40 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৫:১৩ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশ সুরক্ষার সচেতনতামূলক বার্তা নিয়ে ভারতীয় তরুণ বাংলাদেশে
পরিবেশ রক্ষা

পরিবেশ সুরক্ষার সচেতনতামূলক বার্তা নিয়ে ভারতীয় তরুণ বাংলাদেশে

পরিবেশ সুরক্ষার সচেতনতামূলক বার্তা নিয়ে ভারতীয় তরুণ বাংলাদেশে

প্লাস্টিকের ভয়াবহতা ও পরিবেশ সুরক্ষার বার্তা নিয়ে টানা ৩০ মাস ধরে যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন ভারতীয় তরুণ রোহান আগরওয়াল। তিনি সিকিম প্রফেশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র।

মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ২১ বছর বয়সী এ তরুণ দেশটির ২৭টি রাজ্যে সচেতনতামূলক প্রচার শেষে বাংলাদেশে এসেছেন। এশিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করে পরিবেশ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতেই তাঁর এ দীর্ঘযাত্রা।

রোহান বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতির গুরুত্ব জীবনের সমান। সহজলভ্যতার কারণে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্লাস্টিকের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের জন্য যা মারাত্মক ক্ষতিকর।



প্লাস্টিক প্রজনন ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ধ্বংস করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা তৈরি করে। প্লাস্টিক উৎপাদন প্রক্রিয়ায় গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে।

প্লাস্টিক দিয়ে পৃথিবীর পুরো জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেই ক্ষতির হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে তাঁর এ যাত্রা।

পরিবেশ রক্ষায় পর্যায়ক্রমে বিশ্ব ভ্রমণের লক্ষ্য নিয়ে ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট রোহান আগরওয়াল ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে গঙ্গাস্নান করে যাত্রা শুরু করেন। তাঁর পরিবারে মা-বাবা ও ছোট বোন আছে। ভারতের ২৭টি রাজ্য ভ্রমণ শেষে গত ৮ জানুয়ারি ফেনীর বিলোনিয়া সীমান্ত পথে বাংলাদেশে আসেন।

রোহান আগরওয়াল বলেন, এরই মধ্যে তিনি ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণকালে কখনো হেঁটে, আবার দূরত্ব বিবেচনায় কখনো বাস, ট্রেন, উড়োজাহাজ ও মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন।

চুয়াডাঙ্গায় অবস্থানকালে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে সচেতনতামূলক প্রচার চালান রোহান। এ সময় তিনি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়াসহ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করার অনুরোধ জানান। কর্মকর্তারা রোহানের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

ইউএনও শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘রোহানের উদ্যোগ চমৎকার। আমাদেরও উচিত হবে প্লাস্টিক বর্জনে আন্তরিক হওয়া।’

ভারতীয় তরুণ রোহান চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা একাডেমি বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব এবং প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন।



চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম সাইফুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবেশ রক্ষায় সচেতন করতে রোহান আগরওয়াল গতকাল কলেজে এসেছিলেন। তিনি বুঝিয়েছেন, কীভাবে প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অনুরোধ করেছেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে এনে পরিবেশের সঙ্গে মিশে যায় এমন জিনিস ব্যবহার করতে।

রোহান বলেন, যখন যেখানে যান, তখন সেখানকার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে পথ চলেন। কেউ থাকা, কেউ খাওয়া, আবার কেউ গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে সহযোগিতা করছেন। পথ চলতে গিয়ে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতাও হয়েছে।

এমনকি একটানা ২৬ ঘণ্টা না খেয়েও থাকতে হয়েছে। কখনো কখনো হয়েছেন চোর-ডাকাতের মুখোমুখি। কেউ কেউ পাগল বলে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে। এসব থেকে তিনি বিচিত্র অভিজ্ঞতা পেয়েছেন।

ভারতের উত্তর প্রদেশের চম্বল খুব বিপজ্জনক এলাকা হিসেবে পরিচিত বলে মন্তব্য করেন রোহান। সেখানে একা হেঁটে যাওয়ার সময় দস্যু প্রকৃতির একজন তাঁকে আটক করেন। ব্যাগসহ সবকিছু তাঁকে দিতে বলেন।

এমন পরিস্থিতিতে রোহান পাঁচ মিনিট তাঁর কথা শোনার অনুরোধ করেন। দুই মিনিট শোনার পর রোহানকেই উল্টো এক হাজার টাকা দেন এবং আপ্যায়ন করেন ওই ব্যক্তি। এ ছাড়া একদিন কেরালায় ঝুম বৃষ্টিতে আটকা পড়লে ফেসবুকের পরিচিত এক বন্ধু তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দেন।

রোহান আগরওয়াল বলেন, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যখন গেছেন, তখন অনেক জায়গার ভাষা তাঁর জানা ছিল না। তিনি হিন্দি, ইংরেজি ও মারাঠি—এই তিন ভাষায় পারদর্শী।

গুগল ট্রান্সলেটর, বিভিন্ন অ্যাপস ও দোভাষীর সহযোগিতায় এখন বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। এটা তাঁর কাছে অনেক ভালো লাগার বিষয়। তবে বাংলাদেশে সবাই তাঁকে সহযোগিতা করছেন।



বাংলা ভাষা অল্প বোঝেন, তবে বলতে পারেন না বলে জানিয়েছেন রোহান। তিনি বলেন, যখন যেখানে গেছেন, ছাত্রদের পাশাপাশি মাড়োয়ারি কমিউনিটির সহযোগিতা পেয়েছেন। বাংলাদেশ অনেক নিরাপদ দেশ।

বাংলাদেশের মানুষ খুবই ভালো ও বন্ধুসুলভ। এ দেশের চটপটি ও ফুচকা খুবই ভালো লেগেছে। বাংলাদেশি নিরামিষ খাবারও খুবই সুস্বাদু। সবজির মধ্যে ফুলকপি খুব মজার।

চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, যশোর, খুলনা ও বরিশাল থেকে ঢাকায় যাবেন। রোহান ঢাকায় পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে দেখা করবেন।

বাংলাদেশের দুর্গম চার থেকে পাঁচটি জেলা ছাড়া বেশির ভাগ জেলা ভ্রমণের আগ্রহ আছে তাঁর। বাংলাদেশ ভ্রমণ শেষে পর্যায়ক্রমে তিনি ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীনসহ এশিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করবেন।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত