31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সন্ধ্যা ৭:৫৮ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে সিসা কারখানার ধোঁয়ায় মরছে গরু
পরিবেশ দূষণ

পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে সিসা কারখানার ধোঁয়ায় মরছে গরু

পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে সিসা কারখানার ধোঁয়ায় মরছে গরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় ফসলি জমিতে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে সিসা তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। পুরোনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এই সিসার প্রভাবে গত ৩ মাসে ২৫টি গরু মারা গেছে। সিসা তৈরির কারখানার বর্জ্যে হুমকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, সিসা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বাতাস ও পানির সঙ্গে মিশলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। কারণ, এটি বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।



জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সিসা গলালে এর ধোঁয়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশতে পারে। সিসা গাছপালা ও ঘাসের সঙ্গেও মিশে যায়, যা খেলে গরুসহ গৃহপালিত পশুর পাকস্থলীতে সমস্যা তৈরিসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি করে।

ব্যাটারির সিসার বিষক্রিয়ায় গৃহপালিত পশুর মৃত্যুও হতে পারে। সদর উপজেলার সিসা তৈরির কারখানার বিষয়ে ঢাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল খালেক বলেন, সিসা একটি ভারী ধাতু। এটি সহজে খাদ্যের সঙ্গে মিশে মানবদেহে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে। সিসা মানবদেহে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়লে মানুষ পাগলও হয়ে যেতে পারে। এটি পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে।

দাড়িয়াপুর এলাকার কয়েকজন বলেন, এই কারখানার জন্য কৃষি ও গোচারণভূমি, জলাশয়ের পানি ও মানুষের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কোনো বর্জ্য শোধানাগার (ইটিপি) ছাড়া উন্মুক্ত স্থানে ব্যাটারি গলানোর ফলে সিসাসহ দূষিত অন্যান্য বর্জ্য ছড়িয়ে আশপাশের ঘাস ও পানিতে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সেই পানি ও ঘাস খেয়ে অন্তত ২৫টি গরু মারা গেছে, অসুস্থ হয়ে পড়েছে আরও ২০-৩০টি গরু।

জানা গেছে, সদর উপজেলার উত্তর পৈরতলার বাসিন্দা আকরাম আহমেদ, একই এলাকার দিদার মিয়া, প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম ও সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলম মিলে দাড়িয়াপুর এলাকায় সিসা তৈরির এই কারখানা স্থাপন করেছেন।



তিন-চার মাস আগে প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে এটি স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরোনো ব্যাটারি কিনে এখানে এনে ভেঙে প্লাস্টিক আলাদা করে সিসা সংগ্রহ করা হয়। রাত ১২টার দিকে ছাই পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা গেছে, দাড়িয়াপুর সিসা তৈরির কারখানায় পাঁচ-ছয়জন শ্রমিক কাজ করছেন। কারখানার ভেতরে পুরোনো ব্যাটারি, ভেঙে ফেলা ব্যাটারির স্তূপ। কারখানার উঠানে গর্ত করে মাটির চুলার মতো চুল্লি বানানো হয়েছে।

কারখানার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সুমন খান বলেন, ব্যাটারি ভেঙে পাওয়া প্লাস্টিক ও সিসা আলাদা করে রাখা হয়। চেয়ার ও দরজা তৈরিতে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়। তাই সিসা ও প্লাস্টিক বিক্রি করা হয়। রাতে ব্যাটারির ছাই পুড়িয়ে সিসা তৈরি হয়।

কারখানার দুই মালিক মো. দিদার মিয়া ও নন্দনপুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলাম বলেন, ‘ছাড়পত্রের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। তবে আমরা কারখানা বন্ধ রেখেছি।



আর ব্যাটারি ভেঙে সিসা সংগ্রহ ও পুড়িয়ে সিসা তৈরির জন্য পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। গলিত অ্যাসিডগুলো আমরা ড্রামে বাজারজাত করি। এসব আশপাশের কোনো জমিতে ফেলছি না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খালিদ হাসান বলেন, ‘ওই কারখানার বিষয়টি জানি। গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তা ছাড়া তাঁরা পরিবেশের ছাড়পত্র নেননি। পরিবেশের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত