37 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৯:১১ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশের দূষণ রোধে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
পরিবেশ রক্ষা

পরিবেশের দূষণ রোধে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

পরিবেশের দূষণ রোধে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতে বাতাসের মান যাচাই এবং অ্যালার্ট সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে যেসব খাত পরিবেশের দূষণ বাড়ায়, সেসব খাতে মনিটরিং ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক।

মঙ্গলবার একনেক সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২৮ সালের মধ্যে দেশের আট বিভাগের ৩৬টি জেলার ৩৭টি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

বিশ্ব ব্যাংক এবং ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা এএফডি প্রায় ২ হাজার ৮০২ কোটি টাকার প্রকল্প সহায়তা দিচ্ছে ‘বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক এ প্রকল্পের জন্য।



বায়ু দূষণ কয়েক বছর ধরেই ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য বড় যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুকনো মৌসুমে প্রায়ই বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষে থাকছে ঢাকা। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয় শীতে, যখন বাতাসে ধুলার অত্যাচার বেড়ে যায়।

বাতাসের মান নির্ভর করে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণের (পিএম ২.৫) ওপর, যা পরিমাপ করা হয় প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রাম (পার্টস পার মিলিয়ন-পিপিএম) এককে।

দূষণের মাত্রা বুঝতে পিএম ২.৫, পিএম ১০ ছাড়াও সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও গ্রাউন্ড লেভেল ওজোনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিবেচনা করে তৈরি করা হয় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই।

একিউআই শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে সেই এলাকার বাতাসকে ভালো বলা যায়। অথচ শুকনো মৌসুমে প্রায়ই ঢাকার বাতাসের একিউআই থাকে ২৫০ এর বেশি, যা অস্বাস্থ্যকর।

পরিবেশবিদরা বায়ু দূষণের জন্য নগরজুড়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং ইটের ভাটাকে দায়ী করেন। যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী না রাখতে এবং নিয়ম মেনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে উচ্চ আদালত থেকেও আদেশ দিতে হয়েছে।

‘বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন’ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশে পরিবেশ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সেসব খাত পরিবেশের দুষণ বাড়ায়, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।



এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা এবং গ্রিন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম পাইলটিং করার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

দেশে বিদ্যমান যে ১৬টি এয়ার মনিটরিং সিস্টেম আছে, প্রকল্পটির মাধ্যমে সেগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। নতুন করে বাতাসের মানের পূর্বাভাস দেওয়ার যন্ত্রপাতি এবং জিআইএস সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

দেশের সকল শিল্পের বর্জ্য ব্যবস্থা ইটিপি ও সিইইটপি এবং বৃহত্তর ঢাকার নদনদীর পানির মান অনলাইনে দেখার সুযোগ তৈরি করাসহ পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতায় নতুন পাঁচটি বিভাগীয় অফিস নির্মাণ, ৩১টি জেলা অফিস নির্মাণ এবং একটি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন বলেছে- প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বায়ু ও পানি দূষণ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশের উন্নয়ন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পরিকল্পনা সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবারের একনেক বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট এগারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসব প্রকল্পের সম্মিলিত ব্যয় প্রায় ১৩ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে ১ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে।



পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হল-

  • ১. এক্সপোর্ট কম্পিটেটিভনেস ফর জবস (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ৯৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
  • ২. সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (প্রথম সংশোধন) প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ৩৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
  • ৩. বন্যা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন জরুরি সহায়তা প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
  • ৪. এডিবির জরুরি সহায়তায় ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প; ব্যয় ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।
  • ৫. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা পুননির্মাণে জরুরি সহায়তা প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৩৪৪ কোটি টাকা।
  • ৬. সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প; ব্যয় ৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
  • ৭. ২০২২ সালের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সিলেট ছাতকবাজার সেকশন (মিটারগেজ) পুনর্বাসন প্রকল্প; ব্যয় ২৪১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
  • ৮. পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ (চতুর্থ সংশোধন) প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ১৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
  • ৯. বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষার উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন) প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা
  • ১০. একসিলেরেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া (একসেস)-বাংলাদেশ ফেজ ১ (বিএলপিএ কম্পোনেন্ট) প্রকল্প; ব্যয় ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত