পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ৯টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ নাগরিক সেবার জন্য
নাগরিকদের সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করা এবং এর গুণগত মান বাড়িয়ে সকলের দায়বদ্ধতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নয়টি উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত, বার্ষিক উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে উদ্ভাবন প্রদর্শনী শীর্ষক এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। যুগ্মসচিব (প্রশাসন) ড. মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী, অধিদফতর ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং ইনোভেশন টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহীত উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে— পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশগত ছাড়পত্র খুবই স্বল্পসময়ে দেওয়া। এ লক্ষ্যে ‘অনলাইন পেমেন্ট ইন ইসিসি’ অটোমেশন সফ্টওয়্যারে ইলেকট্রনিক ট্রেজারি চালান ব্যবস্থা প্রবর্তন ও ফি পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
সেবা গ্রহীতারা সোনালী ব্যাংক বা বিভিন্ন ধরনের কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজেই ফি পরিশোধ করতে পারবেন। বন বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ‘সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের লভ্যাংশ বিতরণে ডিজিটাল ডাটাবেইজ তৈরি করণ’ প্রক্রিয়ায় স্বল্প সময়ে জনগণকে লভ্যাংশ প্রাপ্তির সংবাদ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জানানো যাবে ও প্রদেয় টাকা অনলাইনে উপকারভোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের, মোবাইল অ্যাপ ও বনজ বৃক্ষের পোকা-মাকড় এবং রোগ-বালাই দমন কার্যক্রমের মাধ্যমে বনজ নার্সারি, বাগান বা বনের রোগ-বালাই বা পোকা-মাকড়ে আক্রান্ত হলে উদ্ভাবিত অ্যাপ ব্যবহার করে সেবা গ্রহীতারা তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিকার বা প্রতিরোধ সুব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশন ‘রাবার বিক্রয়করণ প্রক্রিয়া সহজীকরণ’ এর মাধ্যমে ক্রেতাদের চাহিদা প্রাপ্তির সাথে সাথে গুণগত মান সম্পন্ন রাবার সঠিক সময়ে বিক্রয়ের মাধ্যমে রাবার সেক্টরের লোকসান অনেকটা কমে আসবে।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড ‘প্রকল্পের কার্যক্রম বিষয়ে ডিজিটাল ডাটাবেইজ’ তৈরির মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে মনিটরিং করা যাবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে উদ্ভিদ নমুনা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে আবেদনকারী কাঙ্ক্ষিত তথ্য পরিপূর্ন ভাবে জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে সিস্টেম ড্যাস বোর্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা, সেবা গ্রহীতা ও সেবা প্রদানকারীর তথ্যাদি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘মামলা ব্যবস্থাপনা সহজীকরণ’ সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর ফলে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির কার্যক্রম ও সলিসিটর উইং এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা, মামলার রিপোর্ট তৈরি এবং সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশনা প্রদান করা সহজতর হবে।
আবেদন বা আপিল নিষ্পত্তি সহজীকরণ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়ে আপিলকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সময় ও খরচ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আপিল আবেদন অনলাইনে সম্পন্নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও কাজের গতিশীলতা অব্যাহত রাখতে স্বল্পসময়ে ‘মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অফিস স্টেশনারি সরবরাহ’ এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ভোগান্তি ছাড়া নাগরিকদের সেবা প্রদান করাই গণকর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, এ লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।
