পরিবেশ রক্ষায় সরকারি অফিসে ছাদে ফুলবাগান
রাজধানীতে সরকারি অফিসের ছাদ মানেই মশার প্রজননস্থল। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিধন অভিযানে সেই প্রমাণ মিলেছে। বেশিরভাগ ভবনের ছাদে পরিত্যক্ত জিনিসপত্র রাখায় নোংরা হয়ে থাকে।
কোনও কোনও ছাদ থাকে তালাবদ্ধ। এরমধ্যে ব্যতিক্রম রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সমাজসেবা অধিদফতরের ১০ তলা ভবনের ছাদ। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফল গাছের সমারোহে মন জুড়িয়ে যায়।
ছাদের আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার। উত্তর-পশ্চিম কোণে খড় দিয়ে বানানো ছাউনি। দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বসে সময় কাটানোর জন্য রয়েছে গোলটেবিল। এখান থেকে নাগরিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
কাজের ফাঁকে ছাদে সবুজের সান্নিধ্যে হিমেল হাওয়ায় অধিদফতরের কর্মকর্তাদের মন সজীব হয়ে ওঠে। নাগরিকদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে কাজের চাপে মাঝে মধ্যে হাঁপিয়ে ওঠেন তারা। তখন ছাদের মনোরম পরিবেশ তাদের উদ্দীপনা জোগায়।
ছাদবাগান প্রসঙ্গে সমাজসেবা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) কৃষিবিদ গোলাম আজম বলেন, ‘এটি চমৎকার একটি উদ্যোগ।
আমরা যারা নগর জীবনে বসবাস করি তারা এভাবে প্রকৃতির সান্নিধ্য খুব একটা পাই না। অফিসের ছাদে এমন বাগান হওয়ায় কাজের ফাঁকে কিছুটা সময় কাটালে মনটা ফুরফুরে লাগে। সেক্ষেত্রে আমাদের কাজের গতি ও মান বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি।’
জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলামের নির্দেশনায় খালি পড়ে থাকা ছাদটি সাজানোর কাজ শেষ হয় দুই মাস আগে। ছাদের মাঝখানে একটি মাটির উঠান বানানো হয়েছে।
এর ওপর রাখা বিশেষ প্রজাতির ঘাস। বাগানে কয়েক হাজার ফুলের গাছ রয়েছে। সকাল-বিকাল অটোপাম্পিংয়ের মাধ্যমে পানি দেওয়া হয়। এছাড়া একজন বিশেষজ্ঞ শ্রমিক নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করেন।
অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কর্মপরিবেশের উন্নয়নেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর সব ছাদে এমন বাগান করা হলে আমার বিশ্বাস, শহরের তাপমাত্রা অনেকাংশে কমবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক সরকারি অফিসের ছাদ দিনের পর দিন অপরিষ্কার পড়ে থাকে। অনেক ছাদে টয়লেটের কমোড, ভাঙা আসবাবপত্র, নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হয়।
এসব কারণে মশার প্রজনন দেখা দেয়। সেজন্য আমরা ছাদবাগানের ওপর ১০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড় দিয়েছিলাম। কারণ ছাদবাগানে শহরের সৌন্দর্য যেমন বাড়ে, ঠিক তেমনই তাপমাত্রা কমে। কেউ যদি এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো।’