30 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
ভোর ৫:৪২ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
নিম্নমান ও উচ্চ সালফার যুক্ত কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে ইট পোড়ানোর কাজে
পরিবেশ দূষণ

নিম্নমান ও উচ্চ সালফার যুক্ত কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে ইট পোড়ানোর কাজে

নিম্নমান ও উচ্চ সালফার যুক্ত কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে ইট পোড়ানোর কাজে

পরিবেশ অধিদফতর বিভিন্ন সময় বেশ কিছু অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান।

তিনি বলেন, ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত বৈধভাবে আমদানিকৃত কয়লা অত্যন্ত নিম্নমানের ও উচ্চ সালফার যুক্ত। এই সালফার মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইট পোড়াতে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহার করায় সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক বায়ুদূষণ।



এ প্রেক্ষিতে কলাবাগানে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবার কার্যালয়ে পবার মাঠপর্যায়ে সংগৃহীত এবং পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের তথ্যের আলোকে ‘ইটভাটার বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে ইট পোড়ানো মৌসুম চলছে। অপরিকল্পিত এবং অবৈধ ইটভাটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, লোকালয় ও বনাঞ্চলের আশপাশে, পাহাড়ের পাদদেশে এবং দুই বা তিন ফসলি কৃষি জমিতে ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়াও অনেক ইটভাটায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না।

ফলে পরিবেশগত বিপর্যয়সহ জীববৈচিত্র্য ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। বিগত বছরগুলোর মতো চলতি মৌসুমেও পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ব্যতিরেকে দেশের বিভিন্ন ভাটায় অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বি আই ডব্লিউটিএ-এর সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ও গ্রিনফোর্সের সদস্যবৃন্দ।



প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান তার সার্বিক পর্যালোচনায় বলেন, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণ পরিবেশ বিপর্যয় ও জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। দেশে গাছ লাগনো আজ একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছি না। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটায় নির্বিচারে কাঠ পোড়ানো।

আধুনিক, পরিবেশ বান্ধব ও জ্বালানী সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার, নির্ধারিত মাত্রার সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার, জ্বালানি হিসাবে কাঠ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং সংশ্লিষ্ট আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ-এর মাধ্যমে ইটভাটা সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদফতর, জেলা প্রশাসন, বন অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মেজিস্ট্রেসী এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। ইটভাটা সংশ্লিষ্ট আইন বাস্তবায়নে ভাটার মালিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।



সংবাদ সম্মেলন থেকে সুপারিশ

১. পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক মাঠপর্যায়ে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ড্রাম চিমনীবিশিষ্ট ইটভাটাগুলো চিহিৃতকরণ ও সেগুলো অনতিবিলম্বে বন্ধ করা এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা। মাঠপর্যায়ে মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের সহায়তা গ্রহণ করা।

২. নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে বা নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে বা স্থানে ছাড়পত্র গ্রহণকারী ইটভাটাসমূহের ছাড়পত্র, লাইসেন্স বাতিল করা এবং সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া।

৩. ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে কাঠ ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা।

৪. বিদ্যমান ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনিবিশিষ্ট যেসকল ইটভাটা এখনো উন্নত প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা হয়নি সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া।

৫. নির্ধারিত মাত্রার সালফারযুক্ত কয়লা আমদানি করা। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যকর ভুমিকা রাখা।

৬. ঢাকা মহানগরীর বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার চারপাশের ভাটাসমূহ পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

৭. ইটভাটার মালিকের সামাজিক অবস্থান ও রাজনৈতিক বিবেচনার উর্ধে উঠে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ প্রয়োগ করা।

৮. মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারকরণ এবং পরিদর্শন ও এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনায় পরিবেশ অধিদফতর, জেলা প্রশাসন, মেজিস্ট্রেসি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের সাধন করা।

৯. ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার আন্তরিকতা, সদিচ্ছা, দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

১০. ভাটা নির্মাণে নিয়োজিত কারিগর এবং ফায়ারম্যানদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত