পর্যায়ে মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা ও জমিতে পানির অভাব হলে ধানের ফুলে পরাগায়নে বাধা সৃষ্টি করে। এতে ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সারা বছরের ৮০ ভাগ বৃষ্টি আমন মৌসুমেই হয়ে থাকে। আর তাতেই চলে বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষ। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে এবার বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই। সপ্তাহ দুয়েক ধরে চলছে খরতাপ। মাত্রাতিরিক্ত তাপের কারণে খেতের মাটি ফেটে গেছে।



আবার কোনো কোনো খেতের ধানগাছের পাতা হলদে হয়ে গেছে। ঘন ঘন সেচ দিয়েও জমিতে পানি ধরে রাখতে পারছেন না কৃষক। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ফলনও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩১৫ হেক্টরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিদিনের তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করে থাকে। ৭ অক্টোবর জেলায় সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ২০ মিলিমিটার। এরপর আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। গত কয়েক দিনে ৩২ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা ওঠা–নামা করেছে।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, টানা বৃষ্টি না হওয়ায় কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ধানের ফলন ভালো হওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকে। ধানের ফুলে পরাগায়ন ঘটার জন্য তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকতে হয়।

কিন্তু জেলার তাপমাত্রা অনেক সময় তারও বেশি থাকছে। এ কারণে ধানে চিটা হওয়ার শঙ্কা থাকছে। এ অবস্থায় সম্পূরক সেচ দিয়ে ফসলের খেত পানিতে ভরে রাখতে হবে। এতে তাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার রোপণ করা আমন ধানের মোট আবাদের ১৩ শতাংশ কুশি পর্যায়ে, ৪৬ শতাংশ থোড় (শিষ) আসার আবস্থায় রয়েছে। পুষ্পায়ন পর্যায়ে ২৮ শতাংশ ও দানাবাঁধা আবস্থায় রয়েছে ১৩ শতাংশ।

এই সময়ে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশি হলে ধানে চিটা সমস্যা ও দানার পুষ্টতা বাধাগ্রস্ত হয়। ধানের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলেও ফুল ফোটা পর্যায়ে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর চেয়ে বেশি হলে ধানে চিটা হওয়ার শঙ্কা থাকে।

সদর উপজেলার শিংপাড়া গ্রামের কৃষক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, এবার তিনি ১১ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। এর মধ্যে ৫ বিঘা জমির ধানগাছে থোড় কালো রং ধারণ করেছে। এ অবস্থায় সেচ দিয়েও খেতে পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। এমনটা চলতে থাকলে ধানে চিটা হয়ে ফলন কমে যাবে।



বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, দুই বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। শুরুতে বৃষ্টি থাকায় ধানগাছগুলোও তরতর করে বেড়ে উঠছিল।

কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। প্রচণ্ড তাপে জমির মাটি ফেটে যাচ্ছে। উপায় না দেখে বারবার শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি দিয়েও মাটি ভিজিয়ে রাখা যাচ্ছে না। এতে খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

রানীশংকৈল উপজেলার রাতোর গ্রামের কৃষক শচিন বর্মণ বলেন, ‘আকাশত পানি নাই। গরমে জমি ফাটি গেইছে। মাঝে মাঝে আকাশখান খালি গুড়গুড় করে, বৃষ্টি পড়ে না। জমির ধানলা লাল হয়ে যাছে। শ্যালো মেশিনত পানি দেঠি, তাও কাজ হছে নাই। এবার যে হামার কী হইবে!’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, এ সময়ে তাপ নিয়ন্ত্রণে জমিতে সব সময় পানি ধরে রাখা আবশ্যক। তা না হলে ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

পাশাপাশি খেতে কারেন্ট ও গান্ধি পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। জেলার সব এলাকাতেই এখন সেচসুবিধা রয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শে কৃষকেরা গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জমি ভিজিয়ে রাখছেন। এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বাড়লেও ধানের ফলনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত