নগরের পরিবেশ রক্ষায় সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে
দেশের কোনো শহরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। নগর কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। পরিবেশ রক্ষায় আইন থাকলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে নগরে বায়ু, শব্দ ও পানিদূষণ বাড়ছে।
নগর গবেষণা কেন্দ্রের (সিইউএস) সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত নগরবিষয়ক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে সোমবার চারটি অধিবেশনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনের আলোচনা অনুষ্ঠানের আজ ছিল সমাপনী দিন।
‘নগর পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন’ শীর্ষক অধিবেশনের মূল বক্তা ছিলেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকায় অভিবাসন করা জনগোষ্ঠীর ২১ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসী।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল শহরের বস্তিগুলো শহরের মোট আয়তনের মাত্র ৪ শতাংশ এলাকায় অবস্থিত। অথচ শহরগুলোর জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশের বেশি এসব বস্তিতে বসবাস করে। কিছু বস্তিতে প্রতি বর্গমাইলে এক লাখের বেশি লোক বসবাস করে। কিন্তু নগরের পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ নেই।
অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক ও মানবিক উপাদানের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু দেশের নগরগুলোতে এই ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এই ভারসাম্য না থাকাতেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে শহর।
তিনি আরও বলেন, দেশের কোনো শহরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। নগর কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। জনপ্রতিনিধিরা ঠিকাদারি নিয়ে ব্যস্ত। নগর কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী জড়িয়ে পড়েছে। ফলে পরিকল্পিত নগর করা সম্ভব হচ্ছে না। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব। তিনি বলেন, দেশের কিছু উন্নয়ন প্রকল্প পরিবেশদূষণ বাড়িয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কম হলেও বাংলাদেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় আইন আছে, কিন্তু এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঢাকামুখী অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শহরের পরিবেশকে প্রভাবিত করছে।