পরিবেশ রক্ষায় অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন দরকার
ভারতের আসামভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন বালিপাড়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ঢাকায় ‘ইস্টার্ন হিমালয়ান নেচারনোমিকস ফোরাম’ চলছে। শনিবার ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তিন দিনব্যাপী এ ফোরাম শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে ৬০ জনের বেশি আলোচক এতে অংশ নিচ্ছেন।
তিন দিনব্যাপী দশম ইস্টার্ন নেচারনোমিকস ফোরামের আলোচনা শুরু হয় ‘জীববৈচিত্র্যের অর্থনৈতিক উপলব্ধি’ শীর্ষক বক্তৃতা দিয়ে। বিষয়টি নিয়ে বক্তৃতা করেন যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক পার্থ সারথী দাশগুপ্তা, ভারতের টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেসের সাবেক প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস রামাদোরাই, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের গ্রানথাম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ার লর্ড নিকোলাস স্টার্ন, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শ্যাম সরণ। সঞ্চালনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণা কর্মকর্তা আফসারা বিনতে মির্জা।
এই পর্বের শুরুতে বক্তব্য দেন অধ্যাপক পার্থ সারথী দাশগুপ্তা। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি কোনো ভূমিকা পালন করেনি—এমন চিন্তা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আমাদের অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন দরকার। প্রকৃতি আমাদের জন্য কী সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, তার বিশ্লেষণ দরকার।’
এস রামাদোরাই বলেন, ‘পুরো সমাজ থেকে সাড়া না এলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ধরে রাখার যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি, সেটা পূরণ করা সম্ভব হবে না। আমাদের প্রশ্ন করা দরকার কেন আমাদের এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি দরকার, কেন আগের যে অবস্থা ছিল সেখানে আবার ফিরে যাওয়া দরকার।’
এরপর ‘প্রতিবেশই অর্থনীতি’ শীর্ষক আলোচনা হয়। এই পর্বে বক্তৃতা করেন কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক রিচার্ড জিও, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, টাটা স্টিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট চাণক্য চৌধুরী, ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘পরিবেশ নিয়ে আলোচনায় প্রায়ই আমরা এই সত্যটি ভুলে যাই, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
‘নেট জিরো-নেচার পজিটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক অধিবেশনে বিভিন্ন থিঙ্কট্যাংক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতারা বক্তৃতা করেন। এই পর্বের সভাপতি ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আখতার। অন্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন টাটা স্টিল ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সৌরভ রায়, ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সার্কুলার ইকোনমির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শালীনি গোয়েল ভালা প্রমুখ।
এরপর ‘টেকনোলজি ফর ভ্যালুয়িং ন্যাচারাল অ্যাসেটস’ শীর্ষক অধিবেশনে বিশ্বের প্রযুক্তি খাতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশ নেন।