নগরে ক্রমশ বাড়ছে শব্দ দূষণ
ঢাকা শহরে আশঙ্কাজনকভাবে শব্দ দূষণ বাড়ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশভুক্ত এলাকার তুলনায় উত্তর সিটি করপোরেশনে শব্দদূষণের পরিমাণ বেশি। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শব্দদূষণ রোধে ঢাকা শহরকে হর্নমুক্ত নগরী হিসেবে ঘোষণা করার পরামর্শ দেন অনেকে।
ঢাকা শহরের শব্দ দূষণের মাত্রা নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা করেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস)। তাদের গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার সব এলাকাতেই শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ তে উল্লেখিত আদর্শমান অতিক্রম করেছে শব্দের মাত্রা। নগরের বিভিন্ন স্থানে সাধারণভাবে শব্দের গ্রহণযোগ্য মানমাত্রার থেকে প্রায় ১ দশমিক ৩ থেকে ২ গুণ বেশি শব্দ পাওয়া গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় শব্দের মাত্রা পাওয়া গেছে ৭৬ দশমিক ৮০ ডেসিবল। যে তিনটি সড়কের সংযোগ স্থলে সর্বোচ্চ মাত্রার শব্দ দূষণ দেখা গেছে সেগুলো হলো নিউমার্কেট মোড়, নয়া পল্টন মোড় এবং প্রেসক্লাব মোড়। সেখানে শব্দ দূষণের মাত্রা যথাক্রমে ১০০ দশমিক ৬৫ ডেসিবল, ৯২ দশমিক ২২ ডেসিবল এবং ১০ দশমিক শূন্য ৩ ডেসিবল।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় শব্দের মাত্রা পাওয়া গিয়েছে ৮০ দশমিক ৫৬ ডেসিবল। যে তিনটি সড়কের সংযোগ স্থলে সর্বোচ্চ মাত্রার শব্দ দূষণ পাওয়া গেছে সেগুলো হলো- মোহাম্মদ বাসস্ট্যান্ড মোড়, শিয়া মসজিদ মোড় এবং মাসকট প্লাজা মোড় সেখানে শব্দ দূষণের মাত্রা যথাক্রমে ৯৯ দশমিক ৭৭ ডেসিবল, ৯৩ দশমিক শূন্য ৫ ডেসিবল এবং ৯০ দশমিক ২৭ ডেসিবল।
এমন এক পরিস্থিতিতে গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার ঢাকা শহরকে হর্নমুক্ত ঘোষণার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত হাইড্রোলিক হর্ন এর ব্যবহার কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেইসঙ্গে যাত্রী, চালক ও গাড়ি মালিকদের সচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, চিহ্নিত এলাকাগুলোতে (নিরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও মিশ্র) সাইনপোস্ট উপস্থাপন করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনে (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের বলেন, শুধু সরকারিভাবেই নয়, আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার বা কোনও একটি সংস্থার পক্ষে এককভাবে শব্দ দূষণের সমস্যার সমাধান করা কঠিন ব্যাপার। তাই সবাই মিলে শব্দ দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে ও নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।