40 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৪:৫৭ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ

দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বন্যা

বন্যা ও জোয়ারের পানিতে একাকার হয়ে গেছে দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বন্যা।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া লেবুবুনিয়া ও হিজলিয়া ক্লোজার এবং হাজরাখালী বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়ায় গত চার দিনে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় প্লাবন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। দিনে দুই জোয়ারের পানি ওঠানামা করায় গাবুরা ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া, ডুমুরিয়া, লক্ষ্মীখালী, চকবারা, খলসেবুনিয়া, গাবুরা, খোলপেটুয়া এবং আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়ন ও প্রতাপনগরের মোট ৩৯টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। তলিয়ে আছে রাস্তাঘাট, বসতভিটা, খেতের ফসল। ভেসে গেছে শত শত চিংড়ি ঘের ও ছোট-বড় পুকুর। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে উপকূলবাসী। আশাশুনির প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে বাঁধ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত এবং স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল।

এদিকে গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে আছে রোপা আমন। বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী, এল্লারচর, ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর পুরাতন সাতক্ষীরা, মাছখোলা, মধুমল্লারডাঙ্গী, লাবসা, মাগুরা, গোয়ালপোতা। এ ছাড়া কলারোয়া, পাটকেলঘাটা ও তালার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। খাল-বিল, মাঠ, রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে আছে।
বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে জোয়ারের পানি নামতে থাকলেও ফসলের সর্বনাশ হয়েছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি, সদ্য রোপণ করা আমন ধানের চারা, আমনের বীজতলা ও পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে আগামী কয়েক দিন টানা রোদ থাকলে ক্ষতির পরিমাণ তেমন বেশি হবে না বলে আশা করছেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন।

মুলাদী উপজেলা কৃষি সমিতির সম্পাদক কামরুল ইসলাম জানান, তাঁর সমিতির আওতাধীন চাষিদের সবজির খেতের চার ভাগের তিন ভাগ পানিতে ডুবে গেছে। তিনি ৫ কাঠা জমিতে লাউ, চিচিঙ্গা ও ডাঁটা শাক চাষ করেছিলেন। অধিকাংশ গাছের গোড়ায় পচন ধরেছে। মুলাদী উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, মুলাদীতে ১৩৫ হেক্টর জমির মধ্যে ১১০ হেক্টরের সবজি পানিতে নিমজ্জিত। লাউ, ডাঁটা, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা ও পেঁপে পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া ৬৬০ হেক্টর বীজতলার মধ্যে ২৬০ হেক্টর, ১৪ হাজার হেক্টর আমনের মধ্যে ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলে এখন মাঠের ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে আউশ ধান। বিভাগের ৯০ হাজার ৯৯২ হেক্টর জমিতে আবাদ হওয়া আউশ ধানের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৭ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমির ধান। ২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমিতে সদ্য আমন রোপণ ও আমনের বীজতলা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৯ হাজার ৬৭৯ হেক্টর জমির ধান ও আমনের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এ ছাড়া ২৯২ হেক্টর পানের বরজ, ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন জানান, সবে জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে। মাঠ পর্যায় থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পেতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে। তবে প্রাথমিকভাবে বিভাগের ৩০ ভাগ ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে আক্রান্ত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। টানা রোদ থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কমতে পারে। মাদারীপুর : আবারও দ্বিতীয় দফায় পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে শিবচরের চরাঞ্চলের একমাত্র সড়কটি। এটি চরাঞ্চলের কাজীর সুরা থেকে প্রধান সড়কে আসার একমাত্র মাধ্যম। পাশাপাশি পদ্মার ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ও কাজীর সুরা বাজারের অর্ধশতাধিক দোকানসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চরাঞ্চলের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় আশ্রয় নিয়েছে পানিবন্দী পরিবারগুলো। চলতি বন্যায় চরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় তলা ভবন, চরজানাজাত ইউনিয়নের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক স্থাপনা ও ইউনিয়ন পরিষদ, কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ৭৭ নম্বর কাঁঠালবাড়ী সরকারি বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলা ভবনটি বিলীন হয়ে গেছে। বন্দরখোলা ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বেপারী জানান, ভাঙন অব্যাহত থাকায় পদ্মার পাশেই একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ, কাজীর সুরা বাজারের অর্ধশতাধিক দোকানসহ বিস্তীর্ণ জনপদ ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বন্যা ও নদী ভাঙনে শিবচরের চরাঞ্চলের চারটি বিদ্যালয় বিলীন হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।  সূত্র: বিডি-প্রতিদিন

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত