38 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ২:৩৯ | ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
নদীর যৌবন হারিয়ে এখন যেন ময়লার ভাগাড়
পরিবেশ রক্ষা

নদীর যৌবন হারিয়ে এখন যেন ময়লার ভাগাড়

নদীর যৌবন হারিয়ে এখন যেন ময়লার ভাগাড়

নেত্রকোনা পৌরসভার মঈনপুর এলাকায় ধলাই নদীতে এক সময় পুরো যৌবন ছিল। তখন নদীতে উত্তাল ঢেউ ভরা ছিল। নদীতে বয়ে যেতো ছোট-বড় নৌকা ও লঞ্চ।

এখন আর সেই অপূর্ব দৃশ্য নেই। এখন ধলাই নদী ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে গেছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে নদী নয় যেন ময়লার ভাগাড়!

অথচ ছোটবেলায় এই ধলাই নদীতে অনেকেই সাঁতার কেটেছেন। মাছ শিকার করে জীবন নির্বাহ করতেন। আজ কি হয়ে গেছে! এখন নদীটির দিকে তাকালেও বড্ড কষ্ট লাগে। এক সময় কি ছিল আর এখন কি! কালের আবর্তে দখলে-দূষণে ধলাই নদী আজ মৃতপ্রায়!



ওই এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা হয় ধলাই নদী নিয়ে। তারা বলেন, আগে তো নদীতে দলবল নিয়ে বড়-বড় আইড়, বাইম মাছ ধরতাম আমরা। নদীতে নৌকাবোঝাই করে ধান ও পাট নিয়ে বিক্রি করতাম হাট-বাজারে। আর এখন এই নদী মরার পথে। শুধু এই কৃষকরাই নন, ধলাই নদীর মরণদশা নিয়ে এমন আক্ষেপ নদীর দুইপাড়ের অনেক কৃষকের মুখেই শোনা গেছে।

মঈনপুর এলাকার এক গৃহবধূ বলেন, আমরা অপারক হয়ে ধলাই নদীর পানি ব্যবহার করি। গোসলের পর শরীর চুলকায়। পোলাপানের অসুখ-বিসুখও ছাড়ে না।

চকপাড়া এলাকার কৃষক আছিম উদ্দিন বলেন, অনেক বাসা-বাড়ির পায়খানার পাইপ লাগানো নদীতে। পানি মুখে লওয়া তো দূরের কথা। কাছে গেলেই দুর্গগ্ধে বমি আসে।

জানা যায়, খাল-বিল ও হাওরবেষ্টিত নেত্রকোনার একটি অন্যতম নদীর নাম ধলাই। এই নদীটি পূর্বধলা উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকা দিয়ে ঢুকে সদর উপজেলার লালবুড়িয়া বিল হয়ে হাটখলা, মাহমুদপুর, কুনিয়া, উলুয়াটি, কয়রাটি, মনকান্দিয়া, বড়শিকুড়া, সাতপাই, মঈনপুর, চকপাড়া, রাজুরবাজার ও দেয়ালিয়া বিলের ওপর দিয়ে হরিখালি এলাকায় মগড়া নদীতে মিশেছে।



এক সময় এ নদীর উত্তাল তরঙ্গ ভরা যৌবন ছিল। নদীর বুক চিরে চলতো পাল তোলা নৌকা। এই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল নেত্রকোনা শহর। প্রসার ঘটেছিল জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ও সভ্যতা।

নৌকায় লোকজন যাতায়াতসহ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যও বিক্রির জন্য বড় মোকামে নিয়ে যেতো এই নদী পথে। দুই পাড়ের বাসিন্দাদের গোসল, গৃহস্থালির কাজ চলতো এই নদীর পানি দিয়ে। এখন দখলে-দূষণে ধলাই আজ মৃতপ্রায়!

নেত্রকোনা শহরের উত্তর-পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। নদীর তীরে অবৈধভাবে দখল করা জায়গায় গড়ে উঠছে বাসা-বাড়িসহ নানা স্থাপনা। মইনপুর, চকপাড়া এলাকায় বাসা-বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের শতাধিক পাইপ নদীতে দেওয়া।

ময়লা আর কচুরিপনায় ভরা নদী। রাজুর বাজার এলাকায় নদীর তলায় জমে থাকা পানি ময়লা আবর্জনায় নীল হয়ে গেছে। দূষণ আর দখলের কারণে নদীর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।

তবে, আশার কথা হলো নেত্রকোনা শহর অংশে নদীর সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকা খননের জন্য দুই কোটি ৮৫ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নেত্রকোনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, ধলাই নদী খননের জন্য দুই কোটি ৮৫ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে আগামী জানুয়ারি খনন কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নদীটি খনন করলে আগের মতো শহরের পরিবেশ আরও সুন্দর হবে বলে তিনি আশাবাদী।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত