নামে অঞ্জনা নদী, বাস্তবে মরা খাল
অঞ্জনা নদী তীরে চন্দনা গাঁয়ে, পোড়া মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়ে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অঞ্জনা নদী আজ মরা খাল। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অঞ্জনার যৌবন হারিয়েছে অনেক আগেই। এখন মৃতপ্রায়।
খননের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে অধিকাংশ স্থান। ভূমিদস্যুরা ইতোমধ্যে কোনো কোনো স্থান দখল করে চাষাবাদ করছে, এমনকি বাড়ি তুলে বাস করছে। আর পলি জমে শুকিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
পূর্বে সড়কপথ না থাকায় নদীপথই ছিল একমাত্র সহায় ও অবলম্বন । তখন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলি যথেষ্ট সমৃদ্ধ ছিল । নদী একদিকে যেমন যাতায়াত সুবিধা, জীবীকা , খাদ্য , সুস্বাস্থ্যকর জলবায়ু প্রদান করে তেমনি প্লাবন দেখা দিলে হয়ে ওঠে বিভৎস । বাদকুল্লার মূলভাগ অঞ্জনা , জলঙ্গীর শাখানদী ।
কৃষ্ণনগর পৌর এলাকার বাগেন্দ্রনগর, রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয় , কুইন্স স্কুল ও জেলা শাসকের বাংলোর গা ঘেষে রোমান ক্যাথোলিক চার্চের সামনে দিয়ে বেজিখালি , কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রাচীর ছুয়ে রাজজামাতা দিঘি , চৌধুরি পাড়া , শক্তিনগর ও বারুহহুদার সীমানা দিয়ে দোগাছি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রবেশ করেছে ।
সেই পথ বেয়ে বাদকুল্লা জনপদের মধ্যে মিশে গেছে । পাটুলি , বল্লভপুর, অঞ্জনগড় , গাংনী, পূর্ববাদকুল্লা , চন্দনদহ প্রভৃতি গ্রামগুলি বাদকুল্লা এলাকার অঞ্জনা নদীর তীরবর্তী গ্রাম ।
অঞ্জনা নদী অতীত ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে । শোনা যায়, নদীয়ারাজ মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নৌকাপথে অঞ্জনা নদী বেয়ে মুর্শিদাবাদে পৌঁছতেন। নদী বুজে গিয়ে এখন খালের তকমা পেয়েছে।
ইদানীং সেই অস্তিস্ত্বটুকুও মুছে যাওয়ার জোগাড়। জবরদখল হতে হতে খাল নালায় পরিণত হয়েছে। তাই দখলদারদের হটিয়ে সংস্কার করে যদি খালের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা যায় তা হলে খুব ভাল হয়। পূর্বে এইপথে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌকো যাতায়াত করত । বাদকুল্লা শ্মশানটিও অঞ্জনা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে।