পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে বন নিধন বন্ধের পাশাপাশি বনাঞ্চলের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ
জলবায়ু চুক্তি কিংবা বিশ্বনেতাদের অঙ্গীকার, কোনো কিছুতেই যেন ঠেকানো যাচ্ছে না পরিবেশ বিপর্যয়। জলবায়ুর এই দ্রুত পরিবর্তন ঠেকাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপক মাত্রায় কমানো, বন নিধন বন্ধের পাশাপাশি বনাঞ্চলের পরিধি বাড়ানো এমনকি মাংস খাওয়া কমানোর পরামর্শও দিচ্ছে জাতিসংঘ।
এই যখন অবস্থা তখন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তঃসরকারি প্যানেল-আইপিসিসি।
তিন পর্বের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা অর্জন থেকে এখনো অনেক দূরে বিশ্ব।
আইপিসিসি বলছে, তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে শতাব্দীর শেষে গিয়ে এই হার ৩ দশমিক ২ মাত্রায় গিয়ে ঠেকবে। তাই পরিবেশ বিপর্যয়ের চূড়ান্ত পরিণতি ঠেকাতে কেবল ফাঁকা বুলি নয়, এখনই প্রয়োজন কার্যকর ও লক্ষণীয় পদক্ষেপ।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন বলছে, গেল কয়েক বছর ধরে জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজন, আর সেখানে এতে বিশ্বনেতাদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরির মধ্যেই আটকে আছে পরিবেশ রক্ষার বৈশ্বিক লড়াই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইপসিসির প্রতিবেদনটি আমাদের জন্য লজ্জার। বিশ্বনেতারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন না। ফলে দিনদিন পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
আর এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের চূড়ান্ত পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছি আমরা। তাদের অভিযোগ, গেল জলবায়ু সম্মেলনে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখা গিয়েছিল।
বিশ্বনেতারা কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই নিঃসরণের মাত্রা এখনো গত দশকের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
অচিরেই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ মানবজাতিকে জলবায়ু পরিবর্তনের চূড়ান্ত পরিণতি দেখতে হবে বলেও আইপিসিসির পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে সংস্থাটি।