নতুন জীবনের স্পন্দন পেলো গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ বিপদাপন্ন। কিন্তু এর মধ্যেও খুশির খবর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, প্রবালপ্রাচীরে আবার নতুন করে প্রবাল জন্ম নিচ্ছে। প্রতিবছরই প্রবালের বংশবৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। এ বছরও সে ধরনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রবিবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস উপকূলে একসঙ্গে সব প্রবাল শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিঃসরণ করে। এতে সেখানে রঙিন এক অসাধারণ দৃশ্যের অবতারণা হয়।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরে অবস্থিত। বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্বের কারণে ১৯৮১ সালে স্থানটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করে ইউনেসকো।
গত জুন মাসে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে ‘বিপদাপন্ন’ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করে ইউনেসকো। তারা বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী গ্যারেথ ফিলিপস বলেন, নতুন জীবনের চেয়ে আর কিছু মানুষকে বেশি সুখী করে না। নতুন প্রবালের জন্মই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
প্রবালের জন্ম নিয়ে গবেষণা করছে রিফ টেক নামের একটি গবেষণাকেন্দ্র। এই কেন্দ্রের হয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন ফিলিপস ও তাঁর সহকর্মীরা। এ দলে জীববিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী, আলোকচিত্রীর মতো বিভিন্ন ধরনের লোকজন রয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ক্ষতির প্রধান কারণ হচ্ছে, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এটা ঘটছে। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালের বংশবৃদ্ধি একটি সমন্বিত বার্ষিক প্রচেষ্টা। বছরের বেশির ভাগ সময় প্রবাল বিভাজিত হতে থাকে। কিন্তু বছরের একটি সময় এসে প্রবাল একসঙ্গে সমুদ্রে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ছেড়ে দেয়।
বিজ্ঞানী ফিলিপস আরো বলেন, সমুদ্রের তলদেশে অবতরণ ও বসতি স্থাপন করার আগপর্যন্ত প্রবাল লার্ভা ভেসে যায়। বিভিন্ন রাতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রবাল এভাবে বেশ কয়েক দিন ধরে বংশ বৃদ্ধি করে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ফাউন্ডেশন জানায়, বংশবৃদ্ধির জন্য প্রতিটি প্রবালগুচ্ছকে একই প্রজাতির আরেকটি প্রবালগুচ্ছ খুঁজে পেতে হয়। তাই একই সময়ে প্রবালের মধ্যে এই শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ছাড়ার ঘটনা ঘটে। সাধারণত অক্টোবর থেকে নভেম্বরে এই ঘটনা ঘটে। তবে তা অনেক সময় তাপমাত্রা ও পানির স্রোতের ওপর নির্ভর করে।
এর আগে গত জুন মাসে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে ‘বিপদাপন্ন’ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করে ইউনেসকো। তারা বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ক্ষতির প্রধান কারণ হচ্ছে, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এটা ঘটছে।