দিনাজপুরে বৃষ্টির পানি নিষ্কাসিত হওয়ার ক্যানেলে কৃত্রিম ভাবে বাঁশের বাধ নির্মাণ করে মাছ ধরার কারণে খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর আবাদি জমি তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
গত ৫-৭ বছর ধরে এ কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণের ফলে অল্প বৃষ্টিতেই আবাদি জমি প্লাবিত হওয়ায় দুই উপজেলার প্রায় ১২-১৪ হাজার কৃষক বছরে একবার বোরো ধান চাষ করে। ফলে জমি থাকা সত্বেও অনেকে আমন ধান আবাদ করতে না পেরে কষ্টে জীবনযাপন করে।
স্থানীয়রা জানায়, খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের চান্দেরদহ কালভার্ট দিয়ে ইছামতি নদীর পানি মারগাঁও গ্রামের চাতারা দোলা ও কুমড়িয়া গ্রামের পুকরের দোলা দিয়ে প্রবেশ করে তা বকশিকুড়া দোলায় (কান্দর) যায়।
পরে তা ভাবকীর শালমারা দোলা দিয়ে দুটি কার্লভার্ট হয়ে চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের রাণীরবন্দর-ভূষিরবন্দর মহাসড়কের দুই পাশের দোলা দিয়ে তা নশরতপুর গ্রাম হয়ে ফকিরপাড়া দোলা দিয়ে ফকিরপাড়া ক্যানেলে এসে পড়ে।
এই ক্যানেলটি সাইতাড়া ইউপির বিভিন্ন গ্রাম অতিক্রম করে চিরিরবন্দর সদরের কারেন্টহাট নামক স্থানে আত্রাই নদীতে পৌঁছে। কিন্তু ফকিরপাড়া পার হয়ে সাইতাড়ার খোচনা গ্রামে ক্যানেলে মাছ ধরার জন্য ৮-১০টি বাঁশের বাঁধ (হোকোশ) নির্মাণ করায় পানি যেতে বাঁধাগ্রস্থ’ হয়।
এতে খানসামা উপজেলার প্রায় ৫-৬শ হেক্টর এবং চিরিরবন্দর উপজেলার প্রায় ১৪-১৫শ হেক্টর কৃষি আবাদি জমি ১ ঘন্টার বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও দু’উপজেলার প্রায় কয়েকশত পুকুর প্লাবিত হয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী ও চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে। অপরদিকে ওই এলাকায় চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ ১৫-১৭টি রাস্তা বেশিরভাগ সময় পানি ও কাঁদা জমে থাকে।
খানসামা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান এটিএম সুজাউদ্দীন লুহিন শাহ্ বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই অল্প বৃষ্টিতে এলাকার ধান ক্ষেতগুলো ডুবে যায়।
পানি কমতো না। পুকুরের মাছ পালিয়ে যেত। পরে বিষয়টি নিয়ে অনেকের সাথে কথা বললে জানতে পারি চিরিরবন্দরে পানি আটকে রাখার কারণে এ অবস্থা। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছি।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, বিষয়টি ওই এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। চিরিরবন্দর উপজেলা প্রশাসনের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি সরেজমিনে যাচাইপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। সূত্র: বিডি-প্রতিদিন